bnp-flag

‘ঝিমিয়ে পড়া’ তকমা চান না বিএনপির কর্মীরা

বড় কোনো মিছিল না হলেও ছোট ছোট দলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী বিএনপি নেতা–কর্মীরা। প্রায় দুই বছর পর আজ বড় ধরনের সমাবেশে অংশ নিতে দলটির নেতা-কর্মীদের বেশ উৎফুল্লই দেখা গেল। ‘ঝিমিয়ে পড়া বিএনপি’ তকমা থেকে মুক্তি চান তাঁরা।

মো. হাসান বিন আমির সঙ্গে দুজন নিয়ে উদ্যানের প্রবেশমুখে দাঁড়ানো। অপেক্ষা করছেন আরও কয়েকজনের জন্য। সমাবেশের প্রসঙ্গ তুলতেই বলেন, ‘খুবই আনন্দ লাগছে যে আমরা রাজপথে নামতে পেরেছি। সরকার আসলে বুঝতে পেরেছে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যায় না। তাই অনুমতি দিয়েছেন।’ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদলের এই কর্মী তাঁর দলের আসন্ন নির্বাচনে যাওয়া নিয়ে আশাবাদী। তাঁর আশা দলের যে ভুল-ত্রুটি ছিল তা শুধরে বিএনপি আবার মাঠে নামবে।

সমাবেশ বেলা দুইটায়। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সকালের পর থেকেই লোকজন জমায়েত হতে শুরু করে। বড় ধরনের সমাবেশের অনুমতি এত দিন পরে পাওয়া নিয়ে ঢাকা কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, সমালোচনা যাতে না হয়, তাই দিয়েছে। আর সরকারও হয়তো চায় বিএনপি নির্বাচনে আসুক। নেত্রীর কাছ থেকে কী আশা করছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘নেত্রীর কাছ থেকে কী কী শর্তে আমরা সামনে এগোব এবং তাঁর কাছে থেকে এখন দিকনির্দেশনা চাই। বিএনপি মাঠে নেই, ঝিমিয়ে পড়েছে এই কথা শুনতে চাই না।’

হালিমা বেগম ১৭ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনি কামরাঙ্গীরচর থানা বিএনপির সাংগঠনিক নেত্রী। তাঁকে বেশ উৎসুক মনে হলো। নিজের সঙ্গে আসা কর্মীদের সমাবেশের ব্যাপারে বোঝাচ্ছিলেন। হালিমা বেগম বলেন, ‘সরকার আর কত বদনাম কামাইব। বিএনপিকে রাস্তায় নামতে দেওয়া ছাড়া উপায় নাই।’

বেশ কয়েকজন অভিযোগ করলেন, ঢাকার ভেতরে বাস ঢুকতে দিচ্ছে না। এ ছাড়া ঢাকার ভেতরের কর্মীরাও আসতে ভোগান্তিতে পড়ছেন। আশপাশের এলাকার বাসও চলছে না। হেঁটে আসছেন। সবুজ মিয়া এসেছেন ডেমরা থেকে। বেশ কয়েকবার গাড়ি পাল্টিয়ে পৌঁছেছেন। তবে বললেন, আজকে কোনো কিছুই তাঁদের আটকে রাখতে পারবে না।

এখন পর্যন্ত সরকারদলীয় লোকজন বা পুলিশের কাছ থেকে বাধা না পেলেও বিভিন্ন পয়েন্টে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অবস্থান নিয়েছেন বলে কর্মীদের অভিযোগ। আবু মোস্তফা নামের একজন কর্মী বলেন, লালবাগের দিকে তিনি কয়েকজনকে বসে থাকতে দেখেছেন। বিএনপির নেতারা বলছেন, এটা মহাসমাবেশ না সমাবেশ। মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে। ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চল থেকে নেতা-কর্মীরা যোগ দিচ্ছেন। তবে আগে থেকে ঢাকায় যাঁরা ঢাকায় ছিলেন, তাঁরাও যোগ দিচ্ছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রমেশ দত্ত বলেন, ‘এ দেশে এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যক্তি খালেদা জিয়া। নেত্রী লন্ডন থেকে ফিরবেন না সুর তুলে নানান কথা হয়েছে। কিন্তু তিনি ফিরেছেন। ফেরার দিন ও রোহিঙ্গা শরণার্থীশিবিরে যাওয়ার সময়ে জাতি দেখেছে তাঁর জনপ্রিয়তা।’ তাঁর সঙ্গে থাকা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা শরীফুল ইসলাম বলেন, বিএনপির সময়ে ছাত্রদল-ছাত্রলীগ সব দলই সমাবেশ করতে পেরেছে। কিন্তু এ সরকারের আমলে তা সম্ভব না। রাজনৈতিক অধিকার, বাক্‌স্বাধীনতা সব কেড়ে নিয়েছে। কিন্তু এ সমাবেশ থেকে তাঁরা রাজনৈতিকভাবে নিজেদের ও কর্মীদের চাঙা করতে চান।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin