Youtube বাটন এ ক্লিক করে সাবস্ক্রাইব করুন, সরাসরি খেলা দেখুন।
[sociallocker id=”5303″] [/sociallocker]Youtube বাটন এ ক্লিক করে সাবস্ক্রাইব করুন, সরাসরি খেলা দেখুন।
[sociallocker id=”5303″] [/sociallocker]ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে তিন পরিবর্তন
দেরাদুনে বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আফগানিস্তান অধিনায়ক আসগর স্টানিকজাই।
ভাগ্য বদলের ম্যাচে ফিরলেন সৌম্য-রনি
দেরাদুনে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে পাত্তাই পায়নি বাংলাদেশ। তিন বিভাগেই বাংলাদেশক উড়িয়ে দিয়ে ৪৫ রানের জয় পেয়েছিল স্বাগতিক আফগানিস্তান। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভাগ্য বদলানোর লক্ষ্যে নিজেদের একাদশে দুইটি পরিবর্তন এনেছে বাংলাদেশ।
প্রথম ম্যাচে পেস বোলিং নির্ভর একাদশ সাজিয়ে কোন সুবিধা করতে পারেনি টাইগাররা। তাই দ্বিতীয় ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়ে গিয়েছেন দুই পেসার আবুল হাসান রাজু এবং আবু জায়েদ রাহী। প্রথম ম্যাচে রাজু-রাহীর কেউই ৪ ওভারের কোটা পুরণ করতে পারেননি।
৩ ওভার বোলিং করে ২ উইকেট নিলেও ৪০ রান খরচ করেন রাজু, অন্যদিকে ১ উইকেটের বিনিময়ে সমান ওভার বোলিংয়ে ৩৪ রান দেন রাহী। তাই দ্বিতীয় ম্যাচে এই দুই পেসারের বদলে দুইজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার সৌম্য সরকার এবং আবু হায়দার রনিকে একাদশে নিয়েছে বাংলাদেশ।
ফর্মহীনতার কারণে সিরিজের প্রথম ম্যাচের একাদশে জায়গা হয়নি সৌম্যর। রনি বাদ পড়েছিলেন আগের সুযোগ পাওয়া ম্যাচে দলের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হওয়ায়। তবে আফগানিস্তানের শক্তিশালী বোলিং লাইনআপের বিপক্ষে বাড়তি ব্যাটসম্যানের প্রয়োজনবোধ করাতেই একাদশে ফেরান হলো এই দুজনকে।
বাংলাদেশ একাদশ:
তামিম ইকবাল, লিটন কুমার দাশ, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, আবু হায়দার রনি, নাজমুল হাসান অপু এবং রুবেল হোসেন।
‘সমর্থন দিন, গালি দিয়েন না’
বাংলাদেশ হারলেই সমালোচনায় ব্যস্ত থাকেন সমর্থকরা। সেটি কখনো পাড়ায়, আবার সেটি কখনো কোন আড্ডায়। তবে বেশিরভাগই সমালোচনা হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটারে। এটির হার দিনদিন বেড়েই চলেছে। যেকোন ম্যাচ হারলেই যেন ক্রিকেটারদের নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়।
ক্রিকেটাররা ফেসবুকে থাকায় সেসব সমর্থকদের সমালোচনা তাদেরও চোখে পড়ে। চলতি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার টি-টোয়েন্টি সিরিজেও বাংলাদেশকে নিয়ে সমালোচনায় ব্যস্ত সমর্থকরা। ইতোমধ্যে ২-০ তে সিরিজ জিতে নিয়েছে আফগানরা। সিরিজের প্রথম ম্যাচ বাজে ব্যাটিংয়ের কারণে হারায় ব্যাটসম্যানদের নিয়ে সমালোচনা করেন সমর্থকরা। শুধু ব্যাটসম্যানই নয়, সমালোচনা হয়েছে সাকিবের অধিনায়কত্ব নিয়েও।
তাছাড়াও তাকে ঘিরে রয়েছে আরও নানান আলোচনা। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচেও জয়ের দ্বারপ্রান্তে গিয়ে আফগানিস্তানের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। ফলে ১ ম্যাচ বাকি থাকতেই সিরিজ জিতে নেয় আফগানরা। ম্যাচের পরেই আবারো সমালোচনায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন সমর্থকরা। ক্রিকেটারদের প্রতি সমালোচনার হার এত বেড়েছে যে অনেকেই গালিও দিচ্ছেন।
সেসব গালিগালাজ নিশ্চয়ই ভালোভাবে নিবেন না ক্রিকেটাররা। বিষয়টি চোখে পড়াতে নিজের ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন জাতীয় দলের ফাস্ট বোলার তাসকিন আহমেদ। ইনজুরির কারণে দলের সঙ্গে না যেতে পারাতে ঘরে বসেই খেলা দেখতে হচ্ছে তার। ফলে ক্রিকেটারদের নিয়ে নানা সমালোচনাও চোখে পড়ছে তার।
আফগানদের বিপক্ষে বাজেভাবে হারের পর নিজের স্ট্যাটাসে ক্রিকেটারদের গালি না দিয়ে এই খারাপ সময়ে সমর্থন দেওয়ার কথা বললেন তাসকিন। ক্রিকেটারদের নিয়ে এমন নেতিবাচক চিন্তা-ভাবনা থেকেও বের হয়ে আসতে সমর্থকদের অনুরোধ করলেন এই পেসার।
‘সাপোর্ট করেন ভাই। গাইল দিয়েন না। নিজের দেশের মানুষই তো। দেখতে খারাপ লাগে। খারাপ হতেই পারে। ইচ্ছা করে তো আর খারাপ করতেছে না। আজকে হচ্ছে না কাল হবে। নিজের চিন্তা ভাবনা থেকে একটু বাইরে এসে চিন্তা করেন। জিনিসগুলো সহজ হবে।’
‘টি-টোয়েন্টিতে ঝুঁকি তো নিতেই হবে’
বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা তেড়েফুড়ে শট খেলতে যাচ্ছেন আর বিলিয়ে দিয়ে আসছেন উইকেট। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতেই এমন চিত্র দেখা গেছে। ব্যাটসম্যানদের মাঝে অভিজ্ঞতা আর দায়িত্বশীলতার ছায়াটাও দেখা যায়নি।
তবে কি টিম ম্যানেজম্যান্টের পরিকল্পনাই ছিল এভাবে মেরে খেলার? তৃতীয় ওয়ানডের আগে সংবাদ সম্মেলনে টাইগার অলরাউন্ডার আরিফুল হক অবশ্য বিষয়টি অস্বীকার করলেন। তার উল্টো যুক্তি, টি-টোয়েন্টিতে ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতেই হবে। এর জন্য টিম ম্যানেজম্যান্টের বিশেষ নির্দেশনার তো প্রয়োজন নেই।
রশিদ খান এখন টি-টোয়েন্টির এক নাম্বার বোলার। তার স্পিনের বিরুদ্ধে যেন কোনো উপায়ই খুঁজে পাচ্ছেন না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। টাইগাররা প্রথম দুটি ম্যাচেই যে এই এক রশিদ খানের কাছেই হেরেছে, অবলীলায় সেটা স্বীকার করে নিলেন আরিফুল, ‘একজনই বাংলাদেশ আর আফগানিস্তানের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন, তিনি রশিদ খান। তাদের স্পিন আক্রমণ খুবই ভালো। আমাদের ব্যাটিং লাইনআপও ভালো। তবে রশিদ খান একাই আগের দুই ম্যাচে পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন।’
রশিদ খান সর্বনাশ করছেন। দুই ম্যাচে আফগান লেগস্পিনারের ঝুলিতে ৭টি উইকেটই বলে দিচ্ছে, কতটা ভয়ংকর হয়ে উঠেছেন তিনি। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে রশিদ বোলিংয়ে আসার আগ পর্যন্তও বেশ ভালো ব্যাটিং করছিল বাংলাদেশ। প্রথম দশ ওভারে ছিল ৩ উইকেটে ৮১। সেখান থেকে ১৩৪ রানের বেশি এগোতে পারেনি টাইগাররা।
ঝুঁকি নিতেই হবে। কিন্তু এই ঝুঁকিটা কি একটু বেশিই নিয়ে ফেলছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা? সিঙ্গেল ডাবলসে না খেলে তেড়েফুড়ে মারতে গিয়ে প্রথম দুই ম্যাচেই উইকেট বিলিয়ে দিয়ে এসেছেন তারা।
টিম ম্যানেজম্যান্টের পক্ষ থেকেই কি ঝুঁকি নিয়ে রান বাড়ানোর নির্দেশনা ছিল? তামিম-মুশফিকের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানরাও কেন না বুঝে শুনেই বেশি বেশি শট খেলতে যাচ্ছেন?
আরিফুল হক অবশ্য মনে করছেন না, দলের গেম প্ল্যানে কোনো ভুল আছে। টি-টোয়েন্টিতে ঝুঁকি নিতেই হবে, এমন যুক্তি তার, ‘আসলে টি-টোয়েন্টিতে আপনাকে সুযোগ নিতে হবে। মানে ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতেই হবে। তাই সিনিয়র ব্যাটসম্যানরা দ্রুত রান করতে চেয়েছেন। যদি দল জিততো, তবে এসব শট নিয়ে কথা হতো না। খুব বেশি নির্দেশনা ছিল না। আমাদের বলা হয়নি বেশি বেশি ঝুঁকিপূর্ণ শট খেলতে।’
সাকিবের ১৫-২০ রানের আক্ষেপ
আফগানদের বিপক্ষে এর আগে কোন সিরিজ হারার নজির নেই বাংলাদেশের। টি-টোয়েন্টিতে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা সেই আফগানদের কাছে প্রথমবারের মত সিরিজ হারলো বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বোলিং বাজে হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যাটিংটা যুতসুই হয়নি সাকিবদের। টস জিতে ব্যাটিং নিয়ে স্লো এবং লো পিচে ১৫০ রানই ছিল জয়ের মত স্কোর। কিন্তু ১৩৪ রানেই থামতে হয়েছে মুশফিক-তামিমদের।
ম্যাচ শেষে তাই সাকিবের কন্ঠে উঠে আসলো ১৫-২০ রানের আক্ষেপ। ‘ফিল্ডিং ও বোলিং আমরা ভালো করেছি। তবে ব্যাটিংয়ে ১৫-২০ রানের ঘাটতি ছিল। ভালো শুরুর পর আমরা নিয়মিত উইকেট হারিয়েছি। মাঝের ওভারগুলোতে ওরা চাপ সৃষ্টি করেছে, আমরা ভেঙে পড়েছি। শেষ পর্যন্ত তাই বড় স্কোর গড়া যায়নি।’
এ ম্যাচেও বাংলাদেশের জন্য মূর্তিমান আতঙ্ক হিসেবে হাজির হয়েছিলেন আফগান স্পিনার রশিদ খান। ৪ ওভার বোলিং করে ১২ রানের খরচায় নিয়েছেন তামিম, সৌম্য, মোসাদ্দেক ও সাকিবের উইকেট। প্রথম ম্যাচের মত এ ম্যাচেও ম্যান অফ দ্য ম্যাচের পুরস্কার জুটে তার কপালে।
রশিদ ছাড়াও ভালো বল করেছে আফগান অন্যান্য স্পিনাররাও। ম্যাচ শেষে তাই সাকিবের কন্ঠে তাদের নিয়ে প্রশংসাবাণী, ‘রশিদ দারুণ বোলিং করেছে। ওদের দারুণ সব স্পিনার আছে। আমাদের কাজ ওরাই কঠিন করে তুলেছিল। এরপর আমাদের আরও ভালো পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে হবে, যেন ওদের ভালোভাবে সামলাতে পারি এবং ভালো স্কোর গড়তে পারি।’
খেলোয়াড়দের গালি না দেয়ার অনুরোধ তাসকিনের
আফগানদের কাছে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজে হার। বোলিং কিংবা ব্যাটিং সব বিভাগেই আফগানদের থেকে যোজন যোজন পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টি হেরে বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা যখন হতাশায় মুষড়ে পড়েছেন তখন ক্ষোভে ক্ষিপ্ত বাংলাদেশের ক্রিকেটপাগল মানুষ।
খেলোয়াড়দের সমালোচনা হতেই পারে কিন্তু অতিরঞ্জিত হয়ে গালাগালি কিংবা খারাপ ভাষায় খেলোয়াড়দের মুণ্ডুপাত করা কখনোই সমীচীন নয়। খেলোয়াড় তাসকিনও সকলের কাছে অনুরোধ করলেন গালাগাল না দিতে।
চোটের কারণে বর্তমানে জাতীয় দলের বাইরে অবস্থান করছেন তাসকিন। কিন্তু বাংলাদেশের খেলা ঠিকই দেখছেন। নিজেও হতাশ হয়েছেন এমন হারে কিন্তু আপামর ক্রিকেটপাগল মানুষদের অতিরঞ্জিত গালাগাল তার ভালো লাগেনি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের আইডিতে তাসকিন বলেন, ‘সাপোর্ট করেন ভাই। গাইল দিয়েন না। নিজের দেশের মানুষই তো। দেখতে খারাপ লাগে। খারাপ হতেই পারে। ইচ্ছা করে তো আর খারাপ করতেছে না। আজকে হচ্ছে না কাল হবে। নিজের চিন্তাভাবনা থেকে একটু বাইরে এসে চিন্তা করেন। জিনিসগুলো সহজ হবে।’