gohor_risv

সর্বদলীয় সরকার পর্যন্ত ছাড় দেবে আ. লীগ

একটি গ্রহণযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সর্বদলীয় সরকার পর্যন্ত ছাড় দিতে রাজি। আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। উন্নয়ন সহযোগীদের আওয়ামী লীগ বলেছে, ২০১৪ মডেলের সর্বদলীয় সরকার নির্বাচনের আগে গ্রহণে তাঁরা প্রস্তুত।

২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন পরিচালনার জন্য তাঁর নেতৃত্বে সংসদে বিদ্যমান রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে একটি সর্বদলীয় অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। ওই প্রস্তাবে শেখ হাসিনা বিএনপিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ তাঁরা যে মন্ত্রনালয় চায়, সেই মন্ত্রণালয় দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলেন। কিন্তু বিএনপি ওই প্রস্তাব গ্রহণ করেনি। বিএনপি গ্রহণ না করলেও শেখ হাসিনার প্রস্তাব দেশে বিদেশে বিপুল ভাবে প্রশংসিত হয়েছিল।

২০১৮ র জাতীয় সংসদ নির্বাচন অংশগ্রহণ মূলক দেখতে চায় ভারতসহ উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলো। বিএনপি এখন পর্যন্ত সহায়ক বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো ফর্মুলা উপস্থাপন করেনি। তারা মোটা দাগে বলছে, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। বিএনপির এই বক্তব্য উন্নয়ন সহযোগীরা তো নয়ই খোদ বিএনপির নেতারাই অবাস্তব বলছেন।

উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির আলাদা আলাদা বৈঠক হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা গওহর রিজভী সম্প্রতি সফররত মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের বলেছেন, খুব বেশি হলে আমরা একটি সর্বদলীয় সরকার গঠন করতে পারি, যার প্রধান হবেন শেখ হাসিনা কারণ তিনিই সংসদ নেতা। মার্কিন প্রতিনিধিদের গওহর রিজভী এও বলেছেন, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে এটাই হবে সর্বোচ্চ ছাড়।

মার্কিন প্রতিনিধিরাও ড. রিজভীর কাছে জানতে চান, বিএনপি এখন সংসদে নেই, তাহলে সর্বদলীয় সরকার গঠিত হবে কীভাবে? জবাবে রিজভী দুটি বিকল্প বলেন। প্রথম বিকল্পে তিনি বলেন, প্রতি ১০ জন মন্ত্রিসভার সদস্যের একজন অনির্বাচিত থাকতে পারেন। ২০ সদস্যের অন্তবর্তীকালীন সরকারে দুইজন অনির্বাচিত থাকতে পারেন। দ্বিতীয় বিকল্পে, গওহর রিজভী বলেন সমঝোতার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের দুই বা তিনজন বর্তমান এমপি পদত্যাগ করলেন,সেই আসন গুলোতে বিএনপির মনোনীত ব্যক্তিরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়ে সংসদ সদস্য এবং অন্তরবর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রী হলেন। মার্কিন প্রতিনিধি দল এটাও জানতে চেয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীকে নির্বাচনকালীন সরকারে দপ্তরবিহীন রাখা যায় কিনা? ড. রিজভী বলেন, এটা এখনই তাঁর পক্ষে বলা সম্ভব না।

যোগাযোগ করা হলে ড. গওহর রিজভী এই আলোচনার ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তবে তিনি বলেন, ‘একটা ইনক্লুসিভ ইলেকশনের জন্য আমরা কথা বলছি। উন্নয়ন সহযোগীরা চায় আগামী নির্বাচনে সব দল অংশ নিক। এটা আমরাও চাই।এটা করার জন্য আমরা বিভিন্ন পর্যায়ে কথাবার্তা বলছি।’ ড. রিজভী এও বলেন ‘নির্বাচন তো আর সরকারের অধীনে হয় না, নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে’।

বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আমরা প্রকাশ্য সংলাপ চাই,গোপন আলোচনা নয়। বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য সংলাপের বিকল্প নেই। আমরা সমঝোতা চাই।`

বাংলা ইনসাইডার

বেগম জিয়ার মিশন রংপুর, যাবেন সড়ক পথে

রংপুর সিটি নির্বাচনে চমকে দিতে চান বেগম জিয়া। সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচারণায় অংশ নিতে তিনি সড়ক পথে রংপুর যাবেন। দলের কেন্দ্রীয় শীর্ষ নেতাদের পালাক্রমে নির্বাচনী প্রচারাভিযানে অংশ নিতে বলেছেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই রংপুর যাচ্ছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

রংপুরে বিএনপি জনপ্রিয় দল নয়। ৭৯ এর সংসদ নির্বাচনে রংপুর সদর থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন বিএনপি প্রার্থী রেজাউল হক সরকার রানা। রংপুরের বিএনপির সাফল্য বলতে ওই টুকুই। ঐতিহ্যগতভাবে রংপুর ছিল আওয়ামী লীগের ঘাঁটি। কিন্তু ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের পর এরশাদের পতন হলে, রংপুরবাসী এরশাদ প্রেমী হয়ে ওঠেন। ৯১ এর নির্বাচনে জেলে থেকে এরশাদ রংপুরের সবকটি আসনে জয়ী হন। তবে, এরশাদের জনপ্রিয়তায় এখন বেশ ভাটার টান। তাছাড়া, এবার সিটি নির্বাচন নিয়ে জাপায় বিরোধ প্রকাশ্যে।

দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ মোস্তাফিজুর রহমানকে মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করেন। কিন্তু এরশাদের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়িয়েছেন তাঁর ভাতিজা এবং জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সম্পাদক হোসেন মকবুল শাহরিয়ার আসিফ। জাপার ভেতরের খবর হলো, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা আসিফকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছেন। তাই, গত রসিক নির্বাচনে দ্বিতীয় হওয়া জাতীয় পার্টির এবারের অবস্থা খুব একটা ভালো না।

আওয়ামী লীগ শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুকে একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করলেও বিরোধ স্পষ্ট। আওয়ামী লীগের পক্ষেই একটি অংশ ঝন্টুর বিরুদ্ধে কাজ করছে। এছাড়া ঝন্টু সদ্য বিদায়ী মেয়র। তাঁর বিষয়ে মানুষের অভাব অভিযোগ রয়েছে। তাঁর অনেক কাজ ভালো হলেও, বেশ কিছু কাজের সমালোচনা আছে। সবচেয়ে বড় কথা, ঝন্টুর নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগই ঐক্যবদ্ধ নয়।

আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির এই দুর্বলতাগুলো কাজে লাগিয়ে রংপুরে বিজয় পতাকা ওড়াতে চান বেগম জিয়া। গত রসিক নির্বাচনে বিএনপি হয়েছিল তৃতীয়। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন মনে করছেন বিএনটির নেতারা। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, রংপুরে বিএনপি সাংগঠনিকভাবে দুর্বল। কিন্তু রংপুরে সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো দ্বীপ না। সারাদেশে বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যে অনাস্থা তাঁর বহিঃপ্রকাশ ঘটবে রংপুরে।’

খসরু মনে করেন, ‘রংপুরের নির্বাচন হবে বর্তমান সরকারের প্রতি অনাস্থার নির্বাচন।’ বিএনপি একাধিক নেতা বলেছেন, ‘রংপুরে বিএনপির হারানোর কিছু নেই। এই এলাকাটি জাপা-আওয়ামী লীগ নিয়ন্ত্রিত এলাকা। এখানে বিএনপি হারলেও কেউ কিছু বলবে না। কিন্তু রংপুরে যদি বিএনপি জয়ী হয় সেটি হবে, ‘চমক’। যেমনটি মনে করেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তাঁর মতে, ‘রংপুরে বিএনপির জয় প্রমাণ করবে এই সরকারের জনসমর্থনহীন ‘

তাই গতবার রসিক নির্বাচনকে হালকাভাবে নিলেও এবারের নির্বাচনক বিএনপি আন্দোলনের অংশ হিসেবেই নিয়েছে। ডিসেম্বরের প্রথমভাগেই বেগম জিয়া ৫ দিনের উত্তরাঞ্চল সফরের পরিকল্পনা নিয়েছেন। আসলে তাঁর এই সফরের গন্তব্য হবে রংপুর। বিএনপির নেতাদের মতে, বেগম জিয়া রংপুর সফরের মাধ্যমে একটি জোয়ার আনতে চান। এছাড়া দলের সিনিয়র নেতাদের পালাক্রমে রংপুর সফরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রংপুর দূর্গ জয় করলে, বিএনপি এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় দল, এটা প্রমাণ করা সহজ হবে, এমনটাই ভাবছেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin