সমাবেশে আসতে বাধা দিতেই কৃত্রিম যানজট: খালেদা জিয়া

নেতাকর্মীদের সমাবেশে আসতে বাধা দিতেই রাস্তায় কৃত্রিম যানজট সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
রবিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিএনপির জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রবিবার বেলা ২টা ৫৫ মিনিটের দিকে তিনি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খালেদা জিয়া পৌঁছান।
এরআগে দুপুর ২টার পর গুলশানের ফিরোজা বাসা থেকে তার গাড়িবহর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে রওনা দেন।

এত ছোট মন নিয়ে রাজনীতি করা যায় না: খালেদা জিয়া

সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা দলের নেতাকর্মীদের পথে পথে বাধা দেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সরকারের এই অগণতান্ত্রিক আচরণের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এতটাই (আওয়ামী লীগ) ছোট মন তাদের। এত ছোট মন নিয়ে রাজনীতি করা যায় না।’

রবিবার (১২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন খালেদা জিয়া।

এ সময় মঞ্চে উপস্থিতি ছিলেন- দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, মির্জা আব্বাস, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন ও আবদুল্লাহ আল নোমান প্রমুখ।

‘ঢাকাতে কি শুধু বিএনপির লোক থাকে?’ – বিএনপি আর বিএনপি

সালাউদ্দিন রনি। রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। অফিস মগবাজার। থাকেন কমলাপুরে। প্রতিদিন অফিসে আসেন বলাকা বা আয়াত পরিবহনে। এ জন্য তাকে ৫ টাকা ভাড়া দিতে হয়।প্রতিদিনের মতো রোববার বাসা থেকে বের হয়ে রনি কমলাপুরে বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির জন্য দাঁড়িয়ে আছেন। ২০ মিনিটেও কোনও গাড়ির দেখা নেই। অনেকেই রিকশা ও সিএনজি চালিত অটোরিকশায় গন্তব্যে যাচ্ছেন। কিছুই বুঝতে পারছিলেন না রনি। পাশ থেকে একজন বললেন, আজ বিএনপি সমাবেশ। ‘তার মানে রাজধানীতে সরকারি হরতাল?’ প্রশ্ন রনির। রনি দীর্ঘদিন ঢাকায় থাকার কারণে এ অভিজ্ঞতাটুকু তার হয়েছে। এবার নিরূপায় হয়ে পায়ে হেটেই অফিসের পথে রওয়ানা হলেন রনি।

মতিঝিল আবাসিক এলাকায় সাবলেটে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন ঝুমুর। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তিনি। রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় ধানমন্ডিতে তার ক্যাম্পাসে ক্লাসে যাওয়ার জন্য বের হয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর যখন জানলেন সোহরাওয়ার্দীতে বিএনপির সমাবেশ থাকায় রাজধানীতে অঘোষিত হরতাল চলছে, তখন বিরক্ত হয়ে রিকশা ভাড়া করে ক্লাসে যাওয়ার জন্য রওনা হলেন।তবে দিনাজপুর থেকে ট্রেনে এসে কমলাপুর নেমে মিরপুরে যাওয়ার জন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন সালেহা বেগম (৪৫)। কিন্তু তিনি যখন জানলেন বিএনপির সমাবেশ থাকায় রাজধানীতে আজ গণপরিবহন খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না। তখন ক্ষোভ প্রকাশ করে সবার কাছে প্রশ্ন রাখলেন- `ঢাকায় কি শুধু বিএনপির লোকজনই থাকে? সরকার গাড়ি বন্ধ করে দিলো, আমরা কি বিএনপি করি? আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হবে কেন?’

শুধু রনি, ঝুমুর আর সালেহাই ভোগান্তির শিকার হননি। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে রোববার রাজধানীতে লাখও মানুষ গণপরিবহনের অভাবে সীমাহীন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।রাজধানীর মতিঝিল, কমলাপুর, মালিবাগ, মৌচাক, মগবাজার, বংলামটর, শাহবাগ ও ফার্মগেট এলাকা ঘুরে এমন তথ্য মিলেছে।
সকাল ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তায় গণপরিবহন একেবারেই কম। ২০-৩০ মিনিট পর দু’একটি গণপরিবহন চোখে পড়লেও তাতে যাত্রীদের উঠা অসম্ভব ছিল। কারণ প্রত্যেক স্টেশনে অসংখ্য মানুষ দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। সেখানে যাত্রীবোঝাই একটি বাস আসলেও তাতে নতুন যাত্রীদের ওঠা সম্ভব হয়নি। এমন ভোগান্তির জন্য অনেকেই চরম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin