সড়ক অবরোধের হুমকি গয়েশ্বরের

কেন্দ্রে যাওয়ার পর যদি ভোট না দিতে দেয় তাহলে ১৭ তারিখ রাত ১২টার দিকে ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-সিলেট পর্যন্ত যেন কোনো গাড়ি না চলে এমন ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

তিনি বলেন, ‘১৭ তারিখ জনগণ ভোট দিতে পারলে আমাদের চিন্তা নেই। তাই আপনাদের অনুরোধ করব অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে ১৭ তারিখ কেন্দ্রে যাবেন। মাইর দিলে খাবেন। তারপর কেন্দ্রে যাওয়ার পর যদি ভোট না দিতে দেয় তাহলে ১৭ তারিখ রাত ১২টার দিকে ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-সিলেট পর্যন্ত যেন কোনো গাড়ি না চলে।’

তিনি আরও বলেন ‘এটাই হলো বদহজমের ওষুধ। আন্দোলন ছাড়া কোনো পথ নেই। ভদ্র ভাষায় কথা বললে তারা বোঝে না। গণতন্ত্রের ভাষা তারা বোঝে না। মানবতাবোধ বলতে তাদের কিছু নেই। তারা আছে পুলিশের জোরে’।

রোববার রাজধানীর ডেমরার সারুলিয়া এলাকায় ঢাকা-৫ এর উপনির্বাচনে বিএনপি প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদের নির্বাচনী পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বেলা ১১টায় পথসভা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকে ঢাকা-৫ এর নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে পথসভাস্থলে আসতে থাকেন দলীয় নেতাকর্মীরা। পরে পথসভা শেষে কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে অর্ধশত মোটরসাইকেলসহ নির্বাচনী র‌্যালিতে অংশ নেন কয়েক হাজার নেতাকর্মী।

র‌্যালির সামনে পেছনে পুলিশের কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল নিয়ে তারা নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। র‌্যালিটি সারুলিয়া রানীমহল সিনেমা হল থেকে শুরু হয়ে ডগাইর, পশ্চিম ডগাইর, কোনাপাড়া, মাতুইয়াল কবরস্থানসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে শনির আখড়া মৃধাবাড়ি এলাকায় এসে শেষ হয়।

এ সময় র‌্যালিতে থাকা কয়েক হাজার নেতাকর্মী সরকারবিরোধী ও ধানের শীষে ভোট চেয়ে স্লোগান দেন। নেতাকর্মীদের স্লোগানে পুরো এলাকা তখন মুখরিত হয়ে ওঠে।

গয়েশ্বর বলেন, ‘যারা বৈধভাবে আকামা নিয়ে কাজ করছিল কিন্তু করোনার সময় বাংলাদেশে এসেছিলেন তাদের সৌদি আরবে যাওয়ার শেষ দিন ছিল ২৩ সেপ্টেম্বর। বাংলাদেশ সরকার তাদের ফেরত যাওয়ার জন্য কোনো বিমানের ব্যবস্থা করেনি।

যেজন্য কয়দিন আগে খুব আন্দোলন হলো। এখন প্রায় ৪০ হাজার এই প্রবাসী শ্রমিক যেতে পারবে না। ক্ষতিটা কার হলো শুধু এই ৪০ হাজার পরিবারের? না, বিদেশ থেকে আমাদের দেশে যে বৈদেশিক মুদ্রা আসে তার ক্ষতি হলো।’

এই সরকার নানা রোগে রোগাক্রান্ত; তবে তাদের হজমশক্তি বেশি মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পিলখানার ৫৬ জন চৌকস সামরিক কর্মকর্তা জীবন দিল এটাও সরকার হজম করে ফেলেছে।

৮৬ কোটি টাকা শেয়ারবাজারের ওটাও হজম, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ৬০০ কোটি টাকা সেটাও হজম। খুন, গুম, নারীধর্ষণ এ রকম হাজার বিষয় হজম। হজম শক্তিটা এমন হয়েছে যে আমি সরকারকে বলবো ১৭ তারিখের নির্বাচনে টালবাহানা করলে কিন্তু বদহজমের শুরু হবে। তখন কিন্তু হাসপাতালে নিতে হবে সরকারকে।’

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, ১৯৭০ এর নির্বাচনে ভোটের ফলাফল না মানার কারণে আমরা যদি অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে পারি, আমার মায়ের সম্ভ্রম নষ্ট হতে পারে, আমার পাশ থেকে আমার ভাই শহীদ হয়েছেন। আজকের ৫০ বছর পরে পাক বাহিনী যে কাণ্ডটা করেছে সেটা কি দেখতে চাই?

প্রশ্ন জাগতে পারে পাক বাহিনী এলো কোথা থেকে? পাক বাহিনী না আসলেও তাদের প্রেতাত্মা আসছে। ফলে নারী ধর্ষণ হচ্ছে, শিশু ধর্ষণ হচ্ছে। পাকিস্তানিরাও কিন্তু নয় মাস যুদ্ধ চলাকালীন আমাদের মা-বোনদের ইজ্জত নষ্ট করেছে।

আমাদের শিশুদের বা ৭০ বছরের বৃদ্ধাদের সম্ভ্রমহানি করেছে এমন সংবাদ আমরা পাইনি। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র থেকেও আমরা পাইনি। এখন ৯ থেকে ৯০ কারো রেহাই নেই। ’৭১ এ যুদ্ধকালীন পাক বাহিনীর যে বর্বরতা ছিল তার চেয়েও কিন্তু কঠিন বর্বরতা চলছে এখন। প্রতিদিন খবরের কাগজ খুললেই আমরা সেটা দেখতে পাই।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin