গোপনে বিয়ে করার পর বেশ ভালোই ছিলেন চিত্রতারকা দম্পতি শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস। আট বছর আগের সে বিয়ের খবর যেই না জনসমক্ষে চলে আসে, তখনই দুজনের মধ্যে শুরু হয় সম্পর্কের টানাপোড়েন। পরিস্থিতি এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস নিজেদের মধ্যে মুখ দেখাদেখি বন্ধ করে দেন। শুধু ছেলে আব্রামের কারণে মাঝেমধ্যে দেখা হলেও কথা হয়নি দুজনের। এবার তাঁদের সেই টানাপোড়েন চূড়ান্ত পরিণতির দিকে যাচ্ছে। শোনা যাচ্ছে, শিগগিরই দেশের সিনেমার জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খান আর নায়িকা অপু বিশ্বাসের নাকি আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটতে যাচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে শাকিবের একটি পারিবারিক সূত্র বিবাহবিচ্ছেদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সিনেমার শুটিংয়ে শাকিব খান এখন দেশের বাইরে আছেন। ‘মাস্ক’ নামের এই সিনেমায় শাকিবের সহশিল্পী কলকাতার নুসরাত। সেখানে যাওয়ার আগে বিবাহবিচ্ছেদ প্রসঙ্গে শাকিব বলেন, ‘আমি সিনেমার শুটিং নিয়ে এখন বেশি ব্যস্ত। একের পর এক নতুন কাজ যোগ হচ্ছে। এই বিষয়টা নিয়ে এখন কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। কিছু হলে অবশ্যই সবাই জানতে পারবেন।’
এদিকে শাকিব-অপুর একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, দুজনের সংসার যে হচ্ছে না, এটা পুরোপুরি নিশ্চিত। কারণ, একটা সম্পর্কের মধ্যে যদি পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সম্মান, ভালোবাসা না থাকে, সেখানে সংসার করা মুশকিল হয়ে পড়ে। শাকিব ও অপুর বিয়ের খবর প্রকাশ্যে চলে আসার পর দুজনের মধ্যে সম্পর্কের চূড়ান্ত অবনতি ঘটে। কোনোভাবেই এই সম্পর্কের উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাই বিবাহবিচ্ছেদই দুজনের জন্য উত্তম। যত দূর শোনা যাচ্ছে, অপুর সব পাওনা মিটিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতিও চলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজনের আরেকটি ঘনিষ্ঠ সূত্র জানিয়েছে, অপুর বিশ্বাসের ওপর ভীষণ নাখোশ শাকিব। আর দিনের পর দিন তা বেড়েই চলেছে। তা ছাড়া শাকিব যে কাজ পছন্দ করেন না, অপু নাকি প্রতিনিয়ত সেসব করে চলছেন। শুধু কি তা-ই, মিডিয়ায় শাকিবকে যাঁরা পছন্দ করেন না, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছেন অপু। সবকিছু মিলিয়ে নাকি অপুর ওপর শাকিব খুব বিরক্ত।
এ ব্যাপারে আজ শনিবার দুপুরে অপু বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কিছুই বলার নেই। শাকিবও এখন দেশের বাইরে আছে। আমার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের ব্যাপারে কোনো কথা হয়নি। আমি আমার সন্তান নিয়ে ব্যস্ত আছি।’
২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের বিয়ে হয়। বিয়ের ব্যাপারটি কঠোর গোপনীয়তার মধ্যে রেখে তাঁরা দুজন সমানতালে সিনেমার শুটিং করে গেছেন। এ বছর ১০ এপ্রিল একটি টেলিভিশন চ্যানেলে ছয় মাস বয়সের ছেলে আব্রামকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হন অপু। সেদিন অপু বলেন, ‘আমি শাকিবের স্ত্রী, আমাদের ছেলেও আছে।’
শাকিবকে লাইভে গালা গালি করে এবার এ কি বললেন নিপুন!
বেশ অনেক দিন ধরেই ঢালিউডের নাম্বার ওয়ান খ্যাত নাওয়ক শাকিব খানকে নিয়ে চলে আসছে নানা সমালোচনা। সর্বশেষ নায়ক ফারুক কে নিয়ে মন্তব্য করায় বেশ তোপের মুখে পরতে হয় শাকিব খানকে। এবার আবার নতুন করে বিতর্কে জড়ালেন এই নায়ক।
রোববার একটি বেসরকারি টেলিভিশনে চিত্রনায়িকা বুবলীকে ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে যোগ্য নায়িকা বলেছেন শাকিব খান। আর এমন বক্তব্যের পর বেশ নরেচরে বসেন নায়িকা নিপুণ। শাকিবের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদেই নিজের ফেসবুক ফ্যান পেজে শাকিব খানের সমালোচনা করেন নিপুণ।
নিপুণ তার ফেসবুক পেজে শাকিব খানকে উদ্দেশ্য করে লিখেন, ‘শাকিব খান আজকে আপনাকে কিছু কথা বলতে চাই। আপনি কীভাবে বলেন বা বুঝাতে চান যে, বাংলাদেশের নায়িকারা শিক্ষিত না, ব্যাকগ্রাউন্ড ভালো না? মিডিয়াতে শুধু বুবলী যোগ্য এবং শিক্ষিত?
শাকিব খান, আপনি নিজের বৌ (অপু বিশ্বাস) এর চেয়ে বেশিবার বুবলীর গুনগান মিডিয়াতে বলছেন। তাই নয় কি? যাই হোক ব্যক্তিগত ব্যাপারে না-ই বা গেলাম! আপনি পারসোনালি মানুষকে বা বুবলীকে খুশি করার জন্য যা খুশি বলেন, কিন্তু মিডিয়ার সামনে অন্য আর্টিস্টদের সম্মান দিয়ে কথা বলবেন।
আর আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা? আপনার ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন্ড? আপনি মনে হয় আপনার ১১ বছর আগের কথা ভুলে গেছেন। ইমিগ্রেশন অফিসার ইমিগ্রেশনে ইংরেজিতে যা কিছুই জিজ্ঞেস করতো আপনি না বুঝেই ‘ইয়েস’, ‘নো’ বলতেন; যেখানে অন্য আর্টিস্টরা ঠিকঠাক উত্তর দিত। আপনি এতই শিক্ষিত যে ‘ইডি’ (এম্বারকেশন-ডিসএম্বারকেশন) কার্ড পূরণ করতে পারতেন না। ভুলে গেছেন?
ইন্ড্রাস্ট্রিতে অনেক শিক্ষিত আর্টিস্ট আছে যারা নিজের ব্যাপারে মিথ্যা জাহির করেনা। আপনি মনে হয় আপনার ব্যাকগ্রাউন্ডের সঙ্গে সঙ্গে অন্য আর্টিস্টদের ব্যাকগ্রাউন্ডও ভুলে গেছেন। তাই আমি আমার ব্যাকগ্রাউন্ড আবারও আপনাকে মনে করে দিতে চাই যে, আমি কোথা থেকে এসেছিলাম এবং আমার ফ্যামেলি ব্যাকগ্রাউন্ড আমার বাবার পেশা, আমার মা’র পেশা, আমার ভাই-বোন, আমার শিক্ষা, আমার গ্রাজুয়েশন কি?
আপনাকে আরও মনে করিয়ে দিতে চাই যে, বনানীর যে বাসায় আমি থাকি সেটা সিনেমার টাকায় কেনা না। এটা আমার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া, মিডিয়াতে আসার আগে থেকেই ছিল। সিনেমায় এসেছি ভালো লাগা থেকে। মস্কো থেকে ২ বছর পর গ্রাজুয়েশনের ক্রেডিট ট্রান্সফার করে ইউএস এর লা ভ্যালি কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করে এসেছি।
আপনি তো আবার অতীত ভুলে যান। তাই আরও মনে করিয়ে দিতে চাই যে, আপনি শুটিংয়ের সেটে রাজ্জাক আঙ্কেলকে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত বসিয়ে রেখেছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেটে আর আসেননি। আরও কতজনকে যে অসম্মান করেছেন তার হিসেব নেই। ভুলে গেছেন?
ইন্ড্রাসট্রি তে যা খুশি তা করেছেন আপনি। সিনিয়ররা আপনার ব্যবহারে অতিষ্ট। আপনার জন্যই তো উনারা ইন্ড্রাসট্রিতে নিয়মিত না। আপনি কি করে ভাবেন যে, রাজ্জাক আঙ্কেল, ফারুক আঙ্কেল, আলমগীর আঙ্কেল আপনাকে বারবার সাপোর্ট দিবে।
শাকিব খান, বাংলা সিনেমা নিয়ে আপনি যে নোংরা রাজনীতি করছেন তা নিজের ও কিছু দেশি-বিদেশি মহলের স্বার্থ রক্ষার জন্য করছেন যা বাংলাদেশ চলচিত্র শিল্পের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। বাংলা চলচ্চিত্র নিয়ে নোংরা রাজনীতি বাদ দেন।
আর মিডিয়ার সবাই জানে আপনার অতীত এবং ব্যাকগ্রাউন্ড। বুবলীর ভিডিও গানের লক্ষ লক্ষ ভিউ ভিউয়ের কথা এত বার বার বলেন কেন? ভিউ বেশি মানেই কি অপুর চেয়ে বেশি বুবলীর গ্রহনযোগ্যতা দর্শকদের কাছে? আপনি কি জানেন না যে, বুস্ট করিয়ে মানে টাকা খরচ করিয়ে ভিউ বাড়ানো যায়।
আর আমি যখন থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করি, তখন আপনি ইন্টারনেটের ‘ই’-ও জানতেন না। মুভি বানানোর জন্য ইনভেস্ট আমিও করতে পারি কিন্তু আপনার মতো শয়তান যত দিন ইন্ড্রাস্ট্রিতে থাকবে ভালো মানুষরা ইনভেস্ট করতে চাইবে না। কারণ কিছু লোককে তো রেখছেনই টাকা দিয়ে সেই সিনেমা পাইরেসি করানোর জন্য এবং নিজেকে স্বঘোষিত কিং খান প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।
পরবর্তীতে মিডিয়াতে কথা বলার আগে অবশ্যই চিন্তা ভাবনা করে সিনিয়র আর্টিস্টদের ও অন্যান্য আর্টিস্টদের সম্মান দিয়ে কথা বলবেন আর নিজের অতীতটা মনে রাখবেন।’
সূত্র: প্রথম-আলো