বিএনপি’র ভয়েই দেশান্তরী মঈন

জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মঈন ইউ আহমেদ। বাংলাদেশে বহুল আলোচিত সমালোচিত সেনা প্রধান। তার নেতৃত্বে ওয়ান ইলেভেন সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ২০০৭ সালে ড. ফখরুদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনে অন্যতম ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। ২০০৮ এর নির্বাচনের পরও সেনাপ্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।

অবসর গ্রহণের পর চুপিসারে দেশত্যাগ করেন মঈন ইউ আহমেদ। দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থান করছেন তিনি। ক্যান্সারে আক্রান্ত এই সাবেক সেনা প্রধান সেখানেই নিভৃত জীবন যাপন করছেন। বাঙালি কমিউনিটির সঙ্গেও তার খুব একটা যোগাযোগ নেই। হাতে গোনা দুচারজন তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। একটি বই লিখলেও অজ্ঞাত কারণে বইটি প্রকাশ করেন না।

জেনারেল (অব.) মঈনকে সেনা প্রধান করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। ৭ জন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তাকে ডিঙ্গিয়ে তাকে সেনা প্রধান করার মূল কারণ ছিল আস্থা ও বিশ্বাস। বিএনপির সব নেতাই একটি বিষয়ে একমত, জেনারেল মঈন বিশ্বাস ঘাতকতা করেছেন। জেনারেল মঈন যদি সমর্থন দিতেন তাহলে ২২ জানুয়ারি ২০০৭ সালের নির্বাচন করা যেত।

অবশ্য মঈন তার বইতে উল্লেখ করেছেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্যই তিনি ওই সময় কাজ করছেন। ওই নির্বাচন হলে দেশে গৃহযুদ্ধ হতো বলেও তিনি লিখেছেন তার গ্রন্থে। দুবছর তত্ত্বাবধায়ক সরকার থাকলেও আসল ক্ষমতা ছিল জেনারেল মঈনের হাতেই। সবকিছু পরিচালিত হতো তার নির্দেশেই। এসময় মাইনাস টু ফর্মূলার মাধ্যমে দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে বিদায় করে, তিনি পাদপ্রদীপে আসতে চেয়েছিলেন বলে মনে করেন অনেকে। কিন্তু, তার কিংস পাটি, হালে পানি পায়নি।

এক সময়, ক্ষমতা দখলের চিন্তা মাথা থেকে বাদ দিতে বাধ্য হন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে, তিনি নিরাপদেই ছিলেন। এখনো তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তাকে নিয়ে এখন আলোচনাও নেই। তবুও কেন দেশে ফিরছেন না মঈন ইউ আহমেদ।

তার ঘনিষ্ঠদের বলেছেন, দেশে না ফেরার কারণ। তার মতে বিএনপি যে কোনো সময় তার ক্ষতি করতে পারে। দলে কিছু ভয়ংকর সন্ত্রাসী আছে বলেও মনে করেন মঈন। সেনা প্রধান থেকে অবসর গ্রহণের পর, এরকম কিছু হুমকি পেয়েছিলেন তিনি। এজন্যই এখন নিরাপদ দূরত্বে আছেন।

বিএনপি তো এখন নিজেই সংকটে তারপরও তার কিসের ভয়? এমন প্রশ্নের উত্তরে মঈন বলেছেন, ‘বাংলাদেশে যেকোনো সময়ে যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। এটা সব সম্ভবের দেশ।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin