বিএনপির তিন নেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা

লন্ডনে পলাতক বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়া বিএনপির তিন নেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। এ তিন নেতা আগামী পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত কোন বক্তব্য বিবৃতি রাখতে পারবেন না।

কোন প্রকার সমাবেশ বা সভায় তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো যাবে না। তাদের কোনো বক্তব্য বিএনপির বক্তব্য বলে গৃহীত হবে না। লন্ডন থেকে তারেক জিয়া এ নির্দেশনা দিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব কে।

সম্প্রতি বিএনপির এই ৩ নেতা বিএনপির আপোষকামিতা এবং খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে বেশ কিছু কথাবার্তা বলছিলেন। এই তিন নেতার মধ্যে রয়েছে:- মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন,শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং শাহজাহান ওমর। এই তিনজনই খালেদা জিয়ার মুক্তি আপোষকামিতার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এই তিনজন নেতাই তারেক জিয়া বিরোধী বলে জানা গেছে।

সাম্প্রতি মেজর (অব:) হাফিজ বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া আপোষ করেই মুক্তি পেয়েছেন এবং তিনি বিএনপি নেতা। তারপর বিএনপির কি হবে তা তিনি জানেন না। স্পষ্টতই তিনি তারেক জিয়াকে ইঙ্গিত করে এই মন্তব্য করেছেন। অপরদিকে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেছেন, খালেদা জিয়া কিসের আপোষহীন?

আপোষ করেই তিনি কারাগার থেকে বেরিয়েছেন। শাহজাহান ওমরও খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং বিএনপির রাজনীতি নিয়ে সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, বিএনপি সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েছে।

অবশ্য এদের মধ্যে শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং শাজাহান ওমর দুজনই তাদের বক্তব্যের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু মেজর (অব:) হাফিজ উদ্দিন এ সংক্রান্ত কোন মন্তব্য করেন নি।

এই বক্তব্যগুলো বিএনপির মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং বিএনপির পক্ষ থেকে এই বিষয়টি সুরাহা করার জন্য লন্ডনে তারেক জিয়ার কাছে পাঠানো হয়। তারেক জিয়া তাদের বক্তব্যগুলো পর্যালোচনা করে তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে । 

অবশ্য বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন যে, একজন রাজনৈতিক নেতার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা নজিরবিহীন ঘটনা। কোন নেতা যদি দলের গঠনতন্ত্র এবং সংগঠনবিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত থাকেন, তখন তাকে শোকজ করতে হয়। তার দলের সদস্যপদ সাময়িকভাবে স্থগিত করতে হয়। তাকে দল থেকে বহিস্কার করতে হয়।

কিন্তু কোন কিছু না করে বক্তব্য রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এক ধরণের স্বেচ্ছাচারিতা। এই ধরণের ব্যবস্থা গঠনতন্ত্রের কোথাও নাই। তবে গঠনতন্ত্রে না থাকলেও দলের চেয়ারপার্সন বা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি এ রকম সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে মনে করেন বিএনপির একাধিক নেতা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন নেতা বলেছেন, দলের চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে এখন তারেক জিয়াই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। কাজেই তিনি কোন নেতাকে যে কোন কাজ থেকে সরিয়ে নিতে পারেন। ওই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন যে, এই তিন নেতা দলের মধ্যে যে বক্তব্য রেখেছেন, বেগম জিয়া সম্পর্কে যে বক্তব্য রেখেছেন তা দৃষ্টতাপুর্ণ।

এ ধরনের বক্তব্য সঞ্চারিত হলে দলের মনোবল ভেঙ্গে যাবে এবং দলের মধ্যে বিভক্তি তৈরি হবে। আর এ কারণেই তাদের এ ধরনের বক্তব্য অনুচিত এবং দলের গঠনতন্ত্র ও সংগঠনবিরোধী। বিএনপি`র স্থায়ী কমিটির ওই নেতা এটাও মনে করেন যে, এ ধরনের বক্তব্যর ফলে দলে অন্যান্যরাও উৎসাহ পাবে। কাজেই যদি ব্যবস্থা গ্রহণ না করা হয় তাহলে ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য ভবিষতে উস্কে দিবে।

তবে বিএনপির একাধিক নেতা মনে করেন, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা হাস্যকর। কারণ মেজর (অব) হাফিজ উদ্দিন, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং শাহজাহান ওমর কথা বলার জন্য বিএনপির নেতাদের অনুমতি নিতে হবে। তবে এ রকম কোন বিধান গণতান্ত্রির রীতির সাথে সামঞ্জস্যপুর্ণ নয়। আর এ কারণেই তারা মনে করছেন বিএনপি যে একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এবং ভুল পথে চলছে এই ঘটনাগুলো তারই প্রমাণ।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin