bnp-flag

বিএনপির ওপর সরকারের আগ্রাসী অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি

সম্প্রতি আওয়ামী লীগের র্শীষ পর্যায় থেকে বিএনপির ওপর নমনীয় মনোভাব পোষণ করতে দেখা যাচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে সরকারি দলের নেতাদের বক্তৃতা বিবৃতিতেও পরিবর্তন এসেছে। তারা এখন বিএনপিকে লক্ষ্য করে আক্রমণাক্ত কোনো বক্তব্য দিচ্ছেন না। একই অবস্থা বিএনপির ক্ষেত্রেও। নির্বাচনকে সামনে রেখে উভয় দলের নেতারা তাদের বক্তব্যের লাগাম টেনে ধরছেন বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা মনে করেন এর মাধ্যমে দেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের ঈঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। আগামী নির্বাচন ঘিরে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তা নিরসনে দুই দল কাছাকাছি আসার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন তারা।

তবে বিএনপির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন সরকারের মনোভাবের পরিবর্তন হয়নি বরং তারা আগের অবস্থানেই রয়েছে। কারণ হিসেবে তারা বলেন, তাদের নেত্রী খালেদা জিয়াকে এখন প্রতি সপ্তাহে কোর্ট হাজিরা দিতে হচ্ছে। নেতাকর্মীদের ওপর হামলা মামলা, পুলিশী লাঠি র্চাজ অব্যাহত রয়েছে। সভা সমাবেশে বাধা দেওয়া হচ্ছে।

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার করা হয়েছে। দমন পীড়ণ অব্যাহত রয়েছে।তারা মনে করেন, সরকারি দলের নেতারা তাদের বক্তৃতায় কিছু নমনীয়তা দেখাচ্ছে। কারণ বিষেদাগার শুনে মানুষ আর বিশ^াস করে না। তাদের কথা শুনে মানুষ এখন হাসে। তাদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে এটা বুঝতে পেরে তারা বক্তৃতায় নরম মনোভাব দেখাচ্ছে। অন্য ক্ষেত্রে কোনো পরির্বতন বা সহযোগিতার মনোভাব দেখাচ্ছে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন মনে করেন, সরকার আগ্রাসী মনোভাব থেকে সরে এসে নমনীয় মনেভাব দেখাচ্ছে এটা তো দেখছি না। সরকার কোনভাবে নমনীয় না। এই তো গত সপ্তাহে আমাদের ছাত্রদল যুবদলের নেতকর্মীদের নামে মামলা করেছে, গ্রেফতার করেছে। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার করেছে। তাহলে নমনীয়তাটা কোথায়? ম্যাডামকে প্রতি সপ্তাহে কোর্টে যেতে হচ্ছে।

এটা তো অব্যাহতভাবে চলছে।তিনি বলেন, সম্প্রতি আওয়ামী লীগের র্শীষ নেতারা বিএনপির বিরুদ্ধে যেসব বিষাদাগার করে আসছিলো সেখান থেকে সরে আসার অন্যতম কারণ, তাদের এসব অসত্য কথা মানুষ আর বিশ^াস করছে না। এগুলো শুনে মানুষ হাসে। তারা এখন এটা বুঝতে পারছে। তাদের জনমত আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে। এ কারণে তারা এখন এসব থেকে সরে আসতে পারে। তবে আমরা একথা বলতে পারি যত দিন যাচ্ছে ততই তাদের জনপ্রিয়তা হ্রাস পাচ্ছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য গয়েশ^র চন্দ্রর রায় মনে করেন, দেশে নানা মতের মানুষ থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবে। এটা গণতান্ত্রিক একটা দেশের প্রধান এবং অন্যতম শর্ত। কিন্তু এখন কি দেশে সেই অধিকার আছে? এখনো ভেতরে ভেতরে নয়, সরকার প্রকাশ্যে আগ্রাসী মনোভাব দেখাচ্ছে বিএনপির ওপর। সেখান থেকে সরকার এখনো সরে আসেনি। নেতাকর্মীদের ওপরে হামলা মামলা এটা নিত্যদিনের ঘটনা।বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, অতি সম্প্রতি খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরের হামলার ঘটনা ঘটেছে। ২০১৪ সালে নতুন করে ক্ষমতায় আসার পর নির্যাতন নিপীড়ণের মাত্রা দ্বিগুন হয়েছে।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমদ আযম খান বলেন, সরকার তার আগ্রাসী মনোভাব থেকে সরে এসেছে এটা সঠিক নয়। কারণ সংসদে গত কয়েকদিনে জিয়া ও বিএনপিকে নিয়ে গালিগালাজ মূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আমি মনে করি সরকারের উচিত বিএনপির সঙ্গে নমনীয় আচারণ করা। এখনো তাদের কাছ থেকে নমনীয় আচারণ আমরা পাচ্ছি না।

এখনো বেগম খালেদা জিয়া কোর্টে গেলে ফিরে আসার পথে ছাত্রদল, যুবদলের ওপরে লাঠির্চাজ এবং প্রত্যেক বৃহস্পতিবারে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সেদিনও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদকে গ্রেফতার করেছে।

তিনি বলেন, ১২ তারিখের সমাবেশে যোগদান করতে গিয়ে যেভাবে পুলিশ হয়রানি করেছে। ওই সরকারি নেতাদের মুখে নরম আচারণের বুলি শুনতে পাই, কিন্তু বাস্তবতায় তা এখনো দেখতে পাচ্ছি না। তাবে আমরা আশা করছি সরকারি দল শুধু নরম নয়, তারা যেভাবে সারাদেশে সভা সমাবেশ করছে আমাদেরকেও সেই সুযোগ দেওয়া হোক। এখনো তারা হয়রানি করছে। তারা মুখে নরম হলেও কার্যক্ষেত্রে কোথাও তাদের থেকে কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না। আমরা তাদের থেকে সহযোগিতা ও সহনশীল আচারণ প্রত্যাশা করি।

আমাদের সময়

‘মা ব্যাটা মিল্লা, দেশটা খাইল গিল্লা’ এইটা চলতে পারে না

তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিএনপি ও জামায়াতকে আগামীতেও ক্ষমতার বাইরে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, তারা আবার ক্ষমতায় এলে দেশে জঙ্গি উৎপাদন শুরু করবে, রাজাকারদের পুনর্বাসন করে দেশে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করবে। ১০ বছর আগে সবাই বলত, ‘মা ব্যাটা মিল্লা দেশটা খাইল গিল্লা’ এইটা চলতে পারে না।আজ বুধবার ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু।

দেশ দ্রুত উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে শেখ হাসিনাকে আবার সমর্থন দিয়ে উন্নয়নের ধারাকে অব্যাহত রাখতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সব শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।তথ্যমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না। খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন। তার প্রমাণ আগুন দিয়ে মানুষ মারা, জঙ্গিদের সহায়তা করা।

হাসানুল হক ইনু বলেছেন, শেখ হাসিনার অধীনে যাঁরা নির্বাচন করবেন না বলে রূপরেখার নামের অরূপরেখার সহায়ক সরকার চান, তাঁরা আসলে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই নির্বাচন হবে ২০১৮ সালে।তথ্যমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলেন, তাঁদের সময় মন্দির ও পীরের দরগাহে আক্রমণ হয়েছে।

বোমা ফুটেছে ৫০০ জায়গায়, শায়খ আবদুর রহমান-বাংলা ভাইয়ের তাণ্ডব হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হয়েছে। সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া ও আহসানউল্লাহ মাস্টারকে হত্যা করা হয়েছে। এমনকি শেখ হাসিনাকেও হত্যা করার চক্রান্ত হয়েছে। ১০ বছর আগে সবাই বলত, ‘মা ব্যাটা মিল্লা দেশটা খাইল গিল্লা’ এইটা চলতে পারে না।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা জাসদ আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি মো. আবদুর রহমান সরকার। প্রধান বক্তা ছিলেন ময়মনসিংহ মহানগর জাসদের সভাপতি ও জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সহসম্পাদক সৈয়দ শফিকুল ইসলাম মিন্টু। আরো বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় জাসদের সহসভাপতি আফরোজা হক রীনা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান চুন্নু, জেলা জাসদের সভাপতি অ্যাডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক এ সাদিক হোসেনসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় জাসদ নেতারা।

এর আগে তথ্যমন্ত্রী বেলা সাড়ে ১১টায় ময়মনসিংহ সার্কিট হাউসে বিটিভির ময়মনসিংহ উপকেন্দ্র ও জেলা তথ্য অফিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এবং বিকেলে ফুলবাড়িয়া উপজেলা পরিষদের সব বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ফেরার পথে ফুলবাড়িয়ায় শাহ আলমিয়া এতিমখানা পরিদর্শন করেন।

ntvbd

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin