৪৬ তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন জো বাইডেন। তার রানিংমেট হিসেবে কমলা হ্যারিস। তিনি আগামী চার বছর ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। প্রশ্ন উঠেছে জো বাইডেন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কেমন হবে? সম্পর্কে কি নতুন মেরুকরণ ঘটবে।
এই প্রশ্ন গুলোর উত্তর এর জন্য আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে। তবে মার্কিন বিভিন্ন পররাষ্ট্রনীতির বিশ্লেষকরা মনে করছেন যে, বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছু নতুন মেরুকরণ ঘটবে। যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মৌলিক পররাষ্ট্রনীতি অভিন্ন।
ডেমোক্রেট বা রিপাবলিকান যারাই ক্ষমতায় আসুক না কেন তারা একটি অভিন্ন পররাষ্ট্রনীতি কৌশল মেনে চলেন। কিন্তু খুটিনাটি বিষয় দুটি দলের মধ্যে অবস্থান এর বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে। এই পার্থক্যগুলো ক্রমশ্য দৃশ্যমান হচ্ছে এবং বড় হচ্ছে।
আর তাই ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছরের শাসনামলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর যে বাংলাদেশকে নীতি সে বাংলাদেশে নীতিতে কিছুটা পরিবর্তন আসবে। কোন কোন নীতি পরিবর্তন আসবে এনিয়ে বিশ্লেষকরা নানা রকম মতামত দিচ্ছেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে যে বিষয়গুলো নিয়ে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। তা হলো:-
১। বাংলাদেশের অভিবাসিদের সুযোগ বাড়বে:
বাংলাদেশ থেকে মাকিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রচুর অভিবাসি যায়। এদের একটা বড় অংশ যারা ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৪ বছরের শাসনামলে খুব কোণ ঠাসা অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলেন। এখন সেই অনিশ্চয়তার দূর হবে। তারা একটি স্বস্তিদায়ক অবস্থার মধ্যে থাকবেন। এটি হবে জো বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হবার পর বাংলাদেশ নীতিতে প্রথম নীতি।
২। বাংলাদেশে ভারতের প্রভাব বাড়বে:
বাংলাদেশের রাজনীতে এবং কুটনীতিতে অনেক দিন ধরেই ভারতের প্রবাব দৃশ্যমান ছিল। এখন মনে করা হচ্ছে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প চলে যাওয়ার পর বাইডেন এবং কমলা হ্যারিসের শাসনামসলে বাংলাদেশে ভারতের কতৃত্ব আরো বাড়বে। কারন ডেমোক্রেটরা বাংলাদেশের বিষয়ে অনেক বেশি ভারত-নির্ভর হবে।
বিশেষ করে এএ অঞ্চলে চিনের আধিপত্য ঠেকানোর জন্য রিপাবলিকান এবং ডেমোক্রেটরা কথা বলছেন কাজ করছে। সেই ধারায় এখন এই উপমহাদেশে ভারতের কর্তৃত্ব আরো বাড়বে। বিশেষ করে কমলা হ্যারিস ভাইস প্রেসিডেন্ট হওয়ার কারণে বাংলাদেশের মার্কিন নীতি ও কৌশল অনেকটাই ভারতের অনুকরণে করা হবে বলে অনেকে মনে করছেন।
৩। বাণিজ্যিক সুবিধা পাবে বাংলাদেশ:
যেহেতু ডেমোক্রেটরা উদার বাণিজ্য নীতি অবলম্বন করেন এবং রক্ষণশীল আমদানি নীতি পরিহার করে সেজন্য বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিক সুবিধা পাবে এবং বাণিজ্যিক সুবিধা বাড়বে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের রক্ষণশীল যে আমদানি নীতি ছিল তাতে আভ্যন্তরীণ সম্পত্তি দিয়ে চাহিদা মেটানোর ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়েছিল। এখন গার্মেন্টস খাতে বাংলাদেশ বেশ আগের চেয়ে ভালো করবে বলে মনে করছে অনেকে।
৪। বাংলাদেশের ওপর নজরদারি:
বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর ওপর মানবাধিকার, গণতন্ত্রের আগ্রহ হয় এবং নাক গলায়। এই ধারায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্য প্রভাব ইত্যাদি বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
৫। মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করা হবে:
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে একটি নতুন কৌশলে এগোচ্ছে। তাহলো ইসরায়েলকে ইসলামিক দেশগুলো যে স্বীকৃতি দেয় সেদিকে তারা নীরবে কাজ করছে। ট্রাম্পের যে এই কুটনীতিতে ডেমোক্রেটরা পরিবর্তন করবে বলে মনে হয় না।
সেই ধারায় মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে বাংলাদেশের যে নীরব অবস্থান সে নীরব অবস্থান সে নীরব অবস্থান নিয়ে বাংলাদেশকে একটি অবস্থান গ্রহণের জন্য বাইডেন-হ্যারিস এক ধরনের প্রচ্ছন্ন চাপ সৃস্টি করতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
তবে অনেকেই মনে করছেন যে বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে সম্পর্ক,সে সম্পর্কটির ক্ষেত্রে কোন টানাপড়েন সৃষ্টি হবে না। বাংলাদেশ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিছু কিছু ক্ষেত্রে আগের চেয়ে আরও ঘনিষ্ঠ অবস্থানে যাবে।
বাংলা ইনসাইডার