ফখরুল ভাই, ‘আপনারা তো বাচ্চাদের মতো বায়না ধরছেন’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানতে চাইলেন, ‘আপনারা নির্বাচনে সেনা মোতায়েন চান অথচ বেগম জিয়ার চিকিৎসা সিএমএইচ এ করাতে চান না কেন?‘ আজ বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিএনপি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি এই প্রশ্ন করেন।

বিকেল সাড়ে তিনটায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাঁর বাম হাত এবং বাম পা অবশ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি হাত পা নাড়তে পারছেন না।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁদের কারাগারে বেগম জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট দেখিয়ে বলেন, ‘আপনাদের অভিযোগ সত্য নয়। কোথায় থেকে এসব তথ্য পেয়েছেন তাও জানি না। বেগম জিয়া সুস্থ আছেন। প্রতিদিন কারাগারে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হচ্ছে। তেমন কিছু হলে আমরাই তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যেখানে প্রয়োজন সেখানেই নেবো।’

এসময় মির্জা ফখরুল কারাগারে দলীয় চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাতের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বলেন, ‘তখনো তিনি অসুস্থ ছিলেন।’ এসময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঠাট্টা করে বলেন, ‘এই বয়সে এরকম একটু আধটু অসুখ বিসুখ সবারই হয়। আপনিও তো অসুস্থ। তাহলে আপনি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন না কেন?’ এসময় মির্জা আব্বাস বেগম জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘এটা কারাগারে সম্ভব না। ইউনাইটেড হাসপাতাল বা এরকম একটি বিশেষায়িত হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা করা প্রয়োজন।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে সব থেকে ভালো বিশেষায়িত হাসপাতাল হলো ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়।’ আমিও সেখানে চিকিৎসা নিই। সব দেশ সেরা চিকিৎসকরা সেখানে। আপনারদের নেতারাও সেখানে আছেন।’ আপনারা চাইলে আমি এখনই বলে দেই, ওনাকে যেন বঙ্গবন্ধুতে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়। এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, ‘না ম্যাডাম বঙ্গবন্ধুতে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাবেন না।’

এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘উনি তো সারা জীবনই সম্মিলিত সামরিক বাহিনীর হাসপাতালেই চিকিৎসা করাতেন। উনি তো সাবেক সেনাপ্রধানের স্ত্রী। ওখানে ব্যবস্থা করি।’ বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘না, ওখানেও উনি চান না।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবার হেসে বলেন, ‘ফখরুল ভাই, একটু যুক্তির কথা বলুন। আপনার তো বাচ্চাদের মতো বায়না ধরছেন।’

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব ছাড়াও ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা আব্বাস, ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, রফিকুল ইসলাম মিয়া এবং ড. মঈন খান উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একটি মেডিকেল বোর্ড গঠনের মাধ্যমে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রস্তাব দিলে বিএনপি নেতারা তাতে রাজি হন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি চিকিৎসক এবং বিএনপির তরফ থেকে যে সব চিকিৎসকদের নাম দেওয়া হবে, তাদের নিয়ে যৌথভাবে একটি মেডিকেল বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin