ফখরুলের পদত্যাগপত্র কার কাছে?

বিএনপির মধ্যে জোর গুঞ্জন যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহাসচিব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু তার পদত্যাগপত্র গৃহীত হয়েছে এরকম কোন তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তেমনি পদত্যাগের পর কি হবে সে সম্পর্কে কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, দলের মধ্যে একের পর এক সমালোচনা এবং শীর্ষ নেতাদের অসহযোগিতার কারণে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। আগষ্টের শেষ সপ্তাহে তিনি লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক জিয়ার কাছে জানান, তিনি আর দায়িত্ব পালন করতে চান না।

এর মধ্যে তারেক জিয়াও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে সরিয়ে নতুন কাউকে মহাসচিব করার পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন। কিন্তু মহাসচিব করার ক্ষেত্রে তারেকের পছন্দের যে সমস্ত ব্যক্তিরা আছে তাদের কেউই এখন মহাসচিব পদের দায়িত্ব গ্রহণ করতে রাজি নয়।

সে সময় তার বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিল যে, মার্চ নাগাত বিএনপির নতুন কাউন্সিলে মাধ্যেমে নতুন মহাসচিব নিয়োগ করা। কিন্তু এর মধ্যে দুফা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ডাকার চেষ্টা করে কিন্তু দলের স্থায়ী কমিটির অধিকাংশ সদস্যই মির্জা ফখরুল ইসলামের নেতৃত্বে এ ধরনের বৈঠকে অংশগ্রহণ করতে অসম্মতি জানান।

এর মধ্যে মনোনয়ন বোর্ডের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং সেই সভায় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মধ্যে মাত্র পাঁচজন উপস্থিত ছিল। এবং বিএনপির একাধিক সিনিয়র নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে কাজ করতে অসঙ্গতি জানিয়েছেন। এরমধ্যে বেগম খালেদা জিয়ার কাছে লিখিত চিঠি দিয়েছে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বেগম খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হওয়ার পরও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব দেখাচ্ছে। যদিও বেগম জিয়ার সঙ্গে বিএনপি নেতারা দেখা সাক্ষাৎ করতে পারছেনা । দুটি ঈদে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে শুধুমাত্র স্থায়ী কমিটির সদস্যরা সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছে।

কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তার দুই নিকটাত্মীয় তার ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার এবং বোন সেলিনা ইসলাম তাদের কাছে মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছেন।

সর্বশেষ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তারেক জিয়াকে পদত্যাগপত্র দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব দলের নতুন মহাসচিব নেয়ার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু তারেক জিয়া তাকে নতুন মহাসচিব না নেওয়া পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন।

এই অনুরোধেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কাজ করছেন । সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, মির্জা ফখরুল ইসলাম তার ঘনিষ্টজনদের বলেছেন, দলের সিনিয়র নেতাদের অসহযোগিতার ফলে তিনি দল গোছাতে পারছেন না এবং দলকে আন্দোলন মুখিও করতে পারছেন না।

একাধিক সূত্র বলছে, যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর করোনার পর নতুন করে সংগঠনটির তৎপরতা শুরু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দলের সিনিয়র নেতারা এতে সায় দেয়নি। বিএনপির যে বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের জেলা উপজেলার যে কমিটি গুলো হচ্ছে সেকমিটি গুলো মির্জা ফখরুল সহযোগিতা চেয়ে ছিলেন দলের নেতাদের কাছে। সেখানেও সহযোগিতা করা হয়নি।

এমনকি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের অজান্তেই অনেক জায়গায় কমিটি করেছেন তারেক জিয়া। এগুলো নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অসন্তুষ্ট এবং এর বাস্তবতায় তিনি আর দায়িত্ব নিতে চাননা। অবশ্য ফখরুলের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ এবং নতুন মহাসচিব নিয়োগ দেয়া দরকার।  

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সর্বশেষ স্থায়ী কমিটির সভায় যেখানে পাবনা ৪ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে সেখানে তিনি বলেছেন যে, এভাবে মহাসচিবের দায়িত্ব আমি পালন করতে চাইনা। সেই সূত্র ধরেই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সরে যাওয়া নিয়ে বিএনপিতে গুঞ্জন চলছে তবে এখন পর্যন্ত এ গুঞ্জন বাস্তবতা পায়নি।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin