moududh

প্রধান বিচারপতিকে জোর করে পদত্যাগ করানো হয়েছে : মওদুদ

প্রধান বিচারপতির পদত্যাগে গোটা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতিকে ছুটি নিতে সরকার বাধ্য করেছে। এতে করে বিচারবিভাগের যে স্বাধীনতা ছিল এই সরকার নস্যাত করেছে করেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

আজ শনিবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এই সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দল। সভায় আরো বক্তব্য রাখেন আহমেদ আযম খান, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন হুমায়ুন কবির বেপারি।

মওদুদ আহমদ বলেন, আজকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নাকি পদত্যাগ করেছেন! যা বিচারবিভাগের ও অাদালতের স্বাধীনতার জন্য কলঙ্কের দিন। তাকে জোর করে পদত্যাগ করানো হয়েছে। বিচারবিভাগের যে সামান্য স্বাধিনতা ছিল এই সরকার তা নস্যাৎ করে দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ষোড়শ সংশোধনীর রায় সরকারের বিপক্ষে গেছে বলেই এ ঘটনা ঘটলো। দেশের সর্বোচ্চ রায়ের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে তারা এসব করলো। অথচ সরকার রিভিউ আবেদন করতে পারতো। তারা সমন্বিতভাবে সিনহাকে ব্যাক্তিগতভাবে আক্রমণ করে প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি করল।

সাবেক এই আইনমন্ত্রী বলেন, বিচারবিভাগের স্বাধীনতার ও ঐতিহ্য নিয়ে আমরা যে গর্ববোধ করতাম তা আর থাকলোনা। এসকে সিনহার পদত্যাগের মধ্যদিয়ে সরকারের কোনো লাভ হলো কিনা জানিনা তবে গোটা জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হলো। বিচার বিভাগের মান আমরা উদ্ধার করতে পারবো কিনা সন্দেহ আছে।

মওদুদ বলেন, বেগম জিয়া লন্ডনে একান্ত ব্যাক্তিগতভাবে চিকিৎসার জন্য গেছিলেন। কিন্তু তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট ইস্যু করল। কিন্তু দেশে ফিরে তিনি আদালতে হাজিরা দিয়ে তো সাপ্তাহিক জামিন পেলেন। বিষয়টি কেমন হলো? ৫০ বছরের আইন পেশায় আমি এ ধরনের ঘটনা শুনিনি। এটা করে নেত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। প্রমাণিত হয় যে আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলছে। সাপ্তাহিক জামিন দেয়ার বিষয়টি অশোভনীয় আচরণ। আসলে বিচার বিভাগের স্বাধিনতা নেই।

নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই। এটা ফিরিয়ে আনতে হবে। তা না হলে সুষ্ঠু ভোট হবেনা। নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবেনা। আমরা বিপুল ভোটে জয়ী হবো।

রাষ্ট্রপতির হাতে প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র

বিদেশে অবস্থানরত প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগ করেছেন।

শনিবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে সিঙ্গাপুর থেকে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের কাছে পাঠানো পদত্যাগপত্রটি বঙ্গভবনে পৌঁছেছে বলে গণম্যামকে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব।

এর আগে শুক্রবার সকালে সিঙ্গাপুর থেকে কানাডা যাওয়ার আগে তিনি পদত্যাগপত্রে সই করেছেন বলে তার ছোট ভাই নরেন্দ্র কুমার সিনহা শুক্রবার রাতে বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন।

এর আগে ১৩ অক্টোবর রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি সিনহা। ওই দিন মিডিয়ার সামনে তিনি বলেন, ‘আমি অসুস্থ না। আমি পালিয়েও যাচ্ছি না। আমি আবার ফিরে আসব। আমি একটু বিব্রত। আমি বিচার বিভাগের অভিভাবক। বিচার বিভাগের স্বার্থে, বিচার বিভাগটা যাতে কলুষিত না হয়, এ কারণেই আমি সাময়িকভাবে যাচ্ছি।’

অস্ট্রেলিয়ায় তার বড় মেয়ে সূচনা সিনহার বাসায় বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন এসকে সিনহা। এরপর তিনি চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ক্যান্সার ইন্সটিটিউটে যান। সেখানে ৪ দিন চিকিৎসা শেষে তার দেশে ফেরার কথা ছিল।

জানা গেছে, সিনহা শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় সিঙ্গাপুরের চেঙ্গি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চায়না-সাউথার্ন এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কানাডার উদ্দেশে রওনা দেন। কানাডায় তার ছোট মেয়ে বসবাস করছেন। এর আগে শুক্রবার রাতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ছুটির মেয়াদ না বাড়ানোর ফলে শনিবার থেকে তিনি অনুপস্থিত হিসেবে গণ্য হবেন। এক্ষেত্রে সংবিধানের ৯৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী যিনি কর্মে প্রবীণ তিনিই অনুরূপ কার্যভার পালন করবেন।

উৎসঃ   dailynayadiganta

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin