নারীর সম্ভ্রমহানিকে নিজেদের ‘অধিকার’ মনে করছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ

ছাত্রলীগ-যুবলীগের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকাকে শেখ হাসিনা যেমন নিজের অধিকার মনে করে, ঠিক তেমনি নারীর ওপর নির্যাতন করা, তাদের সম্ভ্রমহানি করা নিজেদের অধিকার মনে করছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ।

তিনি বলেন, নারী নির্যাতন করার জন্য গত পরশু ঢাকায় ছাত্রলীগের মহানগরের সহ-সভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এত ঘটনার পরও গতকাল আবারও সিলেটে আরেকজন নারীকে লাঞ্ছনা করা হয়েছে। কে করেছে ছাত্রলীগের নেতা। তার মানে তারা উদ্বুদ্ধ তারা প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ।

তারা জানে যে, আমাদের সরকার বিনা ভোটে সরকার গঠন করেছে। ভোট ছাড়া ক্ষমতায় থাকাকে শেখ হাসিনা যেমন নিজের অধিকার মনে করে, ঠিক তেমনি নারীর ওপর নির্যাতন করা তাদের সম্ভ্রমহানি করা নিজেদের অধিকার মনে করছে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। ওরা দেশ থেকে টাকা পাচার করাও নিজেদের অধিকার মনে করছে।

রোববার (৪ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আয়োজিত ধর্ষণবিরোধী এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন রিজভী আহমেদ। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি সাইফুল ইসলাম।

রিজভী আহমেদ বলেন, সরকার চেষ্টা করছে একটি ঘটনাকে আরেকটি ঘটনা দিয়ে আড়াল করার। তনুকে সম্ভ্রমহানি করার পর হত্যা করা হয়েছিল। সেটিকে আড়াল করা হয়েছিল মিতুর ঘটনা দিয়ে।

মিতুর ঘটনাকে আড়াল করা হয়েছিল ত্বকীকে হত্যার মধ্য দিয়ে। আর ত্বকির ঘটনাকে ধামাচাপা দেয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, একটার পর একটা ঘটনা ঘটলেও সরকারের টনক নড়েনি।

বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, যে সরকার নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিতভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করে, যে দলের আদর্শ হচ্ছে নৈতিকতাবিরোধী, নীতিবিরোধী; তাদের সোনার ছেলেরা তো এই সমস্ত অপকর্ম করবেই। রিজভী বলেন, যে দল নীতি-নৈতিকতা মানে না তার সন্তানেরা কি নীতি-নৈতিকতা মানবে? তারা মানবে না। তাদের কাছে লুটপাট, নারীর সম্ভ্রমহানি হচ্ছে ডাল-ভাত এবং তারা সেটাই করছে। যার দল যাদের মুরুব্বিরা নীতি-নৈতিকতা মানে না তারা কেন মানবে।

মানুষের পাশে কেউ নেই। একমাত্র আওয়ামী লীগ আছে। গতকয়েক দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেয়া এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এই যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে আছে করোনায় যে ত্রাণ দেয়া হয়েছে সেই ত্রাণ আত্মসাতের জন্য। সেই ত্রাণ পাওয়া যায় আওয়ামী লীগ নেতার খাটের নিচ থেকে, মাটির ভেতর থেকে। এই কারণেই আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে আছে।

ছাত্রলীগ-যুবলীগের ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান রিজভী আহমেদ।

তিনি বলেন, আপনাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। গ্রামে গ্রামে পাড়ায় পাড়ায় তাদের বিরুদ্ধে কমিটি গঠন করতে হবে। ছাত্রলীগ-যুবলীগের হাত থেকে মা-বোনকে বাচানোর জন্য সবাইকে আজকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যের ইশারায় আজকে আওয়ামী লীগ স্বাধীন দেশকে দখল করে অনাচার করছে, লুটপাট করছে, নারীর সম্ভ্রমহানি করছে। তাই জনগণের রক্ত ছাড়া জনগণের ব্যারিকেড ছাড়া মানুষের মুক্তি নেই।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin