al_photo

নাগরিক সমাবেশের মাধ্যমে নির্বাচনী শোডাউন দিতে চায় আ. লীগ

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণটি ইউনেস্কো কর্তৃক স্বীকৃতি লাভ করেছে। এই উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগাম শোডাউন দিতে চায় ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। বৃহৎ জনসমাবেশের মাধ্যমে সাংগঠনিক শক্তিও দেখাতে চায় ক্ষমতীনরা। এজন্যে ইতোমধ্যে দলের পক্ষ থেকে সকল ধরণের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। একই সাথে নিজেদের জনপ্রিয়তাও যাচাই করে নিতে চাইছে দলটি। তাই অনেকেই মনে করছেন বিএনপির গত ১২ নভেম্বরের সমাবেশের পাল্টা সমাবেশ এটা। তবে দলের পক্ষ থেকে একথা প্রকাশ না কারলেও দলের নেতাদের বক্তব্যে এমনটাই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের গত বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে মহিলা আওয়ামী লীগের এক আলোচনা সভায় বক্তব্যে এমন আভাস পাওয়া যায়। যদিও তিনি এই সমাবেশকে বিএনপির পাল্টা সমাবেশ বলছেন না। তিনি বলেছিলেন, ‘আগামী ১৮ই নভেম্বরের নাগরিক সমাবেশে জনমতের প্রতিফলন গঠবে। যেভাবে চারদিক থেকে সাড়া পারছে তাতে মনে হচ্ছে সমাবেশটি একটি জনসমুদ্রে পরিণত হবে। নাগরিক সমাবেশটি হবে সর্বকালের সেরা সমাবেশ।’

আগামীকাল শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নাগরিক সমাবেশ শুরু হবে। এ সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দেয়ায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনেস্কোর কান্ট্রি ডিরেক্টর বিট্রিস কালদুলের হাতে একটি ধন্যবাদ প্রস্তাব হস্তান্তর করা হবে।

সমাবেশে বক্তব্য দিবেন- নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. জাফর ইকবাল প্রমুখ। ‌এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী আবদুল আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করবেন কবি নির্মলেন্দু গুণ ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে শিল্পকলা একাডেমির সমবেত সংগীতের পর শুরু হবে একক সংগীত। কিরণ চন্দ্র রায়ের স্ত্রী চন্দনা মজুমদার লোকগান পরিবেশন করবেন। রবীন্দ্র সংগীত পরিবেশন করবেন সংসদ উপনেতা সাজেদা চৌধুরীর ছেলে শিল্পী সাজেদ আকবর।এদিকে সমাবেশকে সামনে রেখে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের এনে বিশাল শোডাউন দিতে বার্তা দেয়া হয়েছে প্রতি ইউনিটে।

সেই সাথে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোকে বিশেষ বার্তা দেয়া হয়েছে।সমাবেশকে সফল করার জন্য গত বুধবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকার এমপি ও নগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে বৈঠক করেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার বর্ধিত সভা করা হয় সমাবেশ করা হয়।

সেখানে সমাবেশ সফল করাসহ নেতাকর্মীদের অংশ গ্রহণ নিশ্চিত করতে। এ ছাড়া শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) এ উপলক্ষে বর্ধিত সভা করেছে যুবলীগ।এবিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘আমরা আশা করি বিশাল জনসমাগম হবে। নাগরিক সমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে আমরা এই সমাবেশে অংশগ্রহণ করব।

প্রত্যেক ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা থেকেও নেতাকর্মীরা সমাবেশে অংশ নিবেন।’আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে। তারাই সব ধরণের আয়োজন করছে। যেহেতু আমাদের দলের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি তাই আমরা সমাবেশে অংশগ্রহণ করব।’

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘এটা বিএনপির সাথে কোন পাল্টা সমাবেশ না। এটা নাগরিক সমাবেশ। আমরা আশা করি এই সমাবেশে বিশাল জনসমাগম হবে।’এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশস্থলে শেষ মুহূর্তের সাজসজ্জার প্রস্তুতি চলছে।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে মূল মঞ্চ সাজানোসহ পুরো এলাকার সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে চলছে নানা ধরণের তৎপরতা। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের রমনা সংলগ্ন ফটক দিয়ে সমাবেশের অতিথিদের যাতায়াতের রাস্তা সাজানো হয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের উল্লেখযোগ্য বক্তব্যগুলো দিয়ে। এছাড়া তার বক্তব্য দিয়ে তৈরি করা হয়েছে ছোট ছোট তোরণ।

শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) নাগরিক সমাবেশ স্থল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শনে এসে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এটা বিএনপির পাল্টা কোন সমাবেশ না। আমরা বিএনপির সাথে পাল্টাপাল্টি করি না। বিএনপি প্রয়োজন মনে করলে পাল্টাপাল্টি করবে, সেটা তাদের ব্যাপার।

আওয়ামী লীগ বিএনপির সাথে রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে কখনও পাল্টাপাল্টি করেনা।’সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা এটা পাল্টাপাল্টি ভাববেন কেন? আমরা এমন মনে করি না। এটা ৭ই মার্চের স্বীকৃতির সেলিব্রেশন। ৭ই মার্চ কেবল আওয়ামী লীগের সমাবেশ ছিল না। তেমনি কালকের সমাবেশেও সবাই আসবে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সবাই আসবে ‘

ব্রেকিংনিউজ

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin