দীর্ঘদিন ক্ষমতায় বাইরে থাকার ফলে দলীয় কোন্দল ও উপনির্বাচন-স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ভরাড়ুবি এবং সাংগঠনিক দুর্বলতাসহ নানবিধ চাপে জর্জরিত বিএনপি। এই অবস্থায় সারাদেশে নেই কোনো সাংগঠনিক তৎপরতা আর দলীয় নোতকর্মীরা অনেকটাই সামাজিক মাধ্যম নির্ভর হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে অনেক নেতাকর্মী সমঝোতার মাধ্যমে গা বাচিঁয়ে চলার নীতি নিয়েছে।
এই অবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে দলটিতে নেই কোনো সরকারবিরোধী তৎপরতা। এতে করে দলীয় নোতাকর্মীরা অনেকটা রাজনৈতিক চাপমুক্ত ছিলো। কিন্তু ঢাকা-১৮ আসনের নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থীর পরাজয়ের পর হঠাৎ করেই ঢাকা শহরে বেশ কয়েটি বাসে আগুন লাগানো হয়েছে। এতে নতুন করে চাপে পড়েছে গা বাঁচিয়ে চলা নেতাকর্মীরা। বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্যদিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ইতিমধ্যে ধরপাকড় শুরু করেছে।
বাসে আগুনের ঘটনায় প্রধান দুই দল পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করলেও বিএনপির ১ হাজার ৪৭৮ জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নতুন করে ১৬টি মামলা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে অসংখ্য। বাসে কারা আগুন দিল সে ঘটনা এখনো রহস্যময়। তবে বিএনপির মধ্যম সারির নেতাদের মধ্যে গ্রেফতার আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ভোট উৎসবে মাঠে থাকলেও ঢাকা মহানগর বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা আবারও আত্মগোপনে চলে গেছেন। অনেকেই মোবাইল ফোন বন্ধ করে বাসাবাড়ি ছেড়ে দিয়েছেন। এরই মধ্যে অর্ধশত নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ও নির্বাচনের ভবিষ্যৎ অনেকটাই অনিশ্চিত। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যেও হতাশা বিরাজ করছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন। তার দেশে ফেরা অনেকটা অনিশ্চিত। এ অবস্থায় দলের মধ্যে এক ধরনের নেতৃত্বশূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে।
বিএনপি চাপে আছে কি না এমন প্রশ্নে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘চাপে আছে ঠিক বলা যাবে না। তবে এত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা-হামলা, গুম-খুনে নেতা-কর্মীরা প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করছে। এর পরও বিএনপি এখন দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও শক্তিশালী রাজনৈতিক দল। দলে নেতৃত্বশূন্যতার সৃষ্টি হয়নি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও আমরা স্থায়ী কমিটিসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে পরামর্শ করেই দল পরিচালনা করছি।
বাসে আগুন দেয়ার বিষয়ে বিএনপির দফতরের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বাসে আগুন দেয়ার মামলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে থেকেও আসামি করা হয়েছে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, নূরুল ইসলাম নয়ন ও আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলসহ বেশ কয়েকজনকে।
আবার পঙ্গুত্ব বরণ করে দীর্ঘদিন বাসায় থেকেও বাস পোড়ানো মামলার আসামি হয়েছেন যুবদলের সহসভাপতি জাকারিয়া মঞ্জুর। যুবদলের আরেক সহসভাপতি জাকির হোসেন সিদ্দিকীও বেশ কয়েক দিন আগে পুলিশি হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থেকেও বাসে আগুনের মামলার আসামি হয়েছেন।
বাংলা ইনসাইডার