বিডিআর সদরদপ্তর পিলখানায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলায় জজ আদালত দুইজন রাজনৈতিক নেতাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা তোরাব আলী আজ হাইকোর্টের দেয়া রায়ে খালাস পেয়েছেন।
এ মামলায় বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু ও আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড নেতা তোরাব আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো পাঁচ বছর কারাদণ্ড দিয়েছিল জজ আদালত।
তাদের মধ্যে পিন্টু ২০১৫ সালের ৩ মে রাজশাহী কারাগারে থাকা অবস্থায় হৃদরোগে মারা যান। আর তোরাব আলীকে আজ হাইকোর্টের রায়ে খালাস দেয়া হয়েছে। আজ বিচারপতি মো: শওকত হোসেনের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ বহুল আলোচিত এ মামলার আপিল রায় ঘোষণা করে।
ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো: ড. আখতারুজ্জামানের আদালত ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর এ মামলার রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। আসামি সংখ্যার দিক দিয়ে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এ মামলায় হাইকোর্টের রায়ে ১৩৯ জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। ২২৮ জনের তিন থেকে ১০ বছরের সাজা হয়েছে এবং খালাস পেয়েছেন মোট ২৮৮ জন।
তাদের মধ্যে বিএনপির ঢাকা মহানগরের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু। তিনি একজন সাবেক সংসদ সদস্য। দীর্ঘদিন কারাগারে থেকে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে কারাগারে হৃদরোগে মারা যান।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সভাপতি তোরাব আলীকেও জজ আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরো পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল। আপিল শুনানি করে হাইকোর্ট আজ তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছে।
২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর সদরদপ্তরে বিদ্রোহের ওই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই হত্যাকাণ্ডে সহায়তার অভিযোগে তোরাব আলীকে ৩০২ ধারায় সাজা দিয়েছিলেন জজ আদালতের বিচারক।
তোরাব আলীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগে বলা হয়েছিল, বিডিআরের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে তিনি সুপরিকল্পিত এ বিদ্রোহের কথা আগেই জানতে পারেন। কিন্তু তিনি তা কর্তৃপক্ষকে জানাননি।
জজ আদালতের রায়ে এ মামলায় বাহিনীর বাইরে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল জজ আদালত। তিনি পিলখানার পাশের এলাকার বাসিন্দা নায়েক সুবেদার (অব.) কাঞ্চন আলীর ছেলে জাকির হোসেন। হাইকোর্টের রায়ে জাকিরের সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।
এ বিষয়ে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের অন্যতম আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সারওয়ার কাজল বলেন, জাকির হোসেন ও তোরাব আলীর বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে আমি নোট দেব। বাকিদের বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় দেখে আপিলের বিষয়ে মতামত দেয়া হবে।
dailynayadiganta