al_somabesh_005

তিল ধারণের ঠাঁই নেই – জয় বাংলা স্লোগানে মুখরিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

‘জয় বাংলা, বাংলার জয়…’। ব্যান্ডের তালের সঙ্গে এগিয়ে চলেছে মিছিল। তাদের মুখে মুখে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান। কেউ লাল কেউ সবুজ আবার কেউবা নীল রংয়ের গেঞ্জি ও টুপি পরে এসেছেন। তাদের কেউ এসেছেন ঢাকার বাইরে থেকে আবার কেউবা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার। সবার গন্তব্য ঐতিহাসিক শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক সমাবেশ।

শনিবার দুপুর আড়াইটায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরুর কথা থাকলেও সকাল ১০টার পর থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল আসতে থাকে উদ্যানে। বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে ছোট বড় বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলে আগতদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। দুপুর ২টার মধ্যে ঢাবির মহসিন হল মাঠসহ রাস্তাঘাট যানবাহন স্ট্যান্ডে পরিণত হয়।

সরজমিনে দেখা গেছে, সমাবেশের কারণে দুপুর ২টার আগেই ঢাবির আশেপাশে যানজট সৃষ্টি হয়। ঢাবি ক্যাম্পাসে কর্তব্যরত আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা রাস্তায় যানবাহন রেখে যানজটের সৃষ্টি যেন না হয় সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাবেশে যোগ দেয়া নেতাকর্মীদের বাসসহ যানবাহন ঢাবি ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে পর্যন্ত ঠেকেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল (ওয়ার্ল্ডস ডকুমেন্টারি হেরিটেজ) হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় সোহরাওয়ার্দীর নাগরিক সমাবেশে আসা নেতাকর্মীদের মধ্যে ৭০ বছরের বৃদ্ধ থেকে পাঁচ বছরের ছোট্ট শিশুদেরও দেখা গেছে। সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ধামরাই থেকে আগত স্বপন নামের এক তরুণ বলেন, ১৯৭১ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ বাবার মুখে শুনেছি, আজ তার সুযোগ্য কন্যার মুখে একই স্থানে ভাষণ শুনে ইতিহাসের সাক্ষী হতে এসেছি। তার মতো হাজারও তরুণ ৪৬ বছর পর ঐতিহাসিক সমাবেশের সাক্ষী হতে এসেছেন বলে জানা গেছে।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণের ইউনেস্কো স্বীকৃতি উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের নাগরিক সমাবেশে যোগ দিয়েছেন বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী।

শনিবার বেলা দুইটায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়। এর ৪০৪ মিনিট পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে আসেন। এ সময় নেতাকর্মীরা সমস্বরে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান। তিনিও হাত নেড়ে শুভেচ্ছার জবাব দেন। স্লোগানে স্লোগানে গোটা সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মুখরিত হয়ে ওঠে।

সমাবেশস্থলে তিল ধারণের জায়গা নেই। যেদিকে চোখ যায়, মানুষ আর মানুষ। সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ছাপিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় হাজারো নেতাকর্মী অবস্থান নিয়েছেন।

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়েছিলেন। সেদিন যারা এখানে সমবেত হয়েছিলেন, তাদের যারা বেচে আছেন তারাও এসেছেন।

আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, আ স ম আব্দুর রব, নূরে আলম সিদ্দিকী, শাজাহান সিরাজ, খালেদ মোহাম্মদ আলি, গোলাম সারোয়ার কামরুল আলম খান খসরু এবং আরও অনেকে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ এই উদ্যানে এসেছিলেন বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনতে। তারা আজও ইতিহাসের সাক্ষী হতে উপস্থিত হয়েছেন।

উৎসঃ   poriborton

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin