জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান মিন্টুকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে প্রেসক্লাব থেকে যাওয়ার পথে পুরানা পল্টন এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির ক্রিয়া বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ মাহমুদ।
তিনি বলেন, প্রেসক্লাবে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ছাত্র ফোরামের একটি অনুষ্ঠান অংশগ্রহণ শেষে ফেরার পথে পল্টন মোড়ে ডিবি পুলিশ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদককে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারের পর প্রথম পুরানা পল্টন পুলিশ বক্সে নেয়ার পর তাকে মতিঝিল থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। সংগঠনটির সহ-সভাপতি মামুন বিল্লাহ জানান, যতদূর শুনেছি আকরামকে পল্টন থানায় নেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্টন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হক জানিয়েছেন, মতিঝিল থানার একটি মামলায় তার নামে আদালত থেকে অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট বের হয়। সে কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে মতিঝিল থানা পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে খালেদা জিয়াকে হয়রানি করছেন বিচারক: রিজভী
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই বিচারক বেগম খালেদা জিয়াকে প্রতি সপ্তাহে আদালতে নেয়ার মাধ্যমে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ‘ তারেক রহমানের ৫৩ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে নির্মিত ভিডিও গানের প্রকাশনা ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আদালতকে কি সরকার নির্দেশ দিয়ে সাইলেন্ট কিলারের ভূমিকায় নামাচ্ছে, ‘যে তোমরা বিরোধী দলকে নিচ্ছিন্ন করার জন্য কাজ করো’।
রিজভী আরো বলেন, বিচারের প্রক্রিয়া যদি এই ধারায় চলতে থাকে, আদালতে যদি ন্যায় বিচার না হয়, আদালত যদি শেখ হাসিনার কথায় চলতে থাকে তাহলে ওই সকল বিচারকদের জনগণের আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ হলো, একটি ছেলে জাতীয়তাবাদের চেতনা নিয়ে হাটি হাটি পা পা করে এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী এটা সহ্য করতে পারছেন না। যার কারণে তাদের ক্ষোভের শিকার হয়েছেন তারেক রহমান।
তারেক রহমান শুধুমাত্র মঈনুদ্দিন- ফখরুলের মাধ্যমে নয়, শেখ হাসিনার দ্বারাও ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন বলেও জানান তিনি।
যৌথভাবে এর আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম।
বিজেপির চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরামের প্রধান উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ’র সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবু, আইন বিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ,গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির প্রমুখ।
দুর্দিনে ভারত মিয়ানমারের পক্ষে, বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়ালো পাকিস্তান
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের থার্ড কমিটিতে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে। এতে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর অভিযান বন্ধ, তাদের নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং নাগরিকত্ব দেয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক সময় সকালে ভোটাভুটির পর এই প্রস্তাব গৃহীত হয়। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ১৯৩ সদস্যে মধ্যে ১৭১ সদস্য বৈঠকে উপস্থিত, এবং ২২টি দেশ অনুপস্থিত ছিল।
ভোটাভুটিতে অংশ নেয়া ১৩৫টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ১০টি দেশ। আর উপস্থিত থেকেও কোনো পক্ষেই ভোট দেয়নি ২৬টি দেশ। এর অর্থ, বিরত থাকা দেশগুলো মিয়ানমারের গণহত্যাকে সমর্থন করে। কিন্তু বিভিন্ন কারণে চক্ষু লজ্জায় সরাসরি সেটার সাফাই গাইতে পারছে না। তাই মিয়ানমারের বিপক্ষে দাঁড়ানো থেকে বিরত থেকেছে।
বিপক্ষে ভোট দেয়া ১০টি দেশ হলো- রাশিয়া, চীন, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মিয়ানমার, সিরিয়া, জিম্বাবুয়ে, কম্বোডিয়া, লাউস এবং বেলারুশ।
এছাড়া মিয়ানমারের বিপক্ষে ভোট দেয়া থেকে বিরত ছিল বাংলাদেশের প্রতিবেশি ভারত, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা। সার্কভূক্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষে ভোট দিয়েছে পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও মালদ্বীপ।
আওয়ামী লীগ সরকারের কাছ থেকে বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে আমরা এতদিন ভারতকে চিনেছি। কিন্তু প্রয়োজনের সময় হিন্দুত্ববাদী ভারত মুসলমানের দেশ বাংলাদেশের বিপক্ষেই দাঁড়ালো। আর পাকিস্তানই দাঁড়ালো বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতিসংঘে প্রস্তাব পাস, মিয়ানমারের পক্ষে মাত্র ১০ ভোট
জাতিসংঘের এজেন্ডা নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে রোহিঙ্গা ইস্যু গৃহীত হয়েছে। এতে ভোটাভুটির মাধ্যমে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান বন্ধের প্রস্তাব পাস করেছে সদস্য রাষ্ট্রগুলো। প্রস্তাবের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেনসহ ১৩৫টি দেশ ভোট দিয়েছে। বিপক্ষে ভোট দিয়েছে চীন, রাশিয়াসহ ১০টি দেশ। তবে ভোট দানে বিরত থেকেছে ভারতসহ ২৬টি দেশ।
.
বৈঠকে রোহিঙ্গাদের ওপর সামরিক অভিযান বন্ধে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে আহবান জানানো হয়। সেইসাথে দেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে আসার এবং এবং তাদের পূর্ণ নাগরিকত্বের অধিকার নিশ্চিত করার বিষয়েও গুরুত্বারোপ করা হয়।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে ৫৭ মুসলিম দেশের সংগঠন ওআইসির আহবানে এ ভোটাভুটি অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ পরিষদের মানবাধিকার কমিটি এ ভোটাভুটি অনুমোদন করে।
এতে মিয়ানমারের ঘনিষ্ট প্রতিবেশী চীন, সেইসাথে রাশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও লাওসসহ ১০টি দেশ বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে জড়িয়ে পড়া বাংলাদেশের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে দেশটির ঘনিষ্ট মিত্র ভারত। সেইসাথে দক্ষিণ এশিয়ার নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ ২৬টি দেশ এ ভোটাভুটিতে নিজের অবস্থান জানাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। রাখাইনে গণহত্যার শুরু থেকে ভারত সরকার এ ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে আছে দাবি করা হলেও এ ভোটাভুটিতে তারা অংশ নেওয়ায় বিরত থাকে।
উল্লেখ্য, গত ২৫ আগস্ট রাখাইনের রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের হামলার পর মিয়ানমার সেনাবাহিনী সেখানে জাতিগত নিধন শুরু করে। তাদের সাথে যোগ দেয় স্থানীয় উগ্রবাদী বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী। নির্বিচারে হত্যা, গণধর্ষণ, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিদগ্ধের শিকার হয়ে প্রায় ৬ লাখ ২০ হাজারের মত রোহিঙ্গা পার্শ্ববর্তী দেশ বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। আক্রান্ত এ সব মানুষকে আশ্রয় দিতে বাংলাদেশ সরকার দেশটির সীমান্ত খুলে দেয় এবং তাদের পাশে দাঁড়ায়।
সূত্র: onlinedesk24