গ্রেনেড হামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা খারিজ

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলার ঘটনায় মদদদাতা হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে আসামি করে যে মামলা করা হয়েছে তা খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাসের আদালতে এ মামলা করেন বাংলাদেশ জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলা গ্রহণ করার মতো পর্যাপ্ত উপাদান না থাকায় খারিজ করে দেন।

মামলার বাদী এ বি সিদ্দিকী বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।

মামলায় সাক্ষী করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ সদস্য শেখ সেলিম, শেখ হেলাল, হাজি মো. মাহবুব আব্দুল্লাহকে।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের জনসভায় ওই সময়ের বিরোধীদলীয় নেত্রী আওয়ামী লীগের সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনাকারী ও হুকুমদাতা। বাদীর দৃষ্টিতে ঘটনার প্রধান আসামি হচ্ছেন বেগম খালেদা জিয়া। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে থলের বিড়াল বের হয়ে এসেছে। খালেদা জিয়া পরিকল্পনা করেছিলেন।

মেজর জিয়াউর রহমান যেভাবে আড়ালে থেকে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিলেন, তারপরও তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার আসামি হননি। বেগম খালেদা জিয়াও তার স্বামীকে ফলো করে আড়ালে থেকে জঙ্গিবাদী মুফতি হান্নানের দলবল দিয়ে শেখ হাসিনাসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের যারা জীবিত এবং দলের শীর্ষ নেতাদের খুন করে ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিলেন।

মামলার অভিযোগ থেকে আরও জানা যায়, ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের আগেই তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুরুজ্জামান বাবর, জঙ্গি সংগঠনের প্রধান মুফতি হান্নান, ডিজিএফআই পরিচালক মেজর জেনারেল রেজাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই প্রধান ব্রিগেডিয়ার আব্দুর রহিম, পুলিশপ্রধান আশরাফুল হুদা এবং হারিছ চৌধুরী, আব্দুস সালাম পিন্টু, আলী আহসান মুজাহিদসহ সব প্রশাসন প্রধানের সঙ্গে গোপন বৈঠক করেন। যে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় কীভাবে ২১ আগস্ট ও ১৫ আগস্টের খুনের মতো শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের সবাইকে হত্যা করে সফল হতে হবে।

মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেছেন, শেখ হাসিনা যখন ভাষণ শুরু করেন তখনই বৃষ্টির মতো গ্রেনেড ছুড়ে মারা হয়। গ্রেনেড বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা শেখ হাসিনাকে আড়াল করে জীবন রক্ষা করেছেন এবং তাকে যখন গাড়িতে তুলে দেয় তখনও তার গাড়িতে গুলি করা হয়।

বুলেট প্রুফ গাড়ি হওয়ায় আল্লাহর রহমতে বেঁচে যান তিনি। কিন্তু সেই গ্রেনেডের আঘাতে বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ঘটনাস্থলেই ২৪ নেতাকর্মী নিহত হন। কমপক্ষে আরও ৩০০ জনের ওপর নেতাকর্মী আহত হন।

‘আহত নেতকর্মীরা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যান। তবে তাদের ভর্তি করা হয়নি। প্রশাসনের লোকজন দিয়ে তাদের ঢুকতে দেয়া হয়নি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (পিজি হাসপাতাল) বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল।

যখন খালেদা জিয়া জানতে পারেন যে, শেখ হাসিনা মারা যাননি, তখনই তিনি প্রশাসনের লোকদের নির্দেশ দেন দ্রুত আলামত নষ্ট এবং যা যা দরকার তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের, যাতে তার ওপর কোনো দোষ না আসে।

প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে জানান যে, ঘটনাটি দুঃখজনক, এটি একটি দুর্ঘটনা। এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিয়ে জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে সঠিক বিচারের কবর দেয়া হয়। বেগম খালেদার হুকুমে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।’

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin