খুলনা সিটি নির্বাচনে মঞ্জুকে নিয়ে ঢাকায় নানারকম গুঞ্জন

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (খুলনা বিভাগ) নজরুল ইসলাম মঞ্জু ঢাকায়, তাকে নিয়ে চলছে নানারকম গুঞ্জন। যদিও নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়ন চেয়েছেন বর্তমান মেয়র মনিরুজ্জামান মনি। তাকে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত। তারপরও মনে করা হচ্ছে বিএনপির প্রার্থী হয়তো পরিবর্তন হতে পারে। সেক্ষেত্রে নজরুল ইসলাম মঞ্জু বিবেচনা করছে বিএনপির হাইকমান্ড।

গতবার মনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে গত নির্বাচনে জয়লাভ করেন। ২০১৩ সালের নির্বাচনে প্রায় ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে মনি তখনকার আওয়ামী লীগের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেককে পরাজিত করেন।

তাছাড়া ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের ভূমিধস বিজয়ের সময়ও সদরের আসনটি পায় বিএনপি। সংসদ সদস্য হন নজরুল ইসলাম মঞ্জু। এবার খুলনা সিটি নির্বাচনে নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে শক্তিশালী প্রার্থী মনে করা হচ্ছে। নির্বচন না করলেও তাকে কাজে লাগানোর কথা ভাবছে বিএনপি হাই কমান্ড। মনে করা হচ্ছে বিএনপির জন্য একটি নিরাপদ জায়গা খুলনা। তাই হিসাবটাও ভিন্ন।

এব্যাপারে নজরুল ইসলাম মঞ্জুর বলেন, ‘খুলনায় আমাদের সিটিং মেয়র আছে। আমার মনে হয় এখানে বিএনপির যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে তিনিই জিতবেন, তবে কেন্দ্রের নির্দেশ আমি ফেলতে পারব না, আমাকে প্রার্থী করার বিষয়ে দলের ইচ্ছার কথা শুনেছি। ঢাকায় ডাকা হয়েছে। তাই এসেছি।’

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ খুলনা সদর আসনে প্রার্থী করতে চায় ব্যবসায়ী নেতা সালাম মুর্শেদীকে। তখন তার সঙ্গে মঞ্জুর লড়াইটাও বেশ কঠিন হবে। তাই বিএনপি মঞ্জুকে এখনই সিটি করপোরেশনে মেয়র হিসেবে রাখতে চায়।

এব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, খুলনায় মেয়র নির্বাচনে প্রার্থী পরিবর্তনে বিএনপির ভাবনা এবারের সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বিএনপির ‘কৌশল’ এবং আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী দিকে লক্ষ রেখে ভাবা হচ্ছে। সবাই মিলে আলোচনা করেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তাছাড়া খুলনা সিটি মেয়র পদে আওয়ামী লীগের তালুকদার আবদুল খালেক প্রার্থী হতে চাচ্ছেন না। তার পরিবর্তনে আওয়ামী লীগের সাংসদ শেখ হেলালের ভাই শেখ জুয়েলকে প্রার্থী করার কথা ভাবছে দলটি। রাজনীতি থেকে দূরে থাকা এবং ব্যবসায়ী শেখ সালাউদ্দিন জুয়েল প্রার্থী হিসেবে যথেষ্ট শক্তিশালী বলে মনে করছে স্থানীয় বিএনপি। বিষয়টি কেন্দ্রকে তারা জানিয়েছে। এই প্রার্থীর সঙ্গে লড়তে মনিরুজ্জামানকে বেগ পেতে হবে। কিন্তু মঞ্জুর জন্য লড়াই সহজ হবে।

বিএনপি কে চালাচ্ছে বলেই দিলেন মোশাররফ

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ যৌথ নেতৃত্বে বিএনপি পরিচালিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, আজকের পত্রিকায় এসেছে- আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন বিএনপি কে চালায়? মনে হচ্ছে – উনার ঘুম হয় না রাতে, উনি এতো দুশ্চিন্তায় আছেন। আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, বিএনপি নেতৃবৃন্দ ও সারাদেশের নেতা-কর্মীরা ইস্পাতকঠিন ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। যৌথ নেতৃত্বে এবং লন্ডনে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি চলছে, আরো বেশি জোরদারভাবে চলছে।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তারেক রহমান। আমরা যারা স্থায়ী কমিটির সদস্যরা আছি তারা প্রায় প্রত্যেকদিন অনানুষ্ঠিকভাবে বসে আমরা একত্রে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। ওইসব যৌথ সিদ্ধান্ত আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে আলাপ করে বাস্তবায়ন করছি।

দলের ‘সক্রিয় ৮ শীর্ষ’ নেতাদের বিরুদ্ধে সরকার ‘ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে’ দুর্নীতি দমন কমিশনের মাধ্যমে কথিত লেনদেনের অভিযোগে তদন্ত করানো উদ্যোগের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমার ও আমার পরিবারের কারো ডাচ-বাংলা ব্যাংকে কোনো একাউন্ট নাই, ছিলোও না। এটা একটা বানোয়াট তথ্য, সরকারের অপপ্রচারের অংশ।

বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কাদের প্রশ্ন রাখেন, দেশে অস্থিরতা-অশান্তি তৈরির কত পাঁয়তারা বিএনপি করবে? বিএনপি কে চালাচ্ছে? এক দলে এত রূপ কেন? টেমস নদীর পাড় থেকে কেউ কি সুতা টানে?

জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে নাগরিক অধিকার আন্দোলন ফোরামের উদ্যোগে ‘ দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়াকে আদালতের মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি ও বর্তমান প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

সংগঠনের সভাপতি নাছির উদ্দিন হাজারীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিমউদ্দিন আলম, ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ফরিদউদ্দিন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin