sena_bich

কে হচ্ছেন নতুন সেনাপ্রধান ও প্রধান বিচারপতি ?

আগামী ২০১৮ সালটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য। জাতীয় নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে। বিদ্যমান সংবিধান অনুযায়ী মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে ৩ মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিধান রয়েছে। এতে আগামী ডিসেম্বর অথবা জানুয়ারীতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এদিকে আগামী জুনে শেষ হবে বর্তমান সেনা প্রধান মেজর জেনারেল আবু বেলাল মুহাম্মদ শফিউল হকের মেয়াদ। ইতোমধ্যে বিতর্কিত পদত্যাগের কারনে প্রধান বিচারপতির পদটি শূন্য রয়েছে। এই পদটি চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দিয়ে।

প্রধান বিচারপত ও সেনাপ্রধান পদ পূরনে খুবই সতর্কতার সাথে এগুচ্ছে সরকার। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি দিয়ে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনের নজির বাংলাদেশে নেই। এরশাদ যামানায় একবার সর্বোচ্চ ১২দিন এই পদে ভারপ্রাপ্ত ছিলেন। এছাড়া আর কখনো এই পদে এত দীর্ঘ সময় ভারপ্রাপ্ত থাকার উদাহরণ নেই। সরকার নিজের বিশ্বস্থতায় উত্তীর্ণ একজনকে এ পদে বসানোর লক্ষ্যে কাল ক্ষেপন করছেন। কারন নির্বাচনকালীন ও পরবর্তিতে কোন সঙ্কটের সৃষ্টি হলে রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি ও সেনা প্রধানের ভুমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে।

কে হচ্ছেন সেনা প্রধান:
বাতাসে নানা গুজব ভাসছে। যে কোন সময় বর্তমান সেনা প্রধানকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। এমন কথা এখন চাউড় রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। বর্তমান সেনা প্রধান মেজর জেনারেল আবু বেলাল মুহাম্মদ শফিউল হক ২০১৫ সালের ২৫ জুন দায়িত্ব গ্রহন করেছিলেন। আগামী জুনে তাঁর চাকুরির মেয়াদ শেষ হবে। এর আগেই তাঁকে সরিয়ে হচ্ছে এমনটাই এখন শোনা যায়। সরিয়ে তাঁকে রাষ্ট্রদূত বা অন্য কোন পদে নিয়োগ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

ইতোমধ্যে তাঁর সাথে সরকারের দূরত্ব তৈরি হয়েছে সেইটাই বলাবলি হচ্ছে চারদিকে। বর্তমান সেনাপ্রধানকে সরিয়ে শেখ হাসিনা ও ইন্ডিয়ার অতিবিশ্বস্থ একজনকে বসানোর চিন্তা করা হচ্ছে। সেই দিক থেকে সেনা প্রধান হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন ঢাকার ৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর ভাই লে. জেনারেল আজিজ আহমদ। বর্তমানে তিনি সেনা বাহিনীর আর্টডক আর্মি ট্রেইনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড)-এর কমান্ডিং অফিসার (জিওসি)।

লে.জেনারেল আজিজ আহমদের বড় ভাই আনিস আহমদে। ঢাকার মোহাম্মদপুরের মিজান কমিশনারের ছোট ভাই কামাল হত্যা মামলার আসামী। নি¤œ আদালতের বিচারের ফাঁসির দন্ডাদেশ হয়েছে।

পলাতক হিসাবে মালয়েশিয়ায় জীবন যাপন যাপন করছেন। আরেক ভাই হারিছ আহমদ। চার দলীয় জোট সরকারের আমলে প্রকাশিত ১৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকাভু একজন হলেন হারিছ আহমদ। একটি হত্যা মামলায় তাঁরও ফাঁসির আদেশ হয়। বর্তমানে পলাতক জীবন যাপন করছেন। তিনিও মালয়েশিয়ায় রয়েছেন বলে জানা যায়। আরেক ভাই তোফায়েল আহমদ জোসেফ। বর্তমানে কারাগারে আটক। একটি হত্যা মামলায় তাঁরও ফাঁসির আদেশ হয়েছিল। হাইকোর্ট ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন।

পরবর্তিতে আপিল বিভাগ দন্ড কমিয়ে তাঁকে যাবজ্জীবন করা হয়। লে. জেনারেল আজিজ আহমদ ছাড়া বাকী ৩ ভাই হত্যা মামলার দন্ডপ্রাপ্ত আসামী। তিনি বিজিবির মহাপরিচালক হিসাবে থাকার সময় ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তখন সরকার বিরোধী আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনার বিশ্বস্থতার পরিচয় দেন। এছাড়া সীমান্ত রক্ষ্মিবাহিনীকে ইন্ডিয়ার অনুগত হিসাবে তৈরি করতে তাঁর রয়েছে বিশেষ ভুমিকা। এখানেও তিনি ইন্ডিয়ার বিশ্বস্থতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মনে করা হচ্ছে।

সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগে লে. জেনারেল আজি আহমদ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছেন ৩ বছর। তখন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাকালীন ছাত্র রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কথা শোনা যায়। তারপরও মনে করা হয় আজি আহমদ শেখ হাসিনার অনুগত্যের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মনে করা হয়। পারিবারের ৩ ভাই শীর্ষ সন্ত্রাসীর তালিকাভুক্ত এবং সর্বোচ্চ দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হওয়ায় আজিজ আহমদের বিষয়ে নানা আপত্তিও শোনা যায়।

কে হচ্ছেন প্রধান বিচারপতি

গত ২ অক্টোবর থেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন বিচারপতি মো: আবদুল ওয়াহাব মিঞা। দীর্ঘ সময়ে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে দায়িত্ব পালন করে তিনি রেকর্ড সৃস্টি করছেন। সংবিধান অনুযায়ী যদিও প্রধান বিচারপতি নিয়োগের এখতিয়ার হচ্ছে রাষ্ট্রপতির। কিন্ত বর্তমান বাস্তবতায় দখলদার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ইচ্ছার বাইরে কিছু হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত নেই। শেখ হাসিনা যাকে চাইবেন রাষ্ট্রপতির ইচ্ছার বহি:প্রকাশ সেটাই ঘটবে। মোষ্ট সিনিয়র হিসাবে বিচারপতি আবদুল ওয়াহাব মিঞাই প্রধান বিচারপতি হিসাবে মনোনয়ন পাওয়ার কথা। তিনি ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি হিসাবে নিয়োগ লাভ করেছিলেন।

এর আগে আওয়ামী লীগের প্যানেল থেকে সুপ্রিমকোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচনে সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে তাঁকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দেন। সুতরাং তিনিও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক পরিবারেরই পরীক্ষিত সদস্য। দ্বিতীয় সিনিয়র হিসাবে রয়েছেন সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনিও ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ আমলে হাইকোর্ট বিভাগে নিয়োগপ্রাপ্ত। আপিল বিভাগে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার তাঁকে নিয়োগ দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত শেষ হাসিনা যাকে চাইবেন তিনিই হবেন প্রধান বিচারপতি।

মনিটর

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin