hasina_003

এমনও দিন যায় তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারি না: প্রধানমন্ত্রী

রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে কখনও কখনও ৩/৪ ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারেন না বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘দিনে ১২ ঘণ্টা না ১৪ ঘণ্টা কাজ করি, তার হিসাব নাই। এমনও দিন যায় রাতে তিন-সাড়ে তিন ঘণ্টার বেশি ঘুমাতে পারি না। যখনই কাজ আসে আমরা করে যাই। আমি মনের টানে কাজ করি।’

বুধবার (২২ নভেম্বর) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

ফখরুল ইমাম তার সম্পূরক প্রশ্নে ‘পিপলস অ্যান্ড পলিটিকস নামের একটি সংস্থা থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বের তৃতীয় সৎ ও পরিচ্ছন্ন সরকার প্রধান এবং বিশ্বের চতুর্থ কর্মঠ সরকার প্রধান হিসেবে আখ্যায়িত করার প্রসঙ্গ তুলে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুভুতি জানতে চান।

জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কী পেলাম, কী পেলাম না, সেই হিসাব মেলাতে আমি আসিনি। কে আমাকে স্বীকৃতি দিলো বা না দিলো সে হিসাব আমার নাই। একটাই হিসাব এই বাংলাদেশের মানুষ, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে কিছু কাজ করতে পারলাম, সেটাই আমার কাছে বড়। দেশের মানুষের জন্য নিজের জীবনটাও বাজি রেখেছি, শুধু একটাই কারণ। বাংলাদেশটা যেন স্বাধীন বাংলাদেশ হিসেবে উন্নত ও সমৃদ্ধ হয়, বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে চলে।’

ওই সংস্থাটির প্রতিবেদনে তার (প্রধানমন্ত্রী) চেয়ে বাংলাদেশের মর্যাদাটা উন্নত হয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, যাদের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, আমার প্রশ্ন- তাদের দেশে জনসংখ্যা কত। আর আমাদের দেশে জনসংখ্যা কত। এটা যদি তারা তুলনা করতেন তাহলে হয়তো অন্য হিসাবটা আসতো। আমাদের ছোট্ট ভূখণ্ডে বৃহৎ জনগোষ্ঠী। এছাড়া, এক-দুই নম্বরে যারা আছেন, তাদের কিন্তু জীবনে বাবা-মা-ভাই- বোন আপনজন হারাতে হয়নি। জেলের ভাত খেতে হয়নি। আমাদের দেশের পরিবেশটাই আলাদা।

এখানে একজনও আমার মতো গ্রেনেড হামলার শিকার হননি। হত্যার হুমকিও পাননি। বারবার আমার ওপরে যে আঘাত এসেছে, এরকম একবারও হলে তারা ঘরে বসে থকতো। কিন্তু আমি মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে, জীবনকে বাজি রেখে বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি। সেখানে নিজের জীবনে অর্থ-সম্পদ, টাকা-পয়সা কী আছে না আছে চিন্তাও করি না। ওটা নিয়ে আর কোনও দুশ্চিন্তা নাই। কারণ, আল্লাহ জীবন দিয়েছে, জীবনতো চলেই যাবে।’

নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাকে বিদেশের মাটিতে রিফিউজি হিসেবে থাকতে হয়েছে। যাদের সঙ্গে তুলনা- তাদের এই অভিজ্ঞতাও নেই। যারা করেছেন এ বিষয়গুলোও যদি বিবেচনা করতেন, তাহলে হয়তো রেজাল্ট অন্য রকম হতে পারতো। আমাদের যে প্রতিকূল অবস্থা এ প্রতিকূল অবস্থার মধ্যদিয়ে তাদের চলতে হয়নি।’

সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার সরকারের বিরুদ্ধে কিছু দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। বুঝতে হবে যে দেশে মিলিটারি ডিকটেটরশিপ চলে, গণতন্ত্রের অভাব থাকে যে দেশে, স্বচ্ছতা জবাবদিহিতার অভাব থাকে, সেদেশে দুর্নীতির শিকড় গেড়ে যায়। সে শিকড় ওপড়ে ফেলা কঠিন হয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি ডিকটেটরশিপ, মিলিটারি রুল, অবিচার, অত্যাচার। যার কারণে এখনও দুর্নামের ভাগীদার হতে হচ্ছে। আমি নিজে সততার সঙ্গে দেশ চালাতে চেষ্টা করছি। একটা কথা মনে রাখবেন, মাথায় পচন ধরলে সবখানেই পচন ধরে। যেহেতু মাথায় পচন নাই, শরীরের কোথাও একটু আধটু ঘা-টা যদি থাকে, সেগুলো আমরা সেরে ফেলতে পারবো।’

তিনি বলেন, ‘বড় ধরনের দুর্নীতি হলে জিডিপি ৭ দশমিক ২৮ ভাগ হতো না। মাথাপিছু আয় ১৬১০ ডলার হতো না। দুর্নীতিকে চ্যালেঞ্জ দিয়েই কিন্তু আমরা পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি করছি। সে চ্যালেঞ্জ দিতে পেরেছি। এখানে সততাই শক্তি।

উৎসঃ   poriborton

নৌকায় চড়তে চান নাজমুল হুদা

বিএনপির এক সময়কার ডাকসাইটে নেতা ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা এখন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় চড়তে চাইছেন। তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ (গুলশান-বনানী-ক্যান্টনমেন্ট) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।

সমকালের সঙ্গে আলাপকালে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেছেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বিশদ আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাকে ঢাকা-১৭ আসন থেকে নির্বাচন করার কথা বলেছেন।

নাজমুল হুদা ঢাকা-১ (দোহার-নবাবগঞ্জ) আসনের সাবেক এমপি। আগামী নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সালমান এফ রহমান।

তিনি সম্পর্কে নাজমুল হুদার চাচা। নাজমুল হুদা বলেছেন, তিনি তার চাচা সালমান এফ রহমানকে তার নিজের ঢাকা-১ আসনটি ছেড়ে দিয়েছেন।

তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় জোট গঠন করা হয়েছে। তিনি এই জোটের চেয়ারম্যান। জাতীয় জোটে ৩১টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিত্ব রয়েছে বলে তার দাবি। জাতীয় জোট গঠনের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটে সম্পৃক্ত হন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। এর পর থেকেই আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সম্ভাব্য নির্বাচনী জোটে নাজমুল হুদার জাতীয় জোটের সম্পৃক্ত হওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। গত ১৮ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক সমাবেশে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার উপস্থিতি সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক এই মন্ত্রী সমকালকে বলেছেন, দেশ আজ দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে আওয়ামী লীগ, আরেকদিকে আওয়ামী লীগবিরোধী শক্তি। আওয়ামী লীগবিরোধী শক্তির নেতৃত্ব দিচ্ছে বিএনপি। তিনি আওয়ামী লীগের পক্ষে। তবে আওয়ামী লীগে বিলীন না হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়বেন।

তিনি বলেছেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে কিছুটা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু এটা তো বাস্তবতা- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ও জাতির কল্যাণে দৃশ্যমান অনেক কিছুই করেছেন। দেশে এখন আর সহিংসতা ও অস্থিরতা নেই। হরতাল উধাও হয়েছে। দেশজুড়ে উন্নয়ন হচ্ছে।

ভবিষ্যতে জাতীয়ভাবে অনেক বিষয়ের মীমাংসা হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। তার ভাষায়, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জয় বাংলা স্লোগান হলো জাতীয় সম্পদ। এ দুটি বিষয় দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে চলবে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।

নাজমুল হুদা নৈরাজ্যকর অবস্থা থেকে দেশকে স্থিতিশীল অবস্থায় ফিরিয়ে আনাকেই বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় সফলতা হিসেবে দেখছেন। তার দৃষ্টিতে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনন্য নেতৃত্বের কারণেই দেশ বড় ধরনের সর্বনাশ থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে বর্তমান সরকারের সময়ে রাজনীতিতে সাফল্য আসেনি বলে তিনি মনে করছেন। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এই সাফল্য আসবে বলে তার অভিমত।

এক সময়ে বিএনপির অন্যতম নীতিনির্ধারক এই নেতা বলেছেন, বর্তমান বিএনপির নেতৃত্বে ব্যাপক দুর্বলতা রয়েছে। তবে বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাদের কোনোভাবেই উপেক্ষা করা উচিত নয়। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের জন্য বিএনপি চ্যালেঞ্জ হয়ে আসবে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই আওয়ামী লীগকে নির্বাচনী কৌশল চূড়ান্ত করতে হবে।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ‘ইউনেস্কোর বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে যোগদান প্রসঙ্গে নাজমুল হুদা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ওই ভাষণের মাধ্যমে শর্ত সাপেক্ষে স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। ওই ভাষণের প্রেরণা নিয়ে জাতি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ৭ মার্চের ভাষণ না এলে দেশ স্বাধীন হতো কি-না সন্দেহ। এই ভাষণ এখনও পুরনো হয়নি। কখনও পুরনো হবে না।

উৎসঃ samakal

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin