বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘ভোটারবিহীন, গণবিছিন্ন এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে এদেশ ভয়ংকর রক্তাক্ত দেশে পরিণত হবে। জনগণের ক্রোধ এতো তীব্র এতো লেলিহান হবে যে র্যাব-পুলিশ-আইনশৃঙ্খলা বাহিনি দিয়েও নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন না।’
শনিবার (১৮ নভেম্বর) খুলনার ইউনাইটেড ক্লাবে জেলা বিএনপি আয়োজিত বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের অবস্থা প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার মতো অবসর বা ছুটিতে যেতে হবে এমন আশঙ্কা প্রকাশ করে রুহল কবীর রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা দেশে বাকশালের নতুন সংস্করণ কায়েম করতে চলেছেন অভিযোগ করে রুহল কবীর রিজভী বলেন, ‘বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগ সব কিছুই তিনি একক নিয়ন্ত্রণে নিতে চান। প্রধান বিচারপতি মনে করেছিলেন, ষোড়শ সংশোধনীর ফলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা খর্ব হবে। এ নিয়ে কথা বলায় তাকে শুধু পদ নয়, দেশ ছাড়তে হয়েছে। এখন একজন নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, আগামী নির্বাচনে সেনা মোতায়েন হবে এবং ইভিএম’এ ভোট হবে না। কিন্ত এ কথা শেখ হাসিনা শুনতে চান না। আমরা জানি না তার পরিণতি কি হবে? প্রধানমন্ত্রীর পছন্দে নুরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করা হয়েছে। তার অধীনে নির্বাচন হলে ভোটের আগের রাতেই নৌকা মার্কায় সিল মেরে বাক্স ভরে ফেলা হবে।’
এসময় তিনি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে নির্বাচন পরিচালনার ভার দিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহবান জানান।
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সরকার চরম কূটনৈতিক ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে দাবি করে রিজভী বলেন, ‘তাদের (সরকার) পাশে কেউ নেই, এমনকি অতি মিত্র ভারতও নেই।’
ওবায়দুল কাদেরের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘শুধু মুখেই বড় বড় কথা বলেন। কিন্ত দেশের কোথাও উন্নয়ন নেই। রাস্তার অবস্থা এতোই বেহাল যে, যশোর থেকে খুলনা আসতে হয়েছে মহাসড়ক ছেড়ে গ্রামের ভেতরের পথ দিয়ে।’
জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জয়ন্ত কুমার কুন্ড, সাবেক এমপি শেখ মুজিবর রহমান, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমীর এজাজ খান, বিএনপি নেতা খান আলী মুনসুন প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ
সমাবেশ শুরুর আগেই সমাবেশস্থল ত্যাগ শুরু করেন নেতাকর্মীরা
আওয়ামী লীগের নাগরিক সমাবেশ শুরু হবার আগ থেকেই দলে দলে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থল ত্যাগ করতে শুরু করেন।
এসব নেতাকর্মীদের কাছ থেকে জানা যায়- বৈরি আবহাওয়া, ভারী খাবারের ব্যবস্থা না থাকা, সভা শেষে পরিবহন সংক্রান্ত ঝামেলা এবং সভামঞ্চের কাছে বসতে না পারাই ওইভাবে চলে যাওয়ার মূল কারণ।
শনিবার দুপুরে স্বাধীনতা জাদুঘর (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) মাঠে এ নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
বাড্ডা থানা ছাত্রলীগের নেতা সবুজ বলেন, বড় ভাই (বাড্ডা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি) বলেছে এবার কোনো খাবার-দাবারের আয়োজন নেই। এসব আয়োজন করতে নাকি উপর থেকে নিষেধ করা হয়েছে।
সবুজের পাশে থাকা বনানী থানা যুবলীগের কর্মী ইমরান ওই কথার সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলেন, নেতাদের কথামতন আসলাম, কিন্তু পেট তো নেতার কথায় ভরার সিস্টেম নেই। বলল- দুপুরে লাঞ্চ করাবে, এখন কারও খবর নেই।
ইতোপূর্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের যেসব সমাবেশ হয়েছে, সেসব সমাবেশে নেতাকর্মীদের খাওয়া-খাদ্যের আয়োজন থাকত। হয় উদ্যানের ভেতর চুলায় রান্না হতো, নয়তো বিভিন্ন এলাকার নেতারা প্যাকেটের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে আগতদের খাবার দিতো শাহবাগ-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার মধ্যেই। কিন্তু নাগরিক সমাবেশে এ ধরণের আয়োজন দেখা যায়নি।
লালবাগ থানা যুবলীগের নেতা আলী হোসেন চলে যাচ্ছিলেন নিজ মোটর সাইকেল নিয়ে। বৈরি আবহাওয়ার কথা বলে তিনি বিদায় নিচ্ছিলেন বন্ধুদের কাছ থেকে। তার সঙ্গে চলে যাচ্ছিলেন আরও কয়েকজন। আলী হোসেন বলেন, আর কী করব, ভেতরে যাওয়া অনেক কষ্টের। মিছিল নিয়ে এলাম, ছেলেপেলে নিয়ে এলাম, খাওয়া-দাওয়া হয়নি, আকাশও খারাপ। আর থাকা সম্ভব না।
উত্তরা আবদুল্লাহপুর থেকে প্রায় ১৫ জনের দল পাওয়া যায়, যারা চলে যাচ্ছিলেন সমাবেশ শেষে পরিবহণগত সমস্যা এড়াতে। এ দলের একজন সোহরাব বলেন, অনেক দূরে যেতে হবে। তাছাড়া এখন থেকে আর কোনো কাজ নেই। এমনিতেই যে কষ্ট করে এসেছি, যাব কীভাবে ভাবছি।
শাহবাগ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা আনোয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কী দেখব সমাবেশ। মঞ্চের কাছেই যেতে পারলাম না। পুলিশ যেতে দেয় না। বলে নিরাপত্তার সমস্যা নাকি। আর থেকে লাভ নাই।
আস
আ’লীগের সমাবেশে সরকারি চাকরিজীবীদের বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণের অভিযোগ বিএনপির
৭ মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ ইউনেস্কোর তালিকাভুক্তি ‘আনন্দের কথা’ বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।
ইউনেস্কোতে ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধুর ভাষণ স্বীকৃতি ঘোষণার পর এই প্রথম বিএনপির তরফ থেকে এমন প্রতিক্রিয়া এল।
অপরদিকে নাগরিক সমাবেশে স্কুল-কলেজসহ সব সরকারি-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক করার অভিযোগও করেছে বিএনপি।
শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে খুব বড় সমাবেশ হচ্ছে। এই সমাবেশকে বলা হচ্ছে- এটা কোনো রাজনৈতিক সমাবেশ নয়, এটা হচ্ছে একটা রাষ্ট্রীয় নাগরিক সমাবেশ। এটা হচ্ছে, যে বক্তব্য ৭ মার্চ দেয়া হয়েছিল সেটা ইউনেস্কোতে তালিকাভুক্তি করেছে সেজন্য এই সমাবেশ।’
‘তো ভালো কথা। আমরা তো মনে করি যে, আনন্দের কথা।’
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক সমাবেশের প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘সমাবেশকে সামনে রেখে তারা কী ব্যবস্থা নিচ্ছে? প্রত্যেকটা স্কুল-কলেজকে চিঠি দিয়েছেন না এলে শিক্ষকদের চাকরি থাকবে না। ব্যাংকে চিঠি দিয়েছেন না এলে পাঁচ দিনের বেতন কাটা যাবে এবং আসতেই হবে।’
‘সব করপোরেশন, টিচার-শিক্ষক সবাইকে এই কথা বলে নিয়ে আসছেন। স্কুলের বাচ্চাদের নিয়ে এসেছেন। সকালে দেখে এসেছি, বড় বড় বাসে স্কুলের বাচ্চাদের তোলা হচ্ছে। আমাদের তো আপত্তি নেই।’
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একদিকে আপনারা সব মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিচ্ছেন, মিথ্যা দিয়ে সত্যকে ঢেকে দিচ্ছেন। অন্যদিকে এসব কথা বলে মানুষকে প্রতারিত করছেন।’
সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে ভাসানী স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে এই আলোচনা সভা হয়।
শুক্রবার সকালে মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে টাঙ্গাইলের সন্তোষে ভাসানীর মাজারে বিএনপির পক্ষ থেকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেন।
ভাসানী স্মৃতি সংসদের সভাপতি জিয়াউল হক মিলুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় সাবেক মন্ত্রী জাকারিয়া খান চৌধুরী, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মহাসচিব মোস্তফা জামাল হায়দার, সাবেক মন্ত্রী নুর মোহাম্মদ খান, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অ্যাডভোকেট নজমুল হক নান্নু, মেহেদি আহমেদ রুমী, প্রয়াত নেতা মসিউর রহমান যাদু মিয়ার মেয়ে ন্যান্সি রহমার, স্মৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কাজী মনিরুল হুদা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
উৎসঃ যুগান্তর