mirja_bnp

এই সরকারকে বিদায় করতে না পারলে আমরা সবাই ব্যর্থ হবো: মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এই সরকারকে বিদায় করতে না পারলে আমরা সবাই ব্যর্থ হবো, সেই সঙ্গে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে বাংলাদেশ। ফলে আমরা সেটা হতে দিতে পারি না। বুধবার এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে দলীয় নেতাকর্মীদের উপর সরকারের দমন-পীড়নের কথা বলতে গিয়ে আবারো কাঁদলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জেলা জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেয়ার একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে। এর আগেও গত ৮ জুলাই ঠাকুরগাঁও সদরের রায়পুর ইউনিয়নে এক সভায়ও সরকারের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ তুলে তিনি কেঁদেছিলেন।

ফখরুল বলেন, ‘আজকে আমরা একটা দুঃসময়ের মধ্যে যাচ্ছি। আমার সংগঠনের যারা মহিলা-ছাত্রীরা আছে তারা মাফ পায়নি। পুলিশ তাদেরকে মেরে পা ভেঙে দিয়েছে, কোমড় ভেঙে দিয়েছে। আমাদের সারা বাংলাদেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম করে ফেলেছে; তাদেরকে এখনো পাওয়া যায়নি। তাদের সন্তানেরা এখনো বাবার পথ চেয়ে বসে থাকে। এই একটা দুঃসময়। গ্রেপ্তার, গুম চলছেই।’

বক্তব্য দেওয়ার এক পর্যায়ে তিনি কেঁদে ফেলেন। এ সময় সভায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। পরে নিজেকে সামলে নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘এমন একটা দুঃসময়, গ্রেপ্তার খুন চলছেই। এই সরকার, যারা আমাদের গণতন্ত্রের সব স্তম্ভকে ধ্বংস করে দিয়েছে, মানুষের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আমাদের বেঁচে থাকার মৌলিক অধিকারগুলোও কেড়ে নিয়েছে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের মা-বোনদের কোনো নিরাপত্তা নেই। মানুষেরও নিরাপত্তা নেই। খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন নারীদের লাঞ্ছনা করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে। খবরের কাগজ খুললেই দেখবেন আমার ভাইকে গুলি করে মেরে ফেলা রাখা হয়েছে। গুম হয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে হাজারো মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। পাঁচ শতাধিক মানুষকে গুম করে ফেলা হয়েছে।’

এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা পরিষদ মিলনায়তনে জাতীয় সংগীতের তালে তালে জাতীয় পতাকা ও দলীয় সংগীতের তালে তালে সাংগঠনিক পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শুরু হয়। সম্মেলন উদ্বোধন করেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস।

আলোচনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহিলা দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সহসভাপতি জিবা খান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদিকা হেলেন জেরিন খান, রংপুর বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আসাদুল হাবিব দুলু, জেলা বিএনপি সভাপতি তৈমুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমীন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঠাকুরগাঁও জেলা মহিলা দলের আহ্বায়িকা ফোরাতুন নাহার প্যারিস।

উৎসঃ   আরটিএনএন

গুম হওয়া চার নেতার সন্তানদের দায়িত্ব নিয়েছে ছাত্রদল

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৩তম জন্মদিন উপলক্ষে গুম হওয়া চার ছাত্রদল নেতার সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার জন্য আজীবন পড়াশুনার দায়িত্ব নিয়েছে ছাত্রদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ। গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় রাজধানীতে দক্ষিণ ছাত্রদলের অফিসে এক অনুষ্ঠানে এ দায়িত্ব গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি হামিদুর রহমান হামিদ।

এর আগে কেক কেটে তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করেন দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন, সাধারণ সম্পাদক এম এ গাফ্ফারসহ নগর দক্ষিণ ছাত্রদলের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সহ-গণশিক্ষা সম্পদিক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের গুম হওয়া ৯টি পরিবারের মধ্যে এই চারটি পরিবারের সন্তান আছে। যাদের সন্তাদের উচ্চ শিক্ষার জন্য প্রতিমাসে অার্থিক খরচ বহন করবেন হামিদুর রহমান হামিদ। আর এই প্রক্রিয়া তত্ত্বাবধায়ন করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রদল।

গুম হওয়া যে চারটি পরিবারের উচ্চ শিক্ষার ভার নেয়া হলো তারা হলেন, বংশাল থান ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেলের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে সাহাম রাজ এবং সপ্তম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে সোনালী, বংশাল থানা ছাত্রদলের সদস্য মো. চঞ্চলের ৬ বছরের ছেলে ইকরাম হোসেন আহাদ, ৭৯নং ওয়ার্ড ছাত্রদল সভাপতি খালেদ হাসান সোহেলের ৮ বছরের ছেলে সাদমান শিহাব আরিয়ান, ৭১নং ওয়ার্ড ছাত্রদল সভাপতি পারভেজ হোসেনের ৫ বছরের মেয়ে রিদি হোসেন।

এই দিকে গুম হওয়া পরিবারগুলোকে নিয়ে ছাত্রদল দক্ষিণের সভাপতি জহির উদ্দিন তুহিন বলেন, গুম হওয়া পরিবারগুলো যেনো আমাদের রাজনৈতিক হাতিয়ার না হয়, ওরা যেনো আমাদের লড়াই সংগ্রামের প্রেরণা ও বেঁচে থাকার শক্তি যোগায়, দক্ষিণের শত শত নেতাকর্মীদের কাছে এই ৯টি পরিবার যেনো কখোনো বোঝা মনে না হয়, এদের পাশে থাকা তোমাদের দায়িত্ব হিসেবে মেনে নিতে হবে। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি আমাদের সহযোদ্ধারা যেন আমাদের মাঝে ফিরে আসে।

ভবিষ্যতে নেতৃত্বের কাছে আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা আগামীতে নেতৃত্বে আসবেন তাদের কাছে অনুরোধ রইলো এ গুম হওয়া পরিবারগুলোর কাছে আপনারা থাকবেন। কারণ আমরা কেউ জানি না কে কখন কোন সময় গুম হবো।

উৎসঃ   jagonews24

আওয়ামী লীগে যোগদান নিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, রাজনীতিতে কিছুই নাকচ করা যায় না

বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তমের নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নির্বাচনী জোট বাঁধছে আওয়ামী লীগের সঙ্গে- সমসাময়িক রাজনীতিতে বেশ জোরালো হয়ে উঠেছে এমন গুঞ্জন। গত শনিবার ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাগরিক সমাবেশে তার উপস্থিতি সকলের সবিশেষ দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

কাদের সিদ্দিকী অবশ্য এ নিয়ে কিছুই বলতে চাচ্ছেন না এখনই। তার ভাষায়, সময়ই নিয়ামক শক্তি। তা ছাড়া রাজনীতিতে কিছুই নাকচ করা যায় না। রাজনীতিতে শেষ কথা বলেও কিছু নেই। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার নেতা। তার জন্মও আওয়ামী লীগে। তবে সেই আওয়ামী লীগের চরিত্রে প্রশ্নবিদ্ধ পরিবর্তন আসায় দুঃখবোধ রয়েছে তার।

সমকালের সঙ্গে আলাপকালে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন, নির্বাচনী জোট গঠন প্রসঙ্গে তাকে নিয়ে অনেকে অনেক কিছু ভাবতেই পারেন। তার রাজনীতিতে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর উজ্জ্বল উপস্থিতি। আবার মতের অসম্মান কিংবা আসমান-জমিন পার্থক্যেও থাকবেন না। সেই সঙ্গে একদিন যারা পিঠের চামড়া তুলে নেওয়ার কথা বলে বঙ্গবন্ধুকে অসম্মান করার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছেন, তাদের সঙ্গেও যাবেন না তিনি।

আওয়ামী লীগের নিবেদিতপ্রাণ নেতাকর্মীরা এখনও তাকে ভালোবাসেন বলে মনে করেন কাদের সিদ্দিকী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক অনুভূতির প্রতিও বিশাল শ্রদ্ধাবোধ রয়েছে তার। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে খুবই ভালো জানেন। তার মতামতকে গুরুত্ব দেন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাঘা সিদ্দিকী হিসেবে খ্যাত কাদের সিদ্দিকী ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। এ জন্য দীর্ঘ ১৬ বছর ভারতে নির্বাসনে থাকতে হয়েছিল তাকে। জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে প্রথম সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাব বীরউত্তম পদকপ্রাপ্ত বর্ষীয়ান এই নেতা টাঙ্গাইল-৮ আসনের সাবেক এমপি।

 

ঐক্যবদ্ধ জাতি হিসেবে কোনো বিষয়ে একত্রিত হয়ে সামনের দিকে অগ্রসর না হতে পারাকে সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেন, সরকার শুধু নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতা করার মতো কেউ নেই। আওয়ামী লীগের দুর্দিনের নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে পরামর্শ দেওয়ার সাহস হারিয়েছেন। অন্যরা প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতে ব্যস্ত। এতে জাতির কোনো মঙ্গল হচ্ছে না।

কাদের সিদ্দিকী প্রশাসনে দলীয়করণের বিষয়টিকে সরকারের ‘খারাপ কাজ’ হিসেবে দেখছেন। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করতে না দেওয়া ভালো নয়। বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি দিচ্ছে না অথবা কর্মসূচি পালন করতে পারছে না- এ দুটোই বিপজ্জনক। তিনি আরও বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিরাপত্তা দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। তার গাড়িবহরে যদি আওয়ামী লীগ হামলা চালিয়ে থাকে, তাহলে তা মোটেই ভালো কাজ নয়। বিএনপি যদি নিজেরাই হামলার ঘটনা ঘটিয়ে থাকে, তাহলে সেটা আরও বিপজ্জনক।

কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, গ্রামের মানুষ খুব কষ্টে আছে। সরকার সমর্থকরা গ্রাম পর্যায়ে যেসব অন্যায় কাজ করছে, তা কল্পনার বাইরে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বৈতরণী পেরোনোর বেলায় আওয়ামী লীগের জন্য বিএনপি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে আসবে বলে মনে করেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ‘ইউনেস্কোর বিশ্বপ্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে যোগদান প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘মতের অমিল থাকলেই যে সেখানে যাওয়া যাবে না- তা কিন্তু নয়। আর ঐতিহাসিক ৭ মার্চ আমাদের। নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের মুক্তির বাণী। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ আমাদের জাতীয় সম্পদ। তবে এখন যারা বাড়াবাড়ি করছে, ৭ মার্চ তাদের নয়।’

সমকাল

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin