khaleda_zia

‘‌খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে টালবাহানা চলছে’

খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে টালবাহানা চলছে মন্তব্য করে নেতাকর্মীদের কার্যকর ও কঠোর আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে শফিউল বারী মুক্তি পরিষদের আয়োজনে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ আহবান জানান।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করছি। তবে এভাবে আন্দোলন করে তাকে মুক্ত করা যাবে না। তাকে মুক্ত করতে হলে কঠোর আন্দোলনের প্রয়োজন। তাই প্রস্তুতি নিন ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য। কার্যকর আন্দোলনের জন্য। আমাদের বক্তৃতায় খুব বেশি সাহসী হওয়ার চেয়ে কাজে বেশি সাহসী হতে হবে। জনগণ বর্তমান সরকারের পক্ষে নেই। তারা সুযোগ পেলে বিএনপিকেই ভোট দিতে চায়।

বিএনপির এই নীতিনির্ধারক বলেন, আজকে দেশে অস্বাভাবিক সব ঘটনা ঘটছে। মিথ্যা অভিযোগে সাজা পেয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে গেলেন। জামিন নিয়ে টালবাহানা শুরু হল। জামিন পেলেন। কিন্তু সরকার পক্ষ চেম্বার জজের কাছে চলে গেলেন। সময় নেয়া হল অনেক। এক শুনানি থেকে আরেক শুনানির দূরত্ব অনেক। অবশেষে জামিন হল। তবে এর আগেই আরেকটি মামলায় শ্যোন অ্যারেস্ট দেখানো হল।

আমরা আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু না। এভাবে তাকে মুক্ত করা সম্ভব নয়। আমাদের কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে।

তিনি বলেন, জনতা পারে না এমন কোনো কাজ নেই। আমরা ৯০ এর স্বৈরাচারি আন্দোলন করেছি। আয়ুব খানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি। আমরা তখন পেরেছি কারণ তখন আমাদের আন্দোলনের বয়স ছিল। তবে এখন যদি করতে বলেন তাহলে পারব না। এখন আন্দোলন করতে হবে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলকে।

তিনি আরও বলেন, সবারই ধৈর্যের সীমা থাকে। এই দেশ এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বৈরতান্ত্রিক দেশে পরিণত হয়ে গেছে। ৭৩ বছর বয়সী খালেদা জিয়া আজ কারাগারে যথেষ্ট অসুস্থ। ডাক্তাররা বলেছেন- এমন অবস্থায় থাকলে তিনি পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন। অন্ধ হয়ে যেতে পারেন। সরকারি চিকিৎসকরা তাঁর উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করার পরও সরকার সেটা আমলে নেয়নি। এই স্বৈরাশাসনের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।

সংগঠনের আহ্বয়ক ফয়েজ উল্লাহ ফয়েজের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস- চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি গোলাম সরোয়ার, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।

গ্রেফতার বাণিজ্যের পাশাপাশি হত্যা-বাণিজ্য চলছে : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, মাদকবিরোধী অভিযানের নামে বিচার-বহির্ভূতভাবে এখন পর্যন্ত প্রায় ৭৫ জনকে হত্যা করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। গোটা দেশকে হত্যার বধ্যভূমিতে পরিণত করতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে মাদক নির্মূলের নামে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। এভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা সকলের জন্য রীতিমতো উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে।

শনিবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী অভিযোগ করেন, ক্রমান্বয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে এবং নতুন করে টার্গেট করা হচ্ছে। অনেক পরিবারের অভিযোগ- তাদের তুলে নিয়ে গিয়ে পুলিশের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় রাতে বিচার বহির্ভূতভাবে নিরীহ লোকদের হত্যা করা হয়।

তিনি বলেন, প্রত্যেক ঈদ মওসুমে সরকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এধরণের রমরমা বাণিজ্য করার সুযোগ করে দেয়া হয়। এখন গ্রেফতার বানিজ্যের পাশাপাশি হত্যা-বাণিজ্য চলছে।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ নেতা ও টেকনাফের এমপি মাদক সম্রাট বদিসহ আওয়ামী লীগের শত শত বড় বড় নেতাকর্মীদের নাম গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হলেও এখনও পর্যন্ত তাদেরকে আইনের আওতায় নেয়া হয়নি। দেশে মাদক বিস্তারের জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ। তাদের আমলেই সকল সীমান্ত দিয়ে প্রতিবেশী দেশ থেকে মাদক এর চালান ঢুকছে বাংলাদেশে অত্যন্ত নিরাপদে।

তিনি বলেন,] অবিলম্বে এসব নাটক বন্ধ করুন, মাদক নির্মূলের নামে বিএনপিসহ বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। বিএনপি মাদক বিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে নয়, আপনারা প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন, বিচার বহির্ভূত হত্যা নয়। বিচার-বহির্ভূত হত্যার এই মহৌৎসব আইন বিরোধী, নৈতিকতা বিরোধী ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

রিজভী বলেন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদেরকে প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে নির্বাচনী আচরণ বিধিমালা সংশোধন করেছে ইসি, যা গভীর ষড়যন্ত্রমূলক এবং ভোটের ময়দান ধ্বংসের সামিল। তিনি বলেন, সিইসি চান না দেশে কোনো অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হোক। এই নির্বাচনী আইন প্রণয়নের ফলে আইনের চোখে সবাই সমান থাকল না।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পশ্চিমবঙ্গ সফরে গিয়ে খোশগল্প করছেন অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তিস্তার পানিচুক্তি না হলে এই সফরের মানেই হয় না।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin