৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার দুর্নীতি মামলার রায়কে সামনে রেখে প্রকাশে কিংবা আত্মগোপনে থেকেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রামের বিএনপি নেতাকর্মীরা। ৮ ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় রাজনীতির পাশাপাশি চট্টগ্রামের রাজনীতিতেও উত্তাপ ছড়াচ্ছে। দলের প্রথম সারির নেতারা এ নিয়ে প্রস্তুতিও সেরে ফেলেছেন।তবে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে সতর্কতা অবলম্বন করছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
৮ ফেব্রুয়ারি রাজপথে থাকতে অনেকেই মোবাইল ফোন বন্ধ করে সাময়িক গা ঢাকাও দিয়েছেন।ওইদিন মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনসমূহ আলাদা কর্মসূচি পালন করবে। নগরীর ৬টি স্পট ছাড়াও জেলার প্রায় সব থানা-উপজেলায় রায়কেন্দ্রিক কর্মসূচি পালন করা হবে। বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এ বছরের শেষ দিকে অনুষ্ঠেয় একাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে এখন রাজনৈতিক উত্তাপ চলছে। এরমধ্যে দুর্নীতি মামলায় সাজা হলে বেগম খালেদা জিয়ার নির্বাচনে অংশগ্রহণ অনিশ্চয়তায় পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিএনপির অনেক নেতা। সে রকম কিছু হলে রাজপথে ‘শান্তিপূর্ণ’ আন্দোলনের মাধ্যমে এর ফয়সালা করার ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
দলীয় বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় নেতাকর্মীদের বাসাবাড়িতে গত দুদিন ধরে অভিযান চললেও উল্লেযোগ্য কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। নেতারা আত্মগোপনে থেকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে বিএনপির এ সূত্র দাবি করেছে।চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশে ৮ ফেব্রুয়ারি নগরীতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। আমরা আশা করি, প্রশাসন এই শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা সৃষ্টি করবে না। যাতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয় সেদিকে নজর রাখবে প্রশাসন।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৮ ফেব্রুয়ারির রায় প্রশ্নবিদ্ধ হলে জনগণকে সম্পৃক্ত করে ওইদিন আমরা মাঠে থাকবো। আমাদের আন্দোলন সম্পূর্ণ অহিংস।’অপর এক সূত্র জানায়, ৮ ফেব্রুয়ারি রাজপথে আন্দোলনের কর্মসূচি জোরালো করতে নেতাদের প্রতি চাপ দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারা।
দলের চেয়ারপারসনের সাজা হলে তারা রাজপথে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতেও প্রস্তুত। এক্ষেত্রে নেতারা ঝিমিয়ে না থেকে সবার আগে রাজপথে থাকার দাবি জানিয়েছে তৃণমূল বিএনপি।এদিকে তৃণমূল নেতাদের মতো বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কথাতেও কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেকের প্রতি আস্থার সংকটের প্রকাশ ঘটেছে। ক’দিন আগেই নেতাদের পেছনে নিজস্ব গোয়েন্দা লাগানোর কথা বলেছিলেন খালেদা জিয়া।
সর্বশেষ গত শনিবার ঢাকার লা মেরিডিয়ান হোটেলে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাড়ে চারশ’র বেশি নেতার সঙ্গে এক সভায় খালেদা জিয়া বললেন, ‘যারা বেঈমানি করবে, যারা এদিক ওদিক, এক পা এদিক অন্য পা অন্যদিকে রাখবে, তাদের চিহ্নিত করা হবে। এদের মূল্যায়নের জায়গা থাকবে না।
এদের তারাও (সরকার) নেবে না, আমরাও নেব না। আমরা আগে একবার ক্ষমা করেছি, ক্ষমা বারবার হয় না।’প্রসংগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জন করে নব্বইয়ের পর প্রথম সংসদের বাইরে চলে আসে বিএনপি। এবার সবদলের অংশগ্রহণে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ফের সরকার গঠনের জন্য মরিয়া দলটি।
ব্রেকিংনিউজ