bnp_upodesta

৫৩ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করলেন খালেদা

দলের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার রাতে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

তিন মাস চিকিৎসা শেষ করে গত ১৮ অক্টোবর লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পর দলের স্থায়ী কমিটি, ভাইস চেয়ারম্যান ও ২০ দলীয় জোটের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিসহ সাংগঠনিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে নেতারা জানান।

৭৬ সদস্যের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্যদের মধ্যে তিনজন হারুনার রশীদ মুন্নু, ফজলুর রহমান পটল ও আখতার হামিদ সিদ্দিকী মারা গেছেন।

বৈঠকে উপদেষ্টা কাউন্সিলের ৫৩ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন উকিল আব্দুস সাত্তার, লুৎফর রহমান খান আজাদ, সাবিহউদ্দিন আহমেদ, আমানউল্লাহ আমান, মিজানুর রহমান মিনু, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আনহ আখতার হোসেন, মাজেদুল ইসলাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, জয়নাল আবেদিন ভিপি জয়নাল, মনিরুল হক চৌধুরী, মেজর(অ.) কামরুল ইসলাম, সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমি, এম এ কাইয়ুম, জহুরুল ইসলাম, ইসমাইল জবিউল্লাহ, আবদুর রশিদ, হায়দার আলী, জিয়াউর রহমান খান, তাজমেরী এস ইসলাম, শাহিদা রফিক, গোলাম আকবর খন্দকার, কাজী আসাদ, কবির মুরাদ, অধ্যাপক শাহজাহান মিয়া, একরামুজ্জামান, ফজলুর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, আতাউর রহমান ঢালী, নজমুল হক নান্নু, তাহমিনা রুশদীর লুনা, এনামুল হক চৌধুরী, সিরাজুল ইসলাম, সুকোমল বড়ুয়া, বিজন কান্তি সরকার, আবদুল হক, তৈমুর আলম খন্দকার, কামরুল মুনির, বোরহান উদ্দিন, আবদুল বায়েছ ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, শাহাজাদা মিয়া, এস এম ফজলুল হক, এম এ লতিফ, আবদুল কুদ্দুস, আবদুল মান্নান তালুকদার, ফরহাদ হালিম ডোনার, খন্দকার মুক্তাদির আহমেদ, মামুন আহমেদ, সৈয়দ শামসুল আলম, হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, মাহবুবুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও উপস্থিত ছিলেন।

উৎসঃ   জাগোনিউজ

খালেদার সাজা হলেই বিএনপির হাল ধরবেন জোবাইদা !

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগে পৃথক দুই মামলার বিচার প্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে। আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্যের পর সাফাই সাক্ষী ও যুক্তিতর্ক। এরপরই রায়। এ মামলায় প্রধান আসামি বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দুই মামলায় ‘সাজা’ হওয়ার আশঙ্কা করছেন তার দলের নেতা-কর্মীরা।

সম্প্রতি বিশেষ আদালতে নিজের ‘সাজা’ শঙ্কার কথা জানিয়েছেন বেগম জিয়া। তার সাজা হলে বিএনপির পরিণতি কী হবে তা নিয়ে দলের পক্ষে প্রকাশ্যে মুখ খোলেনি কেউ। তবে এ নিয়ে দলের ভিতরে-বাইরে নানা কৌশল নিয়ে আলোচনা চলছে। খালেদা জিয়া জেলে গেলে ও সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে তার স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান হাল ধরুক—এমনটাও চান দলের অনেক নেতা। আবার দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নেতৃত্ব চান বড় একটা অংশ। তবে সরকারের দুজন মন্ত্রী এ নিয়েও আগাম বার্তা দিয়েছেন।

সম্প্রতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, খালেদা জিয়ার সাজা হলে নির্বাচনে যাবে না বিএনপি। এরও কয়েকদিন আগে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম বলেন, খালেদা জিয়ার সাজা হলে বিএনপি দুই-তিনভাগে বিভক্ত হবে। সব ভাগই পৃথক পৃথকভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। মন্ত্রীদের এ ধরনের কথাবার্তায় উদ্বিগ্ন বিএনপি। মন্ত্রীদের এসব বক্তব্যে ‘অসৎ’ উদ্দেশ্য দেখছেন বিএনপি নেতা-কর্মীরা।

অবশ্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্পষ্ট করে বলেন, বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রের প্রতীক। তাকে ছাড়া এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। মামলা আর জেলের ভয় পান না বিএনপি চেয়ারপারসনসহ দলের নেতা-কর্মীরা। নির্বাচনে অযোগ্য করার ষড়যন্ত্রও কাজে আসবে না।

দলের শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করে, শুধু বেগম জিয়াকেই নয়, গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকজন নেতাকেও ‘সাজা’ দিয়ে আগাম নির্বাচন দিতে পারে সরকার। বেগম জিয়া ও তারেক রহমানকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণাও করা হতে পারে। সেই সঙ্গে কয়েকজন সিনিয়র নেতাকেও সাজার জালে আটকানো হতে পারে। তখন বিএনপি কী করবে—তা নিয়েই ঘনিষ্ঠজনদের সঙ্গে কথা বলছেন বেগম খালেদা জিয়া।

দলের অভ্যন্তরীণ একটি সূত্র জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে লন্ডনে ছেলে তারেক রহমানের সঙ্গে দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব নিয়েও কথা বলেন খালেদা জিয়া। বিশেষ করে বেগম জিয়া জেলে গেলে দল কীভাবে কার নেতৃত্বে চলবে তা নিয়েও মা-ছেলে কথা হয়।

আপদকালীন একটি সংক্ষিপ্ত কমিটি গঠনের চিন্তার কথাও জানান বেগম জিয়া। তবে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, আপদকালীন বিশেষ করে বেগম জিয়া জেলে গেলে তারেক রহমানেরও দেশে আসার সুযোগ থাকবে না। সেক্ষেত্রে দলের হাল ধরতে পারেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান। দলে তারও ক্লিন ইমেজ রয়েছে। নেতা-কর্মীরাও তাকে বেশ পছন্দ করেন।

বিএনপির হাইকমান্ড মনে করে, বিএনপিতে ভাঙন ধরাতে দীর্ঘদিন ধরেই একটি প্রক্রিয়া চলছে। মাঝখানে বন্ধ থাকলেও আগামী একাদশ জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সেটা আবার নতুন করে শুরু হয়েছে। একটি বিশেষ মহল আবারও বিএনপিতে ভাঙন ধরাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রীদের বক্তব্যেও তা কিছুটা আন্দাজ করছে বিএনপির হাইকমান্ড। ওই মহলটি শুধু বিএনপি নয়, জোটেও ভাঙন ধরাতে নানা তত্পরতা চালাচ্ছে। বিএনপি জোটকে খণ্ডবিখণ্ড করে দুর্বল অংশকে নিয়ে নির্বাচনে যাওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে।

এ ব্যাপারে বিএনপিও বেশ সতর্ক। সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পারেন এমন সব নেতাদের ব্যাপারেও সজাগ দৃষ্টি রাখছেন খালেদা জিয়া। লন্ডন বসে তারেক রহমানও মনিটরিং করছে। দেখা-সাক্ষাৎ হলে তাদেরকে ইশারা ইঙ্গিতে বিএনপি প্রধান বুঝিয়েও দিচ্ছেন, ‘দল ভাঙার চেষ্টা করলে পরিণাম শুভ হবে না। ’ সিনিয়র নেতাদের একাধিক বৈঠকেও এ কথা বলেন তিনি।

সর্বশেষ শনিবার রাতে ভাইস চেয়ারম্যানদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএনপি প্রধান বলেছেন, ‘দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের পরিণাম ভালো হবে না’। বিএনপির তরুণ নেতৃত্ব বলছে, ভবিষ্যতে ওয়ান-ইলেভেনের মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে একটি সুবিধাভোগী গ্রুপ দল থেকে বেরিয়ে যেতেও পারে। তাতে দলের কোনো ক্ষতি হবে না।

মাঠপর্যায়ের নেতা-কর্মীরাই খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করবে। কেউ দল থেকে চলে গেলে তারই ক্ষতি হবে। দল সাময়িকভাবে কিছুটা অসুবিধায় পড়লেও এ বিপদ কাটিয়ে ওঠার মতো সক্ষমতা রয়েছে বিএনপির। ওয়ান-ইলেভেনে যারা বিএনপির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন, তারা কোনোদিন দলের আস্থার জায়গায় থাকবে না। নেতা-কর্মীরা তাদের এখনো বিশ্বাস করছেন না।

বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিচার প্রক্রিয়াও অনেক দূর এগিয়েছে। রায় ঘোষণার দিন খুব একটা দূরে নয়।

অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, খালেদা জিয়ারও ‘সাজা’ হতে পারে। ‘সাজা’ হলে খালেদা জিয়াকেও আত্মসমর্পণ করে জেলে যেতে হবে। পরে জামিন চেয়ে আপিল করতে হবে। সরকার হার্ডলাইনে থাকলে তাকেও জেলবাস করতে হবে। নির্বাচনে অযোগ্যও হতে পারেন বিএনপি প্রধান। তাদের মতে, জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় নিম্ন আদালতে সাজা হলেও আইনি লড়াইয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন খালেদা জিয়া। এতে নির্দোষ পাওয়ার আশা করছেন বিএনপি প্রধানের আইনজীবীরা।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ‘সাজা’ শঙ্কার কথা জানিয়েছেন খোদ খালেদা জিয়া। সম্প্রতি বিশেষ আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, “দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে আমাকে সরাতে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করার জন্য ‘নীলনকশা’ প্রণয়ন করছে বর্তমান সরকার। তারই অংশ হিসেবে আমার বিরুদ্ধে এই মামলা দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতারা হুমকি দিচ্ছে, আমাকে রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে বিদায় করে দেওয়া হবে।

মামলা শেষ হওয়ার আগেই বিচার নিয়ে কথা বলছেন, মুখে মুখে রায় দিয়ে দিচ্ছেন তারা। তারা বলছেন যে—এই মামলায় আমার সাজা হয়ে যাবে। আমাকে কাশিমপুর কারাগারে রাখা হবে। এসব বক্তব্য আদালত অবমাননার শামিল।

এতে আমার আশঙ্কা হচ্ছে, আমি এ মামলায় আদৌ ন্যায়বিচার পাব না। ” এ প্রসঙ্গে খালেদা জিয়ার মামলার অন্যতম আইনজীবী বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের মামলার কার্যক্রমের গতিপ্রবাহ দেখে মনে হচ্ছে সরকার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন করে কোনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। ’

onlinenews24

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin