khaleda_04

২৩ শর্তে অনুমতি পেল বিএনপি – দেখে নিন শর্ত গুলো

২৩ শর্তে আগামীকাল রোববার ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের অনুমতি পেল বিএনপি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী অ্যানি, প্রশিক্ষণ ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মোশাররফ হোসেন অনুমতির বিষয়টি জানতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যান। সেখানে ২৩ শর্তে তাঁদের অনুমতি দেওয়ার পত্র তুলে দেওয়া হয়।

বিএনপির এক নেতা জানান, শর্তগুলোর মধ্যে আছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে কোনো মাইক ব্যবহার করা যাবে না, বিকেল পাঁচটার আগেই অনুষ্ঠান শেষ করতে হবে, ঢাকার প্রধান সড়কে অবস্থান নেওয়া যাবে না, বড় কোনো মিছিল নিয়ে সমাবেশে যাওয়া যাবে না প্রভৃতি।

গতকাল শুক্রবার বেলা তিনটায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন করে। ওই দলের সদস্যরা মঞ্চের স্থান নির্ধারণ করাসহ সরেজমিনে উদ্যানের অবস্থা দেখেন।

প্রায় দুই বছর পর এটি রাজধানীতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জনসভা। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেছিলেন তিনি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের দুই বছর পূর্তিতে এই সমাবেশ হয়। এরপর ওই বছরের (২০১৬) ১৪ এপ্রিল (১ বৈশাখ) দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে অংশ নেন খালেদা জিয়া।

প্রধান বিচারপতির পদত্যাগপত্র বঙ্গভবনে

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। কানাডা যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনে গতকাল শুক্রবার তিনি রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্রটি জমা দিয়েছেন। এটি বঙ্গভবনে এসে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন।

প্রধান বিচারপতির ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, ছুটিতে থাকা প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা গতকাল সিঙ্গাপুর থেকে কানাডা গেছেন। তিনি চিকিৎসার জন্য অস্ট্রেলিয়া থেকে গত সোমবার রাতে সিঙ্গাপুরে পৌঁছান। কানাডায় প্রধান বিচারপতির ছোট মেয়ে আশা সিনহা রয়েছেন।

প্রধান বিচারপতির ছুটির মেয়াদের শেষ দিন ছিল ১০ নভেম্বর। তিনি গত ১৩ অক্টোবর রাতে অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। অস্ট্রেলিয়ায় তিনি বড় মেয়ে সূচনা সিনহার বাসায় ওঠেন।

এর আগে গত ২ অক্টোবর এক মাস ছুটির কথা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বরাবর চিঠি পাঠান প্রধান বিচারপতি। এর মেয়াদ ছিল ১ নভেম্বর পর্যন্ত। ছুটিতে থাকা অবস্থায় প্রধান বিচারপতির ১৩ অক্টোবর বা কাছাকাছি সময়ে বিদেশে যাওয়ার এবং ১০ নভেম্বর পর্যন্ত বিদেশে থাকার ইচ্ছা পোষণের বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করতে ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়। গত ১০ অক্টোবর বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে পাঠানো ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আইন মন্ত্রণালয় ১২ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করে।

এ হিসাবে গতকাল প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার ছুটির মেয়াদ শেষ হয়।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণার পূর্ণাঙ্গ রায় গত ১ আগস্ট প্রকাশিত হয়। ওই দিনই পূর্ণাঙ্গ রায়টি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়। রায় প্রকাশের পর এ নিয়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংক্ষুব্ধ হয়। বিশেষ করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন মন্ত্রী, দলীয় নেতা ও সরকারপন্থী আইনজীবীরা। তাঁরা প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের দাবিও তোলেন।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় এবং তার কিছু পর্যবেক্ষণের বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নিতে জাতীয় সংসদে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বিচারিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে সংসদে ওই দিন প্রায় পাঁচ ঘণ্টা আলোচনা হয়, যাতে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১৮ জন সংসদ সদস্য অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত তাঁর এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সংসদে পাস হওয়া সংবিধানের সংশোধনী বাতিল করেছেন।

ডিএমপিকে ফখরুলের ধন্যবাদ

সমাবেশের একদিন আগে অনুমতি দেয়ায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) ধন্যবাদ জানিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে প্রশাসন এবং সরকারি দলের সহযোগিতা চেয়েছে বিএনপি।

শনিবার বেলা ১২টার পরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ফখরুল বলেন, অতীতে ১২ ঘণ্টা আগেও সমাবেশের অনুমতি দিয়েছিল ডিএমপি। এবার তারা আমাদের আগেই অনুমতি দিয়েছে। এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।

দীর্ঘ উনিশ মাস পর রাজধানীতে জনসভার আয়োজন করতে যাচ্ছে বিএনপি। এ সমাবেশের মাধ্যমে মাঠের রাজনীতিতে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে চায় দলটি। সে লক্ষ্যে ব্যাপক প্রস্তুতিও নিয়েছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকে।

সবশেষ ২০১৬ সালের ১ মে শ্রমিক দিবস উপলক্ষে শ্রমিক সমাবেশ করে বিএনপি। এর আগে ওই বছরের ৫ জানুয়ারি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার সুযোগ পায় দলটি। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের দুই বছর পূর্তিতে ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ উপলক্ষে সেই সমাবেশ করে বিএনপি।

বিএনপিকে শর্ত দিয়ে অনুমতি দেয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দেয়া এক বক্তব্যের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, ‘তিনি (ওবায়দুল কাদের) বলেছেন বিএনপি যেহেতু সব সমাবেশে নিজেদের মধ্যে কোন্দল সৃষ্টি করে সেহেতু শর্ত দেয়া হয়। এটা পুরোপুরি মিথ্যা, ভিত্তিহীন। আমাদের সমাবেশে কখনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।। বরং তাদের সমাবেশে নিজেদের মধ্যে কোন্দল হচ্ছে, গোলমাল হচ্ছে এমনকি হত্যা পর্যন্ত করছে।’

তিনি ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে অনুরোধ করবো অনুগ্রহপূর্বক ভিত্তিহীন কথা না বলে আমরা যে গণতান্ত্রিক পরিবেশে ফিরে যাওয়ার জন্য যে চেষ্টা করছি, উদ্যোগ গ্রহণ করছি সেই প্রক্রিয়ায় সরকারি দলকে আনার জন্য চেষ্টা করছি সেই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে পজিটিভ কথা বলুন। নেতিবাচক-উস্কানিমূলক কথা বলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে দয়া করে ব্যাহত করবেন না।’

৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এ সমাবেশ করছে বিএনপি। প্রথমে তারা ৮ নভেম্বর করার কথা বললেও পরে ১০ নভেম্বর শরিবার করার জন্য অনুমতি চায়। পরবর্তিতে নিজেরাই আবার একদিন পিছিয়ে রবিবার করার সিদ্ধান্ত নেয়।

সূত্র: (ঢাকাটাইমস)

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin