২০২৩ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার রোড ম্যাপ করছে বিএনপি?

‘আগামী দিনের বিএনপির নেতৃবৃন্দ’ এই শিরোনামে লন্ডনে বিএনপির পলাতক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া সারাদেশে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। গত এক সপ্তাহে ১২টি জেলার তরুণ এবং সম্ভাবনাময় বিএনপি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তারেক জিয়া।

এই যোগাযোগে তিনি দীর্ঘক্ষন কথাবার্তা বলেছেন, বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছেন এবং বিএনপির একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন বলে জানা গেছে। এই তরুণ নেতৃবৃন্দকে প্রস্তুত হয়ে আগামী দিনের বিএনপি`র নেতৃত্ব নেয়ার জন্য তারেক পরামর্শ দিয়েছেন বলেও একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী এবং খুলনার বিভিন্ন জেলার প্রতিবৈঠকে বিভিন্ন জেলার ২০ জন করে তরুণ নেতারা এসব বৈঠকে অংশ গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে। এরা সবাই ছাত্রদল, যুবদল অথবা বিএনপির তরুণ কর্মী হিসেবে পরিচিত। এই সমস্ত ব্যক্তিদেরকেই তিনি আগামীর বিএনপির নেতা হিসেবে সম্বধন করেছে বলে জানা গেছে।

এরকম একটি বৈঠকে উপস্থিত বিএনপির এক তরুণ নেতা জানিয়েছেন, বিএনপি এখন মধ্যবর্তী নির্বাচন চায়না। বরং বিএনপি ২০২৩ সালে ক্ষমতায় আসার একটি রোড ম্যাপ তৈরি করছে। একাধিক সুত্রগুলোতে জানা গেছে, এসব বৈঠকগুলোতে বিএনপির রোডম্যাপ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা পাওযা গেছে।

এই রোড ম্যাপের মধ্যে রয়েছে, চলতি বছরকে ধরা হয়েছে  warm-up বছর হিসেবে। অর্থাৎ বিএনপির প্রস্তুতি করবে এবং সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম সভা-সমাবেশ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবে। সরকারের প্রতি তাদের অনাস্থা কে সুস্পষ্ট করবে। ২০২১ সালকে বিএনপি ধরেছে সাংগঠনিক বছর হিসেবে।

এই বছরে বিএনপি তাদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বসহ স্থানীয় পর্যায়ে নেতৃত্বে পরিবর্তন আনবে। তরুণ সম্ভাবনাময় দলের জন্য কাজ করতে পারে এরকম ব্যক্তিদেরকে নেতৃত্বে আনার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ২০২১ সালের মধ্যে। পাশাপাশি এই সময়ে বিএনপি সরকারের বিরুদ্ধে আরো সোচ্চার হবে। ঘরোয়া কর্মসূচী অর্থাৎ বক্তৃতা বিবৃতির মাধ্যমে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করবে।

তবে বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, যে এই সময়েও বিএনপি বড় ধরনের কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন কর্মসূচিতে যেতে আগ্রহী নয়। তারা পুরো ২০২১ সালটিকে সাংগঠনিক বছর হিসেবে পালন করতে চায়। এর মাধ্যমে তারা নতুন নেতৃত্বের জন্য দলকে প্রস্তুত করতে চায়।

২০২২ সালকে ধরা হয়েছে নির্বাচন প্রস্তুতি হিসেবে। এ বছরে তারা ৩০০ আসনে কারা কারা সম্ভাব্য প্রার্থী হবে তার চূড়ান্ত করতে চায়। এসমস্ত সম্ভাব্য প্রার্থীরা জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করবেন যোগাযোগ করবে। নীরবে নির্বাচনী প্রচারণার কাজ শুরু করবে।

আর ২০২৩ সালকে ধরা হয়েছে ক্ষমতায় যাওয়ার বছর। এই সময় বিএনপি এমন একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করবে যে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করেও তারা ক্ষমতায় যেতে পারবে।

এই নেটওয়ার্কে বিনপির একদিকে যেমন ৩০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করবে। তেমনি ভাবে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করবে। প্রশাসন যেন ওই সময়ে বিএনপিকে সহযোগিতা করে সেটি নিশ্চিত করবে।

বিএনপির একাধিক সূত্র বলছে যে, তারেক জিয়া ২০২৩ কে টার্গেট করেই প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য এগোচ্ছে। এখনই সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আন্দোলন বা মধ্যবর্তী নির্বাচনের ইত্যাদি বিতর্কের মধ্যে না যেয়ে নীরবে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়া নির্দেশনা দিয়েছেন।

সূত্র আরো বলছে যে, তারা মনে করছে ,২০২৩ সালটি হবে বিএনপির উত্থানের বছর। এর মধ্য দিয়ে একদিকে যেমন বিএনপির নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে। তেমনি বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা এবং জনপ্রিয়তা বাড়বে।

এতে তাদের ক্ষমতায় আসার পথ সুগম হবে। কিন্তু এধরনের রোডম্যাপ কতটুকু বাস্তবসম্মত, বিশেষ করে তাদের প্রধান নেতা যেহেতু দণ্ডিত এবং দ্বিতীয় প্রধান নেতা দণ্ডিত হয়ে লন্ডনে পলাতক সেহেতু বিএনপি আসলেই অভিভাবকহীন ভাবে সাংগঠনিক শক্তি নিয়ে কতটুকু দাঁড়াতে পারবে, সে প্রশ্ন বিএনপির মধ্যেই রয়েছ …

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin