kader_01

‘হাসিনা হাসিনা’ করলে সংলাপ কীভাবে হবে: কাদের

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম সম্বোধন করার সময় বিএনপির চেয়ারপারসন ও তার দলের নেতারা অসৌজন্যের পরিচয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, তারা এর মাধ্যমে পরিবেশ নষ্ট করছেন। তাদের সঙ্গে সংলাপ হবে কীভাবে!

বুধবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ঢাকা জেলা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন মন্ত্রী।

আগামী নির্বাচনী সরকার নিয়ে বিএনপি কী চায় সেটা্ তারা জানে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন সেতুমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বিএনপি আজ নির্দলীয় সরকারের কথা বলে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা বলে, সহায়ক সরকারের কথা বলে। আমি জানতে চাই তারা আসলে কোনটা চায়? তত্ত্বাবধায়ক, সহায়ক, নির্দলীয়- রূপরেখাটা কী। অন্ধকারে ঢিল ছুড়ছে তারা। একেকবার একেক দাবি তুলে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আজকে বিএনপির কেউ বলে, যেকোনো পরিস্থিতিতে তারা নির্বাচনে যাবে। আরেক দল নেতা বলেন হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, যারা বাংলাদেশের রাজনীতিতে কর্মপরিবেশ চান, গণতান্ত্রিক পরিবেশ চান, সংলাপ চান, তারা বেগম খালেদা জিয়ার অসৌজন্যমূলক সম্বোধন বন্ধ করতে পারবেন?’

খালেদা জিয়া বারবার শেখ হাসিনাকে ‘হাসিনা’ বলে সম্বোধন করেন- এমন অভিযোগ করে আওয়ামী লগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তার (খালেদা) সঙ্গে ওনার কিছু নেতাও তাল মিলিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ‘হাসিনা’ বলে বিষোদগার করেন। এটা আমরা আওয়ামী লীগের নেতাদের মনে আঘাত করে। আমরা তো তা করি না। আমরা খালেদা জিয়ার আগে ‘বেগম’ সম্বোধনটা পর্যন্ত যুক্ত করি। তার নামের সৌজন্যবোধের সীমা আমরা অতিক্রম করি না।’

বিএনপি পরিবেশ নষ্ট করছে দাবি করে কাদের বলেন, ‘তাদের সঙ্গে সংলাপ হবে কেমন করে! আপনারা হাসিনা হাসিনা বলবেন আর আমরা জুঁই ফুলের গান গাইব? সন্তানহারা শোকার্ত মাকে সান্ত্বনা দিতে প্রধানমন্ত্রী যখন বেগম জিয়ার বাড়িতে গিয়েছিলেন, তখন মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। ওটা কি সংলাপের পরিবেশ?’

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম জিয়া এখন বলেন, ক্ষমা করে দেবেন। কে কাকে ক্ষমা করে দেবে? ক্ষমার নমুনা তো আছে। ২১ আগস্ট শেখ হাসিনাকে ক্রাইম টার্গেট করে হত্যার পরিকল্পনা, এটা কি ক্ষমার নমুনা নয়?’ খালেদা জিয়ার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কী ধরনের ক্ষমা আপনারা চান? আপনারা ক্ষমা করবেন, কে আপনার কাছে ক্ষমা চাইল?’

সংবর্ধনার নামে সড়কে যানজট বাঁধানো বন্ধের জন্য ছাত্রলীগের নেতাদের পরামর্শ দেন সংগঠনটির সাবেক এই সভাপতি। মন্ত্রী বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশের নামে কী তাণ্ডবই না করেছে বিএনপি! রাস্তাঘাট অচল করে দিয়েছে। কক্সবাজার যাওয়ার সময় পথে পথে সংবর্ধনার নামে রাস্তা অচল। বেগম জিয়া বিদেশ থেকে এসে এয়ারপোর্ট থেকে গুলশান পর্যন্ত রাস্তা অচল। আমরা তো দশ গুণ বেশি, তাও তো কর্মীদের রাস্তায় নামতে দেইনি। রাস্তার পাশে সবাই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে ছিল, আমাদের সমাবেশেও কেউ রাস্তায় নামেনি।’

ছাত্রলীগের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘ছাত্রলীগ মাঝে মাঝে খারাপ খবরের শিরোনাম হয়। আমাদের কষ্ট হয়, লজ্জা পাই। ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর সংগঠন। এখানে যারা যোগ্য ও মেধারী তারাই নেতৃত্ব দেবে। কোনো বহিরাগত, অনু্প্রবেশকারী, চাঁদাবাজ ও অপরাধীদের ছাত্রলীগে প্রয়োজন নেই। এই গুটিকয়েকের খারাপ কাজের দায় আওয়ামী লীগ সরকার নিতে পারে না।’

ছাত্রলীগকেই আগামী ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনে নেতৃত্ব দিতে হবে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাধারণ মানুষের মনে কষ্ট দেবে না। এখনই সময় যাদের মনে কষ্ট দিয়েছ, তাদের কাছ ক্ষমা চাও। জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে লজ্জা নেই।’

সময়মতো ছাত্রলীগের সম্মেলন না হওয়ারও সমালোচনা করেন ওবায়দুল কাদের। সাড়ে চার বছর পর আজকে এই সম্মেলন হচ্ছে। কিন্তু এটা হওয়ার কথা ছিল দুই বছর পরপর। তিনি বলেন, আজকের নেতৃত্বের যে ট্রাফিক জ্যাম, এটা হতো না যদি সময়মতো সম্মেলন হয়ে আরো এক সেট নেতৃত্ব বেরিয়ে আসত।’

দলের সাংগঠনিক কাজ সহজ করতে ঢাকা জেলা ছাত্রলীগকে উত্তর ও দক্ষিণ দুই ভাগে ভাগ করা হবে বলে জানান আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি জানান, উভয় অংশের প্রস্তাবিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে পৌঁছে যাবে। ১৮ তারিখ নাগরিক কমিটির সমাবেশের পর এই কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে দুই জেলার কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে বলে জানান তিনি।

ঢাকাটাইমস

পাগলে কি না কয়: খালেদাকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী

কক্সবাজারে সফরে গিয়ে রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কড়া সমালোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, ‘গ্রামে একটা কথা আছে, পাগলে কি না কয়, ছাগলে কি না খায়। চোখ থাকিতে যে অন্ধ তাকে দেখাবে কে? এটা হচ্ছে একটা অনুভূতি ও বোধের ব্যাপার। তিনি যেভাবে ঢোল-বাদ্য বাজিয়ে রোহিঙ্গাদের দেখতে গেলেন। তিনি কি দুর্গত মানুষকে দেখতে গেলেন নাকি বরযাত্রী দেখতে গেলেন এটা আমাদের বোধগম্য নয়।’

বুধবার বিকালে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পীর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।গত ৩০ অক্টোবর খালেদা জিয়া কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গাদের দেখতে যান। সেখানে দেয়া বক্তব্যে তিনি রোহিঙ্গাদের জন্য সরকারের উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এছাড়া রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে সরকার কূটনৈতিভাবে ব্যর্থ বলেও মন্তব্য করেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

খালেদা জিয়া সবকাজে ব্যর্থ হয়েছেন দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যিনি নিজে সব কাজে ব্যর্থ হন তিনি তো সবকিছুতে ব্যর্থতা দেখবেন এটাই স্বাভাবিক। তিনি নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। মানুষ পুড়িয়ে আন্দোলন করে সরকারকে সরাতেও ব্যর্থ হয়েছেন। বহু ব্যর্থতার ইতিহাস তার আছে। এমনকি ক্যান্টনমেন্টের বাড়িও হারালেন। অঝোর ধারায় কেঁদেও বাড়ি রক্ষা করতে ব্যর্থ হলেন। বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ একশ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না।

আমি নাকি প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা বিরোধী দলীয় নেতাও হতে পারবো না। অথচ আমি তার এই বক্তব্যের পর দুই দুইবার প্রধানমন্ত্রী হয়েছি।’ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা বিএনপি-জামায়াতের কাজ এমন দাবি করে তিনি বলেন, ‘তার এই বক্তব্য আমি ধর্তব্য হিসেবে নিই না। আমরা মানবিক দৃষ্টিতে দেখছি। তাদের কথায় গুরুত্ব দেয়ার কিছু নেই।’তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি নজিবুল বাশার মাইজভান্ডারীর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনো রোহিঙ্গা অপরাধে জড়িত হয় তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।’

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের মধ্যে যদি কেউ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয় তাহলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।’এর আগে কক্সবাজারের সরকার দলীয় সংসদ আব্দুর রহমান বদির এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গাদের আসার কারণে কক্সবাজারের স্থানীয় যেসব মানুষ ক্ষতির শিকার হচ্ছেন তাদেরকে সরকার সহযোগিতা করবে।

ঢাকাটাইমস

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin