KHALEDA_ZIA

হঠাৎ ভিআইপি খালেদা জিয়া!

বর্তমান সরকারের আমলে বেগম খালেদা জিয়াকে জোর করে বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পর সরকারি সিকিউরিটিও তুলে নেওয়া হয়েছিল। সেই খালেদা জিয়াকেই অনেক দিন পর পুলিশ পাহারায় ভিআইপি প্রটোকলের মতো নিরাপত্তা দিয়ে আদালত থেকে তার বাসায় দিয়ে আসা হয়!

দুর্নীতির মামলায় হাজিরা শেষে বেগম খালেদা জিয়া এতদিন যে পথে বাসায় ফিরতেন, আজ তার বদলে অন্য এক পথে সড়ক বন্ধ রেখে নির্বিঘ্নে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।

এসময় খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে পুলিশের নিরাপত্তাও ছিল চোখে পড়ার মতো। গাড়ির সামনে ছিল পুলিশের বেশ কয়েকটি গাড়ি। পেছনে ছিল র‌্যাবের মোটরসাইকেলের বহর।

বৃহস্পতিবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় যুক্তি উপস্থাপন শেষে এই চিত্র দেখা গেছে। এদিন অন্য দিনগুলোর তুলনায় একটু আগেই বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া।

এতদিন বকশিবাজারের বিশেষ জজ আদালতে হাজিরা শেষে হাইকোর্টের সামনের সড়ক ব্যবহার করে গুলশানের বাসায় ফিরতেন তিনি। তবে আজ তার যাত্রাপথ ছিল চানখারপুল, গুলিস্তান হয়ে কাকরাইল মোড় হয়ে গুলশান।

এতে করে দিনভর বকশিবাজার মোড়, ঢাকা মেডিকেল মোড়, চানখারপুল, বঙ্গবাজার, গুলিস্তান মাজার, জিপিও এলাকায় পুলিশের সতর্ক পাহারা লক্ষ্য করা গেছে। বঙ্গবাজার মোড়ে উড়ালসড়কের নীচে দুইদিকের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। ফুলবাড়িয়া মোড়েও যানবাহন আটকে রাখে পুলিশ। খালেদা জিয়ার গাড়িবহর পল্টন মোড় পার হওয়ার পর এই সড়কের যানবাহন ছেড়ে দেয় পুলিশ।

এদিকে গত ৩০ জানুয়ারি খালেদা জিয়া ফেরার পর হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের সাথে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় আটক দুই নেতাকে ছিনিয়ে নিতে কর্মীরা প্রিজন ভ্যানে হামলা করে। দরজা ভাঙচুর করে ছিনিয়ে নেয়া হয় ২ নেতাকে, ভেঙে দেয়া হয় পুলিশের একটি অস্ত্র।

পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযানে বিএনপির ৬৯ জন নেতা-কর্মী এবং পরে স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ কেন্দ্রীয় কমিটির বেশ কয়েকজন নেতাকে আটক করা হয়েছে।

পরদিনও খালেদা জিয়ার ফেরার পথে জড়ো হয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকেও আটক করা হয় বেশ কয়েকজনকে। এর আগেও নানা সময় খালেদা জিয়ার ফেরার পর বিএনপির নেতা-কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছে, ভাঙচুর করেছে যানবাহন।

আজ খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরার আগে থেকেই তার যাত্রাপথে নিরাপত্তা কয়েক গুণ বাড়ানো হয়। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাবের বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করা হয়। আদালতের আশপাশের বাড়িঘরের ছাদে দূরবীন দিয়ে মোতায়েন করা হয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের। আবার আদালত চত্বরে তালিকাভুক্ত আইনজীবী ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেয়া হয়নি।

নিরাপত্তার বিষয়ে পুলিশের একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা বলেন, গত ২ দিন বিএনপি চেয়ারপারসনের আদালত থেকে ফেরার পথে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের উপর হামলা হয়েছে। তাই কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলতার সৃষ্টি না হয় সেজন্য বাড়তি সতর্কতা নেয়া হয়েছে।

তবে খালেদা জিয়াকে নিয়ে ভিন্ন পথে রওয়ানা হওয়ার খবরও জেনে যায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা। তারাও এই পথে জড়ো হয়। যদিও অন্য দিনগুলোর তুলনায় তাদের সংখ্যাটা ছিল কম। বকশিবাজার থেকে বঙ্গবাজার পর্যন্ত গাড়িবহরের সঙ্গে নেতাকর্মী ছিল না একেবারেই। তবে বহরে গুলিস্তান থেকে বাড়তে থাকে নেতাকর্মীর সংখ্যা।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin