সোমবার বেলা প্রায় আড়াইটা। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে একটি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিয়ে বের হন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মিলনায়তনের পূর্ব পাশ দিয়ে বের হয়ে দক্ষিণ পাশে অপেক্ষারত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেন তিনি। কথা শেষে মানুষের জটলা ঠেলে সামনে না এগিয়ে পেছনে উত্তর দিকে গিয়ে ডানে মোড় নিয়ে আবার ডানে ঘুরলেন। এভাবে উৎসুক মানুষের জটলা এড়িয়ে যান তিনি।
এসময় বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে দু-চারজন যারা ছিলেন, তাদের মধ্যে দলের চেনা কাউকে দেখা যায়নি। অনুষ্ঠান সংশ্লিষ্ট কয়েকজন নবীন পিছু নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন প্রবীণ এই রাজনীতিকের সঙ্গে সেলফি তোলার। সামনে তিনি হাঁটছেন, বলা যায় একাই হাঁটছেন।
তবে উপরে উঠতে গেলে সিঁড়িতেই দেখা হয়ে যায় দলের যুগ্ম-মহাসচিব সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক এএম মাহবুব উদ্দিন খোকনের সঙ্গে। তিনি সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামছিলেন।
দুই নেতার মধ্যে কয়েক সেকেন্ড কথা হতেই সিঁড়ি দিয়ে উপরের দিকে উঠে এলেন দলের আরেক কেন্দ্রীয় নেতা সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন।
সমিতি ভবনের দোতলায় তিনজনের মধ্যে একটু-আধটু কথা শেষে আবার একা চলতে শুরু করলেন মির্জা ফখরুল। কয়েক কদম দূরত্বে সভাপতির কক্ষ ও সম্পাদকের কক্ষ। তবে তাদের কক্ষে প্রবেশ করলেন না তিনি।
পিছু নেয়া তরুণদের কাছে জানতে চাইলে পরিবর্তন ডটকমকে তারা বলেন, জয়নুল আবেদীন ও মাহবুব উদ্দিন খোকন মির্জা ফখরুলকে অনুরোধ করেছিলেন তাদের কক্ষে প্রবেশ করার জন্য। কক্ষে বসে একটু চা-কফি পান করে যাওয়ার অনুরোধও করেন তারা। তবে তিনি বিনয়ের সঙ্গে তাদের দাওয়াত ফিরিয়ে দেন। কোথায় কার কাছে যাবেন- তাদের এমন জিজ্ঞাসায় ফখরুল বিনয়ের হাসি হেসে শুধু বললেন, ‘উপরে’।
পরে জানতে চাইলে মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, হ্যাঁ, সিঁড়িতে উনার সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি (মহাসচিব) আমার কক্ষে আসেননি। উপরে গেছেন।
তাদের কাছ থেকে বিদায় নেয়ার পর দোতলায় সমিতির এক নম্বর হলের পাশ দিয়ে পশ্চিম দিকে এগোলেন ফখরুল। তরুণদের আবার অনুরোধ করলেন পিছু না নিতে। এবার তরুণরাও হাল ছেড়ে দিয়ে চলে গেল।
ডানে মোড় নিয়েই আরেক সিঁড়ি দিয়ে নিচে নেমে গেলেন ফখরুল। এবার এগোলেন উত্তর দিকে শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনের পশ্চিম পাশ দিয়ে। বামে মোড় নিয়ে এগোলেন মসজিদের দিকে।
তবে তার আগেই দাঁড়িয়ে পড়লেন লিফটের সামনে। উঠে গেলেন উপরে। লিফট থেকে নেমে তিনি সোজা চলে গেলেন এনেক্স ভবনের ৩০৩৮ নম্বর কক্ষে। এটি বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আইনজীবী মো. ফজলুর রহমানের কক্ষ।
সাবেক এই সংসদ সদস্যের সঙ্গে ১৫-২০ মিনিট সময় কাটালেন মির্জা ফখরুল। অবশ্য এ সময় তাদের মধ্যে কী কথা হয়েছে তা জানা যায়নি।
গত ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে হেরে যাওয়া প্রবীণ এই রাজনীতিবিদ বললেন, ‘মহাসচিব মহোদয় এমনিতেই এসেছিলেন। কফি খেতে এসেছিলেন। বিষয় তেমন কিছু না।’
তিনি কফির দাওয়াত দিয়েছিলেন নাকি মহাসচিব নিজেই কফি পান করতে এসেছিলেন- এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে কেবল হাসলেন আওয়ামী লীগের রাজনীতি থেকে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ হয়ে বিএনপিতে আসা এই রাজনীতিক।