স্পিকার বা রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নির্বাচন চায় ড. কামাল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদলে স্পিকার অথবা রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার চান ড. কামাল হোসেন। বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের কাছে এমন বার্তাই দিয়েছেন জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের আহ্বায়ক। অন্তত: ৩টি দেশের কাছে ড. কামাল হোসেনের নির্বাচনে যাওয়া সম্পর্কিত নূন্যতম শর্ত সংক্রান্ত বার্তা গেছে। এই তিনটি দেশ হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং যুক্তরাজ্য।

কূটনীতিক সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, এই তিনটি দেশের পক্ষ থেকেই ড. কামাল হোসেনের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, নূন্যতম কি হলে ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে যাবে? এর জবাবে, ড. কামাল হোসেন নূন্যতম ৪টি দাবি অর্জিত হলে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব বলে মত দিয়েছেন। এই ৪টি দাবি হলো:

১. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিতে হবে।

২. নির্বাচনকালীন সময়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন অথবা ছুটিতে যাবেন। কোনো নিরপেক্ষ ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রী না হলেও বিদায়ী সংসদের স্পিকার অথবা রাষ্ট্রপতির নেতৃত্বে নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হতে হবে।

৩. বিরোধী দলের ওপর রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। রাজনৈতিক হয়রানির কারণে আটক নেতা কর্মীদের ছেড়ে দিতে হবে।

৪. নির্বাচন কমিশনের সংস্কার করতে হবে এবং সকলের কাছে আস্থাভাজন ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ দিতে হবে।

ড. কামাল হোসেনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই ৪টি দাবি অর্জিত হলে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের নির্বাচনে যেতে কোনো আপত্তি থাকবে না। উল্লেখ্য, ড. কামাল হোসেন যে ৪ দফা দাবি দিয়েছেন, তাতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গটি নেই। জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের ৭ দফা দাবির অন্যতম ছিল বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি।

এছাড়াও ৭ দফা দাবিতে ইভিএম বাতিল এবং নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের বিষয়টি ছিল। ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো বলছে, যেহেতু সরকারই এখন ইভিএম ব্যবহারে আগ্রহী নয়, তাই এই দাবিটি তিনি আর করছেন না। সেনা মোতায়েনের বিষয়টিও সরকারের এখতিয়ারভুক্ত বিষয় নয় বলেই ড. কামাল হোসেন মনে করেন। এই দাবিটি সরকারের কাছে না করে নির্বাচন কমিশনের কাছেই করা উচিত বলে তিনি মনে করেন।

আর ৭ দফা দাবিতে থাকলেও বেগম জিয়ার মুক্তি প্রসঙ্গটি ড. কামাল হোসেন এড়িয়ে যাচ্ছেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের দুটি সমাবেশের একটিতেও ড. কামাল বেগম জিয়ার মুক্তির প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেননি। জানা গেছে, সুশীল সমাজের পরামর্শেই তিনি এই প্রসঙ্গটি এড়িয়ে যাচ্ছেন। ড. কামাল হোসেন বিএনপির শুধু জনপ্রিয়তা এবং সমর্থনটুকু নিতে চাইছেন।

বিএনপির সমালোচনার দায় কাঁধে নিতে চাইছেন না। ড. কামাল হোসেনের ঘনিষ্ঠরা বলেছেন, কূটনীতিকদের কাছে ৪ দফা দাবি দিলেও, শুধুমাত্র শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীত্ব থেকে সরে গেলেই জাতীয় ঐক্য ফ্রন্ট নিয়ে নির্বাচনে যেতে রাজি তিনি।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin