khaleda_zia

স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন খালেদা জিয়া

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। কাল রোববার রাতে গুলশান কার্যালয়ে ওই বৈঠক হবে। আজ শনিবার বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, স্থায়ী কমিটির ওই বৈঠকে দুটি বিষয়কে প্রাধান্য দিয়ে মূল আলোচনা হবে। একটি হচ্ছে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বক্তব্যে সহায়ক সরকার ও বিএনপির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ এবং আরেকটি হচ্ছে মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুতে সম্ভাব্য ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এ ছাড়া সাংগঠনিক অবস্থা, রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিষয়েও আলোচনা থাকবে।

ইতিমধ্যে স্ট্যান্ডিং কমিটির সব সদস্যকে উপস্থিত থাকার জন্য চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।

prothom-alo

ক্ষমা না চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা: মির্জা ফখরুল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তাঁর সন্তানদের সৌদি আরবে শপিংমল ও কাতারে বাণিজ্যিক ভবনের মালিকানার যে তথ্য দিয়েছেন, তা নাকচ করে দিয়ে এটাকে সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বলেছে বিএনপি।

আজ শুক্রবার সকালে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক করে তিনি বলেন, ‘কাচের ঘরে বসে অন্যের ঘরে ঢিল ছুড়বেন না। বেআইনি মিথ্যা তথ্য প্রচার বন্ধ করুন এবং এই মানহানিকর মিথ্যা তথ্য প্রচারের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করুন। অন্যথায় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে আমরা বাধ্য হব।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গতকাল অনৈতিক ও অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কল্পিত পাচারকৃত সম্পদ সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সর্বৈব মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। দুর্নীতির এইসব কল্পকাহিনির মূল উদ্দেশ্য খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা এবং রাজনৈতিকভাবে জনগণের কাছে হেয়প্রতিপন্ন করার অপচেষ্টা।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী কানাডাভিত্তিক একটি কথিত টেলিভিশন চ্যানেলের বরাত দিয়ে অপরিচিত কয়েকটি অনলাইন মাধ্যমে এই মিথ্যা তথ্য রটনা করা হয়েছে যে, খালেদা জিয়া ও তাঁর সন্তানেরা সৌদি আরবের ‘আল আরাফা’ শপিংমল এবং কাতারে বাণিজ্যিক ভবন ‘তিনারাট’ এ বিনিয়োগ করেছেন। আরাফাত রহমান কোকো কাতারে ‘ইকরা’ নামের একটি বহুতল ভবনের মালিক। আরবসহ ১২টি দেশে জিয়া পরিবারের ১২ বিলিয়ন ডলারের (প্রায় এক লাখ কোটি টাকা) সম্পদ রয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সৌদি আরবে খোঁজ নিয়েছি, গুগলে অনুসন্ধান করে দেখেছি, এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের কোনো অস্তিত্ব নেই। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে খালেদা জিয়া ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে তারা ক্যাম্পেইন শুরু করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি ও প্রতিবাদ করছি এবং অবিলম্বে এই ধরনের মানহানিকর মিথ্যা বক্তব্য প্রত্যাহার করে খালেদা জিয়া এবং জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে ভবিষ্যতে এ ধরনের অশালীন, রুচিবিবর্জিত, রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত মিথ্যা বক্তব্য প্রদানে বিরত থাকতে আহ্বান জানাচ্ছি।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘দায়িত্বশীল গণমাধ্যম স্বাভাবিকভাবেই কল্পিত এইসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করে খবর প্রকাশ করেনি। সেই কারণে প্রধানমন্ত্রী শিষ্টাচারবিবর্জিত অশালীন ভাষায় গণমাধ্যমকে তিরস্কার করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ধরনের মিথ্যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বক্তব্য শুধু অশালীন নয়, এটা বেআইনি ও শাস্তিযোগ্য। খালেদা জিয়া, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর বিরুদ্ধে সম্পদের কল্পকাহিনি জোর করে গণমাধ্যমে প্রচারের অপচেষ্টা শুধু শেখ হাসিনার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও দেউলিয়াপনাই প্রমাণ করে।’

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, উন্নয়ন, মেগা প্রজেক্টের নামে যে মেগা লুট করছেন, জনগণ তা জানেন। পদ্মা সেতু প্রকল্প, রূপপুর আণবিক শক্তি প্রকল্প, পায়রা বন্দর, এক্সপ্রেসওয়ে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ভিওআইপি, স্যাটেলাইট স্টেশন প্রতিটি সেতু, সড়ক, মহাসড়ক, প্রতিটি আন্তর্জাতিক টেন্ডারে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লুটের যে অভিযোগ উঠছে, জনগণ তা হিসাব রাখছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশ বিদেশের পত্রপত্রিকায় আপনাদের দলের মন্ত্রী, নেতা ও পরিবারে সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। কানাডার বেগমপাড়া, ব্রিটেন, আমেরিকা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, বেলারুশ, সুইস ব্যাংক, পানামা অবশোর ইনভেস্টমেন্ট তালিকায় আপনাদের অনেকের নাম উঠে আসছে। ফ্লোরিডা, ওয়াশিংটন ডিসি, সিএটল বাফেলো, আমেরিকা, কানাডাসহ ব্যয়বহুল শহরগুলোতে কাদের সন্তানদের এবং পরিবারে সদস্যদের নামে বাড়ি ও সম্পদ কেনা হয়েছে, তার হিসাব জনগণ রাখছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সিদ্ধান্তের নিন্দা জানান। তিনি অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ফিলিস্তিনিদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন।

prothom-alo

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin