সৌদি আরবে জিয়া পরিবারের ১২’শ কোটি ডলারের বিনিয়োগের খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার দুপুরে জাতীয় কল্যাণ পার্টির ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কম্বোডিয়া থেকে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের একহাত নিলেন। তারা নাকি সৌদি আরবে জিয়া পরিবারের ১২’শ কোটি ডলারের বিনিয়োগের খবর প্রকাশ করেনি।
আমরা দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এই খবরের বিষয়ে আলাপ করেছি। কেউ কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি। কারণ খবরটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।’
মির্জা ফখরুলের অভিযোগ— ‘বর্তমান সরকার মিথ্যাচারের রাজনীতি করে। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্য যা কিছু দরকার তাই করছে। যে ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছে তাকেই গুম করে দেওয়া হচ্ছে।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেছেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন আর চায় না। আগামী নির্বাচন হতে হবে নিরপেক্ষ, কোনও দলীয় সরকারের অধীনে নয়।’
সবার সঙ্গে কথা বলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল। এই সভায় আরও ছিলেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম বীরপ্রতীক ও দলের শীর্ষপর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
উৎসঃ purboposhchim
বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে: খালেদা
জনগণের মিলিত কণ্ঠের আওয়াজ তুলে বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে এখন ভয়াবহ দুঃসময় বয়ে চলছে। ৫ জানুয়ারির একতরফা নির্বাচনের পূর্বাপর বাংলাদেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়েছে।
বর্তমান অবৈধ ক্ষমতাসীন জোট সীমাহীন রক্তপাত ও বেপরোয়া নিপীড়ন নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সকল গণতান্ত্রিক অধিকারকে হরণ করে নিয়েছে।’শনিবার (০৯ ডিসেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন। জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে খালেদা জিয়া এ বাণী দেন।
খালেদা জিয়া বলেন, ‘মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার মানবাধিকারের পরিপূরক। অথচ বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের মানবাধিকার শূন্যের নিচে অবস্থান করছে। এদেশে শুধু মাত্র বিরোধীদলের নেতাকর্মীরাই শুধু নয়, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী, ছাত্র, শিক্ষক, শ্রমিক, নারী, শিশুসহ কারোই কোন নিরাপত্তা নাই। এদের অধিকাংশই গুম, গুপ্তহত্যা এবং বিচারবহির্ভূত হত্যার শিকার হচ্ছেন।’
‘সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই বিরোধীদলের নেতাকর্মীরা ছাড়াও দল নিরপেক্ষ রাজনৈতিক বিশ্লেষক, টকশো আলোচকদের বিরুদ্ধেও মিথ্যা মামলা দায়ের করা হচ্ছে এবং কাউকে কাউকে কারান্তরিনও করে রাখা হয়েছে।’সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মানবাধিকার দিবসের এ বছরের মূল প্রতিপাদ্য হচ্ছে “আমাদের অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা, সর্বদা”।
কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশে জনগণের না আছে নাগরিক স্বাধীনতা, না আছে মৌলিক মানবিক অধিকার। তাই এই নৈরাজ্যকর দুঃশাসনের ছোবল থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের এই মূহুর্তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তার জন্য জনগণের মিলিত কণ্ঠের আওয়াজ তুলে বর্তমান অপশাসনের অবসান ঘটাতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর ১০ ডিসেম্বর মানবাধিকার দিবস পালিত হয়ে আসছে। এই দিনে আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মৌলিক মানবিক অধিকার হারা নির্যাতিত মানুষের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি।
যারা বাক, ব্যক্তি, চিন্তা, প্রার্থনা, মুদ্রণসহ নাগরিক স্বাধীনতার জন্য সোচ্চার হতে গিয়ে ক্ষমতাসীন স্বেচ্ছাচারী গোষ্ঠীর নৃশংস নিপীড়নে আত্মদান করেছেন তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা।’‘আজও বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে মানুষ
একদলীয় স্বেচ্ছাচারী শাসন, গোষ্ঠী, বর্ণ ও জাতিগত সংঘাতে অবলীলায় খুন ও গুপ্তহত্যার শিকার হচ্ছে এবং অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছে অসংখ্য মানুষ’, বলেন তিনি।
বিএনপি প্রধান বলেন, ‘জাতিসংঘের সার্বজনীন ঘোষণায় বলা হয়েছে বিশ্বের সব জাতির সকল মানুষের মানবাধিকার সংরক্ষণের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। কিন্তু দেশে দেশে নিষ্ঠুর স্বৈরাচারী শাসকেরা জাতিসংঘ কর্তৃক মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণার নির্দেশনাগুলোকে তাচ্ছিল্য করে নিজ দেশের জনগণের উপর চালিয়ে যাচ্ছে বর্বরোচিত আক্রমণ।
শুধুমাত্র ক্ষমতাকে চিরস্থায়ীভাবে ধরে রাখার জন্য জনমতকে অগ্রাহ্য করতে হয়, আর সে জন্য এই সকল গণবিরোধী শাসক গোষ্ঠী জনগণের মানবাধিকারের তোয়াক্কা করে না।’
ব্রেকিংনিউজ