bnp-flag

সেনাবাহিনীকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় না রাখার ষড়যন্ত্র হচ্ছে

আরেকটি প্রহসনের নির্বাচন করতে ক্ষমতাসীনেরা সেনাবাহিনীকে নির্বাচন প্রক্রিয়ার বাইরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতারা। তাঁরা বলেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে ভোটের শর্ত পূরণ না হলে বিএনপি জাতীয় নির্বাচনে যাবে না।

আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে পৃথক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এসব কথা বলেন।

মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির আলোচনা সভায় মওদুদ আহমদ বলেন, ‘সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আমরা অংশ গ্রহণ করব। তার মানে এই নয় যে জাতীয় নির্বাচনেও আমাদের একই শর্তে অংশগ্রহণ করতে হবে। ভবিষ্যতে একদলীয় নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না।’ তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের ৯০ দিন আগে সংসদ ভেঙে দিতে হবে। সংসদ রেখে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আরেক আলোচনা সভায় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যদি সেনাবাহিনীকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা না হয়, তাহলে সুস্থ মস্তিষ্কে সেই নির্বাচনের দিকে যাওয়াটা বিপজ্জনক হবে। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচনী দায়িত্বে মোতায়েন করতে হবে। এর বাইরে কোনো ধরনের নির্বাচন প্রক্রিয়া এ দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।

সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতার দুটি দিক আছে। একটি হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার ক্ষমতা, অন্যটি বিচার করার ক্ষমতা। আমরা বিচার করার ক্ষমতার কথা বলছি না, আমরা ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাটা দিতে বলছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য।’

দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আরেক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, তারেক রহমান দূরে বসেও তাঁর রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করছেন।

বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম এ আলোচনার আয়োজন করে।

প্রথম-আলো

জুলুমবাজ সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে : মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমানে একটি দখলদার, অত্যাচারী, নির্যাতনকারী, জালিম সরকার আমাদের বুকের উপর চেপে বসেছে। এই জালিম সরকারের হাত থেকে যেন মানুষ মুক্তি পায় সেজন্যে দেশের জনগনকে সাথে নিয়ে জুলুমবাজ সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আগামীতে সহায়ক সরকারের অধীনে এমন একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই যেখানে সকল রাজনৈতিক দলের সমান অধিকার থাকবে।

আজ শুক্রবার মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মাজার জিয়ারত শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, আগামী নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়াকে এমনকি বিএনপি নেতৃবৃন্দকে দূরে রেখে নির্বাচনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। জনগণ সে নির্বাচন মেনে নিবে না। তাই আগামী দিনে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্যে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনের মধ্যদিয়ে সেই নির্বাচনকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

শুক্রবার ছিল মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে টাঙ্গাইলের সন্তোষে ঢল নামে মানুষের। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় ভাসানীর মাজার। ক’দিন আগে থেকেই ভাসানাীর ভক্ত-মুরিদানরা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সন্তোষে আসতে শুরু করেন। তবে এ বছর ভাসানীর মাজার এলাকার চিত্র ছিল অন্যবারের চেয়ে একটু আলাদা। এবার সেখানে ছিল না কোনো ভাসানী মেলা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিএনপিকে সেখানে কোনো সমাবেশ বা আলোচনা সভা করতে দেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিএনপির দুই গ্রুপের খ- খ- মিছিল কিছুটা উত্তেজনা ছড়িয়েছে মাজার এলাকায়।

ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন পৃথকভাবে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল কোরআনখানী, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল, কাঙালীভোজ, আলোচনা সভা ইত্যাদি। দিনের শুরুতে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আলাউদ্দিন মওলানা ভাসানীর মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ করার মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সূচনা করেন।

এরপর থেকেই মাজারে বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মরহুমের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা শুরু হয়। যেসব সংগঠন মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে তাদের মধ্যে রয়েছে বিএনপি, জাতীয় পার্টি (জেপি), জেলা আওয়ামী লীগ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, জাগপা, ভাসানী ন্যাপ, টাঙ্গাইল পৌরসভা, টাঙ্গাইল প্রেসক্লাব, ভাসানী ফাউন্ডেশন, ভাসানীর পরিবার, ভাসানী একাডেমি, ভাসানী কলেজ ইত্যাদি।

কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষে ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় বিএনপির সহসভাপতি শামসুজ্জামামান দুদু, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ও জেলা বিএনপির সভাপতি কৃষিবিদ শামছুল আলম তোফাসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ভাসানীর মাজার জিয়ারত শেষে মির্জা ফখরুল নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন।

এছাড়া কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের পক্ষে মাজারে ফুল দেন আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বীরোত্তম। এ সময় দলের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় পার্টির (জেপি) পক্ষে দলের অতিরিক্ত মহাসচিব সাদেক সিদ্দিকী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে সকালে শিরণী বিতরণ ও বাদ জুমা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহ্ফিল অনুষ্ঠিত হয়। কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের ডিন, রেজিস্ট্রার, হল প্রভোস্ট, প্রক্টর, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নেন।

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দলীয় কোন্দল বর্তমানে প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে। ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপি এবং বিএনপির একটি বিদ্রোহী গ্রুপ মাজার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা করার অনুমতি চায়। কিন্তু যেকোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কোন পক্ষকেই অনুমতি দেয়া হয়নি।

সকালে সন্তোষে ভাসানীর দরবার হলে ন্যাপ ভাসানী ও খোদায়ী খেদমতগার আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র জামিলুর রহমান মিরন। এতে সভাপতিত্ব করেন হাসরত খান ভাসানী।

আমরা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে চলে গেছি : বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী
ভাসানীর মাজার জিয়ারত শেষে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী বলেন, মওলানা ভাসানীর মত মানুষ আমাদের দেশে আজ যে সম্মান পাওয়ার কথা ছিল তিনি তার কিছুই পান না। রাজনৈতিক আবহাওয়া লোহার খাঁচায় বন্দি থাকলে অশুভ তৎপরতার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তিনি বলেন, আমরা রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে চলে গেছি। ঢাকায় বিএনপির সমাবেশে সরকার বাধা না দিলেও পারত বলে তিনি মন্তব্য করেন।

dailynayadiganta

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin