বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় সেনাবাহিনি কর্তৃক পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহ ঘটনার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। দেশের জনগণের জানার অধিকার আছে কেন সেই পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। বরং যারা ৫৭ জন সেনাসদস্যকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে দিতে চেয়েছিল, যারা দেশের গর্বিত সেনাবাহিনির মনোবল ভেঙে দিতে চেয়েছিল তারা কারা?
কেন গোয়েন্দা বাহিনি ব্যর্থ হলো, কেন সিদ্ধান্ত নিতে কয়েক ঘন্টা কেটে গেলো তা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে বের করা উচিত।’তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই দল ও ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষায় দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিচ্ছি অথচ বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এবং সচেতনভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। তাই আমরা যদি সে ষড়যন্ত্র বুঝতে না পারি তাহলে দেশকে রক্ষা করতে পারবো না।’
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন হল রুমে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপার বিশেষ জাতীয় কাউন্সিল-২০১৭ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।সরকারকে উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তত নিজেদের বাঁচার রাস্তা তৈরি রাখতে খালেদা জিয়ার আহ্বানে সাড়া দিয়ে আলাপ আলোচনার উদ্যোগ নিন।
দাম্ভিকতা ছেড়ে দিয়ে সংসদ ভেঙে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিন। সংকট এড়িয়ে যাবেন না, এতে সংকট আরও বাড়বে।’বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজ মুহূর্তে মুহূর্তে সংবিধানের দোহাই দেন অথচ বর্তমান সংবিধান যেখানে তৈরি সেখানে ১৫৪ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিযোগিতায় নির্বাচিত। তারা কী করে জনপ্রতিনিধি হয়?’ এসময় প্রধান বিচারপতির প্রক্রিয়াকে সাংবিধানিক গুরুতর সঙ্কট বলেও দাবি করেন তিনি।
শফিউল আলম প্রধানের স্মৃতিচারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধান কখনও অন্যায়ের কাছে আপোস করেনি। আজ যখন স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র বিরোধী শক্তি বর্তমান সময়ে দেশকে ধ্বংসের দিকে দাঁড় করিয়েছে সেখানে তার মতো নেতার উপস্থিতি খুব দরকার ছিলো।’বাংলাদেশে এখন অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজমান দাবি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আগামী নির্বাচন যতদ্রুত এগিয়ে আসছে ষড়যন্ত্র আরো জোরদার হচ্ছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য, অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে হলে বেশকিছু শর্ত বাস্তবায়ন করতে হবে।’‘শর্তগুলোর মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হচ্ছে- নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার আগে বর্তমান সংসদ ভেঙে দিতে হবে। প্রায় ২৫০০০ হাজার বিরোধীদলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে দায়ের করা সাড়ে ৩ লাখ থেকে ৪ লাখ মামলা হয় তুলে নিতে হবে। একান্ত জরুরি না হলে নির্বাচনকালীন সময়ে মামলা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে।
সহায়ক সরকার কিংবা তত্ত্বাবধায়ক যে নামেই হোক আগামী নির্বাচন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। কেননা ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো তথাকথিত নির্বাচন আর হতে দেয়া হবে না। শুধু তাই নয় সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলাপ করে নির্বাচনকালীন সময়ে দায়িত্বরতদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ভাগ করে দিতে হবে।
তাহলেই নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে।’আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপিকা রেহেনা প্রধানের সভাপাতিত্বে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফুর রহমান প্রমুখ।
ব্রেকিংনিউজ