goyessor

সুষ্ঠু ভোটের পূর্বশর্ত প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ : গয়েশ্বর

আগামী নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ পূর্বশর্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, আজকে দেশে গণতন্ত্র গুম, গণতন্ত্র মৃত। এই গণতন্ত্র যে কোথায় আছে এটি আমাদের সবচেয়ে বেশি দুশ্চিন্তা এবং উদ্বেগের বিষয়।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। জাতীয়তাবাদী যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মজনুর মুক্তি দাবিতে এই সভার আয়োজন করে ঢাকাস্থ ফেনী জেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম।

সংগঠনের সভাপতি ও ছাত্রদল নেতা ওমর ফারুক ডালিমের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, আফরোজা আব্বাস, আ ক ম মোজাম্মেল হক প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির যতটুকু জনসমর্থন ও যোগ্যতা দরকার বর্তমানে তা তার চেয়ে বেশি আছে। এখন শুধু সময়মতো সাহসী ভুমিকা নেয়া দরকার। যে পথে হাটলে জনগণ আমাদের সাথে থাকবে সে পথে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। তবে সেই পথটি ধরার পূর্ব শর্ত হলো বর্তমান সরকারকে বিদায় দেয়া। হতে পারে এটা সম্মানজনক বিদায়।

তিনি বলেন, আজকে সবাই বলছে সরকার নাকি নিরাপদে প্রস্থানের পথ খুঁজছে। ইতিমধ্যে আমাদের দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আদালতে বলেছেন তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন। তো পথের তো একটা সূচনা বেগম জিয়া করে দিয়েছেন। এখন কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেই কিন্তু সরকারের বের হওয়ার পথ নিশ্চিত হয়।

বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, জনগণ চায় মুক্তি ও ভোটের অধিকার। তারা কারো ক্ষতি চায়না। এখন যদি সরকার মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে সুষ্ঠু ভোটের ব্যবস্থা নেন তবেই কমফোর্টঅ্যাবল পথ রেডি। আর সুষ্ঠু ভোটের পূর্বশর্ত হলো প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ।

উৎসঃ   dailynayadiganta

‘ধানের শীষ’ প্রতীকেই নির্বাচনে অংশ নেবে জামায়াত!

ভোটের আগে নিবন্ধন ফিরে না পেলে বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চিন্তা করছে জামায়াতে ইসলামী। আগে সিদ্ধান্ত ছিল, হয় দলীয় প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, নয়তো জোটগত সমঝোতা রেখে আনুষ্ঠানিকভাবে ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হবেন দলটির নেতারা। তবে এ অবস্থান থেকে সরে আসার আলোচনা চলছে দলে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে, প্রার্থী মনোনয়নে ‘রাজনৈতিক দলের প্রার্থী’র পরিবর্তে ‘রাজনৈতিক দল/জোটের প্রার্থী’র বিধান চালু করার দাবি জানিয়েছে জামায়াত।

দলটির নেতারা জানিয়েছেন, জামায়াত আগামী নির্বাচনে যেভাবেই হোক অংশ নেবে। গতবারের মতো বর্জন করবে না। বিএনপিও আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে বলে ধরে নিয়েছে জামায়াত। গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে দলীয় নিষেধাজ্ঞা থাকায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে কিছু নেতা জানান, যুদ্ধাপরাধের বিচারে শীর্ষনেতাদের হারিয়ে কোণঠাসা থেকেও কমপক্ষে ৪৩ আসনে প্রার্থী দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে জামায়াত।

২০১৪-এর জাতীয় নির্বাচনের আগে জামায়াতের সিদ্ধান্ত ছিল, দলীয় প্রতীকে অংশ নিতে না পারলে দলের প্রার্থীরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হবেন, তবুও অন্য কোনো দলের প্রতীকে নির্বাচন করবেন না। এ কারণে বিএনপি-জামায়াতের বর্জন করা ওই সংসদ নির্বাচনের পরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির প্রতীক ব্যবহার করেননি জামায়াত নেতারা। পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামায়াত নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হন।

কয়েকটি পৌরসভায় বিএনপির সঙ্গে জোট বা সমঝোতা করেও ধানের শীষ নেয়নি জামায়াত। তবে এখন ভাবছে, ধানের শীষ প্রতীক নিলে সুবিধা আছে। তাতে বিএনপির ‘জামায়াতবিরোধী’ অংশের ভোটও পাওয়া যাবে। দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে না লড়লে সরকারও দমন-পীড়ন চালাতে পারবে না। নির্বাচনের সময় অন্তত বিএনপি প্রার্থীদের সমান সুযোগ-সুবিধা নিয়ে প্রচারকাজ চালানো যাবে। ২০১৩ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্টের রায়ে নির্বাচন কমিশনে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়। ফলে জামায়াত দলীয়ভাবে নির্বাচন করতে পারছে না। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে অবশ্য জামায়াতের আপিল সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন রয়েছে।

সর্বোচ্চ আদালত আরও একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দলকে দাঁড়িপাল্লা প্রতীক ব্যবহার করতে না দিতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছেন। দাঁড়িপাল্লা ন্যায়বিচারের প্রতীকরূপে সুপ্রিম কের্টের মনোগ্রামে রয়েছে। নির্বাচন কমিশন প্রতীকের তালিকা থেকে দাঁড়িপাল্লা বাদ দিয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে আইনি লড়াইয়ে জামায়াত নিবন্ধন ফিরে পাবে কি-না তা অনিশ্চিত। প্রতীক ফিরে পাওয়া আরও অনিশ্চিত।

গত ৯ অক্টোবর জামায়াতের আমির মকবুল আহমাদ, সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ শীর্ষ নেতৃত্ব গ্রেফতার হন। দলটির সূত্রে জানা গেছে, তারা গ্রেফতার হওয়ার আগে থেকেই আগামী নির্বাচনে বিকল্প হিসেবে ধানের শীষ প্রতীক ব্যবহারের কথা ভাবছে জামায়াত।

নিবন্ধন বাতিল হওয়ায় নির্বাচন কমিশনের সাম্প্রতিক সংলাপে ডাক পায়নি জামায়াত। গত ২৬ অক্টোবর দলের ভারপ্রাপ্ত আমির মুজিবুর রহমান নির্বাচন কমিশনে চিঠি দিয়ে জামায়াতের ১৬ দফা প্রস্তুাব পাঠান। একটিতে অনলাইনে মনোনয়ন দাখিলের দাবি জানিয়ে মনোনয়নপত্র ফরম-১ সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়। এই প্রস্তাবে যা চাওয়া হয়েছে তা হলো- ‘মনোনয়নপত্র দাখিলের ক্ষেত্রে বিদ্যমান নিয়মে রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট দাখিলের বিধান ছাড়াও এর সঙ্গে নির্বাচন কমিশনে এবং অনলাইনে দাখিলের বিধান করা। মনোনয়নপত্র ফরম-১ সংশোধন করা। “রাজনৈতিক দলের প্রার্থী” শব্দগুচ্ছ “রাজনৈতিক দল/জোটের প্রার্থী” শব্দগুচ্ছ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা।’

বিদ্যমান নিয়মে রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন দেয়। দলের প্রতীকে প্রার্থী ভোটে অংশ নেন। জামায়াতের দাবি, রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি জোটের প্রার্থী মনোনয়নের নিয়ম চালু করা হোক, যাতে জোটের শরিক দলের প্রার্থীরা অভিন্ন প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন।

২০০১ সালে সমঝোতার ভিত্তিতে বিএনপি ৩০টি আসন জামায়াতকে ছেড়ে দিয়েছিল। এসব আসনে ধানের শীষ প্রতীকে বিএনপির প্রার্থী ছিলেন না। চট্টগ্রাম-১৪ আসনে বিএনপি ও জামায়াত দুই দলেরই প্রার্থী ছিলেন। ২০০৮ সালে ৩৫ আসন জামায়াতকে ছেড়ে দেয় বিএনপি। ৩৯ আসনে জামায়াতের প্রার্থী ছিলেন। সমঝোতার মধ্যেই চারটিতে বিএনপি ও জামায়াত উভয় দলের প্রার্থী দলীয় প্রতীকে ভোটে অংশ নেন।

 

তবুও জামায়াতের শীর্ষ নেতৃত্ব কেন ধানের শীষ গ্রহণের চিন্তা করছেন- এ প্রশ্নে ছাত্রশিবিরের সাবেক একজন সভাপতি ও বর্তমানে জামায়াতের ‘চিন্তাশীল’ অংশের নেতা জানান, ২০০৯ সাল থেকে নেতাকর্মীদের ওপর চরম দমন-পীড়ন চলছে। সরকার পরিবর্তন ছাড়া এ অবস্থা বদলাবে না। তাই এখন আসন কিংবা ভোট সংখ্যার হিসাবের চেয়ে দলের অস্তিত্ব রক্ষা জরুরি। তিনি অভিযোগ করেন, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদে জামায়াতকে নির্বাচনী প্রচার চালাতে দেওয়া হয়নি। ভোট চাইতে গিয়েও গ্রেফতার হয়েছেন জামায়াত নেতারা। বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হলে একই পরিস্থিতিতে পড়তে হবে। কিন্তু ধানের শীষ প্রতীক থাকলে আন্তর্জাতিক চাপ ও গণমাধ্যমে নজরদারির কারণে ভোটের প্রচার থেকে সরকার তাদের বঞ্চিত করতে পারবে না।

সূত্র: সমকাল

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin