সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান গাজীকে (৪৫) গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার রাতে আশাশুনি উপজেলার কৈখালী বেড়িবাঁধে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত সোলায়মান গাজী পার্শ্ববর্তী কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের ঝায়ামারী গ্রামের মৃত মোকছেদ গাজীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, রাতে শোভনালীর কৈখালী সন্নাসীর চক বাজারে ক্যারাম খেলছিলেন সোলায়মান। হঠাৎ একটি ফোন কল পেয়ে খেলা ছেড়ে চলে যান। ধারণা করা হচ্ছে এর পরপরই তাকে বাজার সংলগ্ন খোলা জায়গায় হত্যা করা হয়েছে। সকালে বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসলে পুলিশে খবর দেয়।
এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদুল ইসলাম বলেন, মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। হত্যার রহস্য উন্মোচনে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।
জাগো নিউজ
দুর্নীতি মামলার আসামিকে ভারতে রেখে এলেন আ.লীগ নেতা!
সুনামগঞ্জের হাওরে বাঁধ নির্মাণে দুর্নীতির সঙ্গে যে কয়জন জড়িত তার মধ্যে অন্যতম হলেন সিলেট জেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ঠিকাদার আব্দুল হান্নান। গত ২ জুলাই সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি হয়েছে। কিন্তু, আব্দুল হান্নান প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না। পুলিশ তাকে কাগজে কলমে পলাতক হিসেবে দেখাচ্ছে।
আরও লক্ষণীয় বিষয় হলো, দুর্নীতি মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামি আব্দুল হান্নানকে সপরিবারে সঙ্গে নিয়ে গত মঙ্গলবার ভারত গেলেন সিলেটের পাবলিক প্রসিকিউটর (রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী) ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। পুলিশের চোখের সামনে দিয়ে মঙ্গলবার সকালে তামাবিল স্থলবন্দর ক্রস করলেও পুলিশ তাকে আটক করেনি। ভারত গিয়ে তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাফেরা করে একসঙ্গে দুই পরিবারের ছবি তুলে এগুলো আবার আব্দুল হান্নান তার ফেসবুকেও পোস্ট করেছেন।
গত শুক্রবার বিকেলে তামাবিল স্থলবন্দর দিয়ে মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সপরিবারে ভারত থেকে বাংলাদেশে আসলেও তার সঙ্গে ছিল না আব্দুল হান্নান ও তার পরিবারের লোকজন। দুর্নীতি মামলার অন্যতম এই আসামিকে সপরিবারে নিরাপদে ভারতে রেখে চলে এসেছেন আওয়ামী লীগের এই কেন্দ্রীয় নেতা।
চলতি বছরের প্রথম দিকে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের হাওরে বাঁধ ভেঙে জেলার ১৫৪টি হাওরের ফসল তলিয়ে যায়। এতে আবাদ হওয়া দুই লাখ ২৩ হাজার ৮২ হেক্টর জমির বোরো ধানের ৯০ ভাগ ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়। এ ঘটনার পরই ফসল রক্ষাবাঁধ নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কমিটি প্রাথমিকভাবে দুর্নীতির প্রমাণ পায়।
এরপরই ২ জুলাই সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ১৫ কর্মকর্তা, বাঁধ নির্মাণকাজের ৪৬ জন ঠিকাদারসহ ৬১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। অভিযুক্ত ঠিকাদারদের মধ্যে অন্যতম আসামি হলেন সিলেটের ঠিকাদার ও সিলেট জেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল হান্নান।
অ্যানালাইসিস বিডির অনুসন্ধানে জানা গেছে, সিলেটের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই আব্দুল হান্নান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজের দক্ষিণহস্ত হিসেবে পরিচিত। এর আগেও অনেক অনিয়ম-দুর্নীতি করে সিরাজের ক্ষমতা বলে পার পেয়ে গেছেন হান্নান। হান্নানের দুর্নীতির টাকার বড় একটি অংশ আওয়ামী লীগের এই নেতার পকেটে যায় বলেও অভিযোগ রয়েছে। এখন পুরো সিলেট জুড়ে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আব্দুল হান্নানকে বাঁচাতে নিরাপদে ভারতে রেখে আসছেন।
এছাড়া, রাষ্ট্র আইনজীবী নিয়োগ দেয় রাষ্ট্রকে সহযোগিতা করার জন্য। কিন্তু, মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হয়ে এত বড় দুর্নীতি মামলার একজন পরোয়ানাভুক্ত আসামিকে ভারতে রেখে আসার ঘটনায় সিলেটসহ সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। সিলেট আদালতেও এনিয়ে কয়েকদিন ধরে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। আইনজীবীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, রাষ্ট্রই যে দুর্নীতিবাজদের সেল্টার দিচ্ছে আবারো তা প্রমাণিত হলো।
অ্যানালাইসিস বিডি