সাজা হলে খালেদার ঠাঁই জেল নাকি সাবজেল?

আর মাত্র দু’দিন পরই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা হবে। ৮ ফেব্রুয়ারি এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। ওইদিন মামলার রায় সত্যিই ঘোষণা করা হবে নাকি রায়ের দিনক্ষণ পিছিয়ে যাবে এ নিয়ে সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আলোচনা চলছে।

রায় হলে কি হবে- রায়ে কী তিনি খালাস পাবেন নাকি সাজাপ্রাপ্ত হবেন, সাজা হলে কী ধরনের সাজা হবে। এছাড়া সাজাপ্রাপ্ত হলে দুইবারের প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির মতো একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের নেতাকে কোথায় রাখা হবে- জেল নাকি সাবজেলে। জেলে রাখা হলে কোন জেলে রাখা হবে, ঢাকা নাকি ঢাকার বাইরের কোনো জেলাখানায় আর সাবজেল ঘোষণা করা হলে কোন ভবনটি সাবজেল হবে। এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে তর্ক-বির্তক যুক্তি-পাল্টা যুক্তি নিয়ে তুমুল আলোচনা সর্বত্র।

গত দু’দিন ধরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খালেদা জিয়ার সাজা হলে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কারাগারে রাখা হবে এমন তথ্য প্রকাশিত হওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীরা রায়ের স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেছেন, সাজানো রাজনৈতিক মামলায় তাকে সাজা দেয়া হলে জনপ্রিয়তা কমবে না বরং বাড়বে। কেউ কেউ গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বলেন, রায় ঘোষণাই হলো না তথাপি খালেদা জিয়াকে কোন জেলে রাখা হবে সে সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ কতটা নৈতিক তা জানতে চান।

খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত হলে কোন জেল বা সাবজেলে রাখা হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে কারা অধিদফতরের এআইজি (প্রশাসন) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন কিছুটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এখনও তো রায়ই ঘোষণা করা হলো না, তবে কেন কোথায় রাখা হবে সে প্রশ্ন উঠছে। রায় ঘোষণার আগে আমাদের কাছে কোনো দিক-নির্দেশনা আসার সুযোগ নেই এবং আসেনি। আমাদের কাছে কোনো খবর নেই অথচ বিভিন্ন গণমাধ্যমে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হবে বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে দেখেছি।

তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত নাকি খালাস পাবেন। তবে রায় বিপক্ষে গেলে অর্থাৎ সাজাপ্রাপ্ত হলে মাত্র দুই ঘণ্টার নোটিশে যে কোনো জেল বা সাবজেলে বেগম খালেদা জিয়াকে রাখার ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারা অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বেগম খালেদা জিয়া দুইবারের প্রধানমন্ত্রী। দণ্ডপ্রাপ্ত হলেও জেল কোড অনুসারে তিনি ভিভিআইপি কয়েদি হবেন। এ ধরনের ভিভিআইপিদের ক্ষেত্রে জেলকোড অনুসারে সরকার বিশেষ বিবেচনায় যে কোনো ভবনকে সাবজেল ঘোষণা করতে পারে। তবে আদালতের বিচারক তাকে জেলখানায় পাঠানোর নির্দেশ দিলে জেলখানা ভিভিঅাইপির মর্যাদায় থাকবেন।

তারা জানান, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা চলমান। সাজাপ্রাপ্ত হলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার সম্মান ও বয়স বিবেচনায় হয়তো রাজধানীর কোনো একটি ভবনকে সাবজেল ঘোষণা করা হবে। আর জেলখানায় পাঠানোর নির্দেশ দেয়া হলে দূরত্ব ও যানজট পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকার সবচেয়ে কাছের জেল নারায়ণগঞ্জ কারাগার। তবে ৮ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণা হলে এবং রায়ে কি ঘোষণা দেয়া হয় তার ওপর সব কিছুই নির্ভর করবে বলে জানান তারা।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin