সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে দিয়ে একটি সাংবিধানিক ক্যু এর চেষ্টা হয়েছিল গত বছর। আর এবার, ঠিক নির্বাচনের আগে, নির্বাচন কমিশন দিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করে একটি সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির ষড়যন্ত্র চলছে।
নির্বাচন কমিশনের একটি অংশ, দেশের সুশীল সমাজ এবং ড. কামাল হোসেন এই নীল নকশার সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টির প্রথম পদক্ষেপ ছিল গত বৃহস্পতিবার কমিশনে ইভিএম নিয়ে বিতর্ক।
ঐ বিতর্কে নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার নোট অব ডিসেন্ট দেন। তিনি ইভিএম সংক্রান্ত বৈঠকও বর্জন করেন। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এই বিতর্ককে আদালত পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।
গণ প্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) সংশোধনীর যে সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নিয়েছে, আদালতে তা চ্যালেঞ্জ করার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সূত্র মতে, নির্বাচন কমিশন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য গতকাল আরপিও সংশোধন করেছে। এটি এখন মন্ত্রী সভায় যাবে, মন্ত্রী সভায় অনুমোদিত হলে তা আগামি ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় বর্তমান সংসদের শেষ অধিবেশনে উত্থাপিত হতে পারে।
নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্র বলছে, আগামি সোমবার ৩ সেপ্টেম্বর কমিশনের ইভিএম ব্যবহার সংক্রান্ত আরপিও সংশোধনী প্রস্তাব মন্ত্রীসভায় উত্তাপিত হতে পারে। যদিও এবারের জাতীয় সংসদ অধিবেশন স্বল্পতম সময়ের জন্যে হবে, তবুও এই সংশোধনী, আসন্ন শরৎকালীন অধিবেশনে উত্তাপিত হতে পারে।
ড. কামাল হোসেন অ্যান্ড এসোসিয়েট ল চেম্বার নিশ্চিত করেছে যে, তাদের ল’ ফার্ম ইতিমধ্যেই এই আরপিও সংশোধনীকে চ্যালেঞ্জ করার প্রস্তুতি শুরু করেছে। এই আইনী লড়াইয়ের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঝুলিয়ে দিতে চায়। সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সংসদ বহাল রেখে নির্বাচন করতে হলে, তা অবশ্যই ২০১৯ সালের জানুয়ারির ২৮ তারিখের মধ্যে করতে হবে।
নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ঘোষণা করেছে যে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে তাঁরা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। আগামী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে এই নির্বাচন করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে কমিশন। কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী, বর্তমান সংসদ বহাল রেখে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে হলে, তা ২৮ জানুয়ারি ২০১৯ এর মধ্যে করতে হবে।
২৯ জানুয়ারি ২০১৯ সালে এই সংসদ আপনা আপনি ভেঙে যাবে। ড. কামাল হোসেন এবং তাঁর অনুসারীরা এই সুযোগটি নিতে চায়। সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচন বিএনপিসহ বিরোধি দলের অন্যতম দাবি। এরকম একটি পরিস্থিতি হলে, একটি সাংবিধানিক শূন্যতা সৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। সে সময় নির্দলীয় সরকারের বিষয়টিও সামনে চলে আসবে। একটি সূত্র বলছে, এই নীলনকশা বাস্তবায়নের জন্যই মাহাবুব তালুকদারকে নিয়ে নোট অব ডিসেন্ট দেয়ানো হয়েছে। আইনী লড়াইয়ে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হবে বলে আইনজীবীদের ধারণা।
বাংলা ইনসাইডার