mossaraf_khon

সরকারের ষড়যন্ত্র বুঝে ফেলেছে বিএনপি

আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সরকারের ষড়যন্ত্র বিএনপি বুঝে ফেলেছে বলে দাবি করেছেন দলটির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকার ষড়যন্ত্র করছে। এবার সরকারের ষড়যন্ত্র আমরা সফল হতে দেব না। সরকারের প্রথম ষড়যন্ত্র আমরা ব্যর্থ করেছি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে নিয়ে সরকার ভেবেছে, বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকায় নানারকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবে। এ জন্য আওয়ামী লীগ তাদের নেতাকর্মীদের লাঠি ও পেট্রলবোমা দিয়ে মোড়ে মোড়ে বসিয়ে রেখেছিল। তাদের বলা হয়েছিল, বিএনপি একটি গাড়ি ভাঙলে তোমরা একশটি গাড়ি ভাঙবে। কিন্তু আমরা তাদের সেই ষড়যন্ত্র বুঝে ফেলেছি।’

রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘স্বাধীনতা ফোরাম’ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

তিনি বলেন, ‘ আমরা তাদের ফাঁদে পা দেই নাই। এরপরে আপনাদের (সরকার) গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট, আমরা দুই থেকে তিনদিন হরতাল দেব। আর আপনারা সেই হরতালে ভাঙচুর করে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনবেন। এটাও আপনারা পারেন নাই।’

মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আগামী নির্বাচন নিয়ে সরকার যে ধরনের পরিকল্পনা করছে, সেই ধরনের নির্বাচন এদেশে হতে দেয়া হবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আমরা আন্দোলন করছি। এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। সরকারের আচারণ দেখে এটা ভবিষ্যতে কী হবে তা জনগণই ঠিক করবে।’

উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রাথমিক স্বীকৃতির উদযাপন নিয়ে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার কারাবন্দি ও আগামী নির্বাচন নিয়ে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতেই সরকার এই আনন্দ করছে। কারণ উন্নয়শীল দেশের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেতে আরও ছয় বছর লাগবে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং সেখানে এখন গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদণ্ড পর্যন্ত মানা হচ্ছে না- জার্মানের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।’

খন্দকার মোশাররফ হোসেন আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার অত্যন্ত লজ্জাকর একটি স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য নিয়ে এসেছে। এই স্বীকৃতির ফলে আমরা লজ্জিত ও ক্ষুব্ধ। আওয়ামী লীগ সরকার শুধু ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করার জন্য সারাবিশ্বে বাংলাদেশকে একটি স্বৈরাচারী দেশে পরিচিত করেছে। এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল না। আজকে স্বাধীনতা দিবসের আগে অবশ্যই এটা আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা ছিল গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্রও আজকে আওয়ামী লীগের বাক্সে বন্দি।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলছে, এটা ভিত্তিহীন। ভিত্তিহীনভাবে বাংলাদেশকে স্বৈরাচারী দেশ হিসিবে চিহ্নিত করে নাই। কিন্তু আমি বলতে চাই, ভিত্তি আছে বলেই করেছে। আমি এর একশতটি প্রমাণের কথা বলতে পারব। কিন্তু দেশ স্বৈরাচারী নয়, স্বৈরাচার উপাধিতে ভূষিত করার জন্য যার সবচেয়ে বড় অবদান তিনি হলেন শেখ হাসিনা। সুতরাং এদেশে স্বৈরাচারী হলেন শেখ হাসিনা। বিশ্বের যে ৫০ জন স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রীর তালিকা দেয়া হয়েছে, সেখানে শেখ হাসিনা কিন্তু হিটলারের ওপরে স্থান নিয়েছেন।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin