hasina_003

সরকারের বিরুদ্ধে ঘরে বাইরে ষড়যন্ত্র?

টানা তিন মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছে আওয়ামী লীগ সরকার কিন্তু তৃতীয় মেয়াদে এসে একের পর এক প্রতিকূল পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে হচ্ছে ১২ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামীলীগ সরকারকে। এই সংকটে প্রধানমন্ত্রী একাই যেন লড়ছেন; তাকে সহযোগিতা করা বা তার পাশে দাঁড়ানোর মতো বিশ্বস্ত লোকের সংখ্যাও খুব কম বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

এমনকি ছোট খাটো বিষয়ে মন্ত্রীরা এবং সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত দিতে পারছেন না। তারা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় তাকিয়ে আছেন। ভ্যাকসিন থেকে শুরু করে ধর্ষণের বিচার কিংবা মেজর সিনহা হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে ঘোড়াঘাটের ইউএনও’র ওপর আক্রমণ সব ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়ছে।

প্রধানমন্ত্রী ছাড়া যেন জাতির কোন অভিভাবক নেই। কোন মন্ত্রীর কোনো দায় দায়িত্ব নেই। এমনকি ছোটখাট বিষয়গুলোতেও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকছেন অনেক মন্ত্রীরা।

আর এরকম একটি পরিস্থিতিতে কিছু কিছু মহল নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করছে। ষড়যন্ত্র শুধু বিরোধী পক্ষ থেকে হচ্ছে তা নয় ঘরে-বাইরে ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মনে করছেন একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। এবং আওয়ামী লীগের অনেক নেতাও স্বীকার করছেন যে সরকারের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র দৃশ্যমান।

আওয়ামী লীগের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেছেন; রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র হচ্ছে।  ঘরে-বাইরে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই ষড়যন্ত্রগুলোর আকার প্রকরণ একটু অনুসন্ধান করলে দেখা যায় যে ষড়যন্ত্রগুলো বহুমাত্রিক কিন্তু তার মূল লক্ষ্য একটি তাহলো সরকারকে অজনপ্রিয় করা এবং জনগণকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা।

যে ক্ষেত্রগুলোতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে সেগুলো যদি একটু খতিয়ে দেখা যায়।

এক: প্রশাসনে ষড়যন্ত্র

গত কিছুদিন ধরেই প্রশাসনে বিএনপি জামাতপন্থীদের আস্ফালন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তারা আবার সংঘবদ্ধ হচ্ছে এবং প্রশাসনের বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নিয়ে নজিরবিহীন সমন্বয়হীনতা এবং বিভ্রান্তি দেখা যাচ্ছে।

বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় জামাত শিবির এবং বিএনপির লোকজন রয়েছে এবং তারা পরিকল্পিতভাবে কাজ করছে যেন আওয়ামীলীগ সরকার বিতর্কিত হয়। বিশেষ করে সরকারের উচ্চতর প্রশাসনে অনেকে ইচ্ছা করে কিছু কিছু কাজ করছেন যাকে এক ধরনের সাবোট্যাজ বলে মনে করেন একাধিক মহল।  

আবার পুলিশ প্রশাসনে বিগত কিছুদিন জামাত-শিবিরের তোষণ থাকার কারণে বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে নিষ্ক্রিয়তা দেখা দিচ্ছে। তাই প্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে অনেকে।

দুই: রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র

দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি রাজপথে আন্দোলন করতে ব্যর্থ হয়েছে। মুচলেকা দিয়ে খালেদা জিয়ার জামিন নিয়েছে। আর এই বাস্তবতায় তারা সরকারকে বিব্রত এবং বিতর্কিত করার জন্য নানারকম সামাজিক ইস্যুকে উসকে দেয়ার চেষ্টা করছে।
বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্ষণ ইস্যু নিয়ে বিএনপি যেভাবে রাজপথে লেগেছে তাতে অনেকের ধারণা হচ্ছে যে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বিএনপির রাজপথ গরম করতে চাইছে।

দ্বিতীয়ত; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম:

সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা রকম বিরুপ অপপ্রচার মিথ্যাচার করা হচ্ছে। বিশেষ করে দেশের বাইরে থেকে কিছু কিছু ব্যাক্তি সরকারের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধে নেমেছে।

অথচ বিটিআরসি বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো এগুলো বন্ধের জন্য কোন কার্যকর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। আর এই ত্রিমুখী ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে সরকারের যে উন্নয়ন কর্মকান্ড সেই কর্মকান্ডকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে সেটাই একটা চ্যালেঞ্জ।

তবে আওয়ামীলীগের নেতারা বলছেন; আওয়ামীলীগ সভাপতি বিচক্ষণ দূরদৃষ্টি সম্পন্ন এবং সবচেয়ে বড় কথা তিনি জনগণের কথা চিন্তা করেই কাজ করেন। কাজেই এরকম ষড়যন্ত্র অতীতে হয়েছে ভবিষ্যতেও হবে।

এই ষড়যন্ত্রগুলো মোকাবেলা করেই শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন ভবিষ্যতেও নিয়ে যাবেন। তবে এই ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে সজাগ এবং সতর্ক থাকতে হবে।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এসব ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তৃত হতে হতে তা দল পর্যন্ত গড়ায়। এবং দলের মধ্যেও একটা বিশ্বাসঘাতক অংশ তৈরি হয়। যেমন ১৯৭৫ এ হয়েছিল যেমন ২০০৭ সালে ওয়ান ইলেভেনের সময় হয়েছিল।

আর ঘরের মধ্যেও ষড়যন্ত্র হচ্ছে কিনা সেটাও এখন খতিয়ে দেখা দরকার বলে অনেকে মনে করেন। কারণ তারা মনে করছেন বাইরের ষড়যন্ত্রকে দমন করা যায় কিন্তু ঘরের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করা খুবই কঠিন কাজ।

আর এই ষড়যন্ত্রের জাল কতটুকু বিস্তৃত সেটাই এখন দেখার বিষয় বলে মনে করছেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক।

বাংলা ইনসাইডার

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin