khaleda_04

সমাবেশ পথে খালেদা, দিবেন রাজনৈতিক সমঝোতার ডাক

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে যোগ দিতে গুলশানের বাসা থেকে বের হয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া।

আজ রোববার দুপুর ২টার পর গুলশানের ‘ফিরোজা’ বাসা থেকে তিনি গাড়িবহর নিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে রওনা দেন বলে জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান।

সমাবেশে খালেদা জিয়া প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন। প্রায় দেড় বছর পর প্রকাশ্য সমাবেশে খালেদা জিয়ার এ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ ও উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা বলেছেন, এই সমাবেশে খালেদা জিয়া গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বার্তা দেবেন।

রাজনৈতিক সমঝোতার ডাক দিতে পারেন খালেদা জিয়া

নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকারের প্রতি রাজনৈতিক সমঝোতার ডাক দিতে পারেন খালেদা জিয়া।

জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আজকের সমাবেশ থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন এ ডাক দিতে পারেন।
একই সঙ্গে তিনি আগামী দিনের আন্দোলনে নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থেকে যে কোনা পরিস্থিতি মোকাবেলার আহ্বান জানাবেন।
দীর্ঘ ১৯ মাস পর অনুষ্ঠেয় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এ জনসভা সফল করতে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা দফায় দফায় বৈঠক করছেন।
ঢাকার আশপাশের জেলার নেতাদের সঙ্গেও বসছেন তারা। সব পর্যায়ে নেতাকর্মী-সমর্থকরা যাতে জনসভায় আসতে পারেন সেজন্য দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।

বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকদের গ্রেফতার ও বাসাবাড়িতে তল্লাশির নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের হয়রানি করছে বলে অভিযোগ করছেন দলটির নেতারা। দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা এসব কথা বলেন।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ শনিবার সকালে ২৩ শর্তে বিএনপিকে এ জনসভার অনুমতি দিয়েছে।
অনুমতি পাওয়ার পর ৩০ ফুট প্রস্থ ও ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যরে মঞ্চ বানানোর কাজ চলছে।

এ মঞ্চে দাঁড়িয়েই গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখবেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
দুপুর ২টা থেকে শুরু করে বিকাল ৫টার মধ্যে সমাবেশ শেষ করতে হবে।
উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না। লাঠিসোটা, ব্যানার, ফেস্টুন বহনের আড়ালে লাঠি, রড ব্যবহার করা যাবে না। মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসা যাবে না। অনুমোদিত স্থানের বাইরে সাউন্ড বক্স ব্যবহার নিষিদ্ধসহ ২৩ শর্তে বিএনপিকে আজকের জনসভার অনুমতি দেয়া হয়েছে।

জনসভা উপলক্ষে শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শুধু জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালনই এ গণসমাবেশের মূল লক্ষ্য নয়। গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার চলমান আন্দোলনকে সুসংহত করতে দেশনেত্রী খালেদা জিয়া একটা বার্তা দেবেন। আমরা মনে করি, দেশেনত্রী খালেদা জিয়ার কাছ থেকে জাতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশবাসী ও নেতাকর্মীরা মনে করেন-চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াই হারানো গণতন্ত্র ফেরাতে পারবেন। আপসহীন নেত্রীর নামের পাশে নতুন করে যোগ হয়েছে মাদার অব ডেমোক্রেসি। নতুন নামে স্লোগান তুলেছে জনগণ। এ কারণে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের পর তাকে অভ্যর্থনা জানাতে মানুষের ঢল নেমেছিল। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন ও ত্রাণ বিতরণে উখিয়া যাওয়া-আসার পথে অসংখ্য মানুষ রাস্তায় নেমে খালেদা জিয়াকে সমর্থন জানিয়েছেন। সর্বশেষ পবিত্র আদালতকে সামনে রেখে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে বক্তব্য দিয়েছেন।

এদিকে, ২০১৬ সালের ১ মে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য রেখেছিলেন খালেদা জিয়া।

আজকের জনসভা সফল করতে ঢাকাসহ রাজধানীর আশপাশের জেলা ও মহানগর বিশেষ করে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইলের নেতাকর্মীরা ব্যাপক প্রস্ততি নিয়েছেন।

এ সমাবেশ সার্বিকভাবে সফল করতে মির্জা ফখরুল ইসলাম ছাড়াও সার্বক্ষণিক কাজ করছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মো. শাজাহান, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে জনসভা করতে কোন সংগঠন বা কোন জেলার নেতারা কোথায় অবস্থান নেবেন তা আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও মহিলা দল মঞ্চের আশপাশে অবস্থান নেবে। একইভাবে অন্যদেরও স্থান ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, এ জনসভাকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও বাসাবাড়িতে তল্লাশির নামে তাদের পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করছে।

এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, শুক্রবার রাতে শাহজাহানপুরে মির্জা আব্বাসের বাসায় অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি বৈঠক শেষে ফেরার পথে ২০ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া জনসভাকে কেন্দ্র করে ঢাকা মহানগরসহ বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা ও গ্রেফতারসহ পুলিশি অভিযান চলছে।

নেতারা বলেন, বিগত দিনে সরকার নানা উসিলায় সমাবেশের আগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে গণপরিবহন, বাস, লঞ্চ ও নৌকা বন্ধ করে দেয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে নেতাকর্মীদের। বিষয়টি মাথায় রেখে দেশের নানা প্রান্ত থেকে অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় চলে এসেছেন। আবার কেউ কেউ জনসভার অনুমতি পাওয়ার খবর পেয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হয়েছেন।

মির্জা ফখরুল শাসক দলের উসকানিতে কান না দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের শান্ত থেকে এ কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন-মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল্লাহ আল নোমান, নিতাই রায় চৌধুরী, রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin