সংঘাতময় রাজনীতির ফেরা ঃ দুই শিবিরেই প্রস্তুতি, হার্ডলাইনে সরকার, কড়াকড়ি

টানটান উত্তেজনা। কী হচ্ছে, কী হবে? ডেডলাইন ৮ই ফেব্রুয়ারি। মুখোমুখি রাজনীতির ময়দানের দুই পুরনো প্রতিপক্ষ। প্রিজনভ্যানে হামলাকাণ্ডে আগেভাগেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি। দীর্ঘ বিরতির পর ফের সংঘাতময় রাজনীতি ফিরে এসেছে। দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা হবে নাকি তিনি খালাস পাবেন? সাজা হলে কেমন হবে পরিস্থিতি? এমন নানা প্রশ্ন এখন মানুষের মুখে মুখে।

উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠা চারদিকে। পাল্টাপাল্টি প্রস্তুতি চলছে দুই পক্ষেই। রায় নেতিবাচক হলে প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি না দিলেও দলীয় সূত্র বলছে, চেয়ারপারসনের বিরুদ্ধে নেতিবাচক কোনো রায় এলে দলের নেতাকর্মীরা বসে থাকবেন না। অন্যদিকে সরকার ও আওয়ামী লীগও নানা প্রস্তুতি নিচ্ছে রায়কে ঘিরে। সরকার সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, খালেদা জিয়ার রায়কে ঘিরে যাতে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা নাশকতা না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরাও সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। প্রয়োজনে তারাও পাল্টা মাঠ দখলে নেবেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ৮ই ফেব্রুয়ারির রায়ের পর সামনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন্‌ দিকে মোড় নেবে তাও পরিষ্কার হবে। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারির নির্বাচন ঘিরে সঙ্ঘাত সংঘর্ষের পর দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি অনেকটা একপেশেই ছিল। কিন্তু এখন আবার যেন ফিরে আসছে পুরনো সেই দিন। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই ব্যাপক ধর-পাকড় শুরু হয়েছে। পুলিশি অভিযান থেকে বাঁচার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা এখন আত্মগোপনে। গত ৪৮ ঘণ্টায় প্রায় দেড়শ’ নেতাকর্মীকে আটক করার খবর দিয়েছে বিএনপি। ৬১ জনকে নেয়া হয়েছে রিমান্ডে। দলটির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে অভ্যর্থনা জানাতে আসা বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে।

বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, যে সঙ্ঘাত ফিরে এসেছে তা আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার পর মিইয়ে যাবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। এটা আগামী সাধারণ নির্বাচন পর্যন্ত গড়াতে পারে। এদিকে এ রায়ের আগে খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেয়াকে ঘিরে পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনায় মাঠে আগাম উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মঙ্গলবারের ঘটনায় ইতিমধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা গ্রেপ্তার হয়েছেন। ঢাকায় চলছে ধরপাকড়। মামলা হয়েছে ৯ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। এ দিনের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ অবস্থায় আগামীকাল বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রথম সভা বসছে। এ সভা থেকে দলের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা আসবে। একইভাবে খালেদা জিয়ার মামলার রায় পরবর্তী করণীয় বিষয়েও দলীয় নেতাদের নির্দেশনা দিতে পারেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিএনপির দলীয় সূত্র বলছে, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে যে অভিযোগে মামলা হয়েছে তাকে তারা ভিত্তিহীন মনে করছেন। আর এ মামলায় নেতিবাচক রায় এলে নেতাকর্মীরা তা মেনে নেবেন না। এজন্য কেন্দ্রীয়ভাবে আগাম কোনো কর্মসূচি না দেয়া হলেও তৃণমূলের নেতাকর্মীরা তাৎক্ষণিক আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কেন্দ্রের ঘোষণা ছাড়াই নিজ নিজ এলাকায় নেতাকর্মীরা সিদ্ধান্ত নিয়ে আন্দোলন কর্মসূচি চালানোর বিষয়ে দল থেকে ইতিমধ্যে অঘোষিত নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

একই সঙ্গে খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের দিন ঢাকায় বড় ধরনের শোডাউনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন দলের নেতাকর্মীরা। রায়ের দিন নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ঘিরে শোডাউন করবেন। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার মামলার রায় ঘিরে সরকার ও আওয়ামী লীগের মধ্যেও নানামুখী চিন্তা রয়েছে। সূত্র বলছে, ঢাকায় বড় জমায়েত করার সুযোগ দেয়া হবে না বিএনপিকে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখবে। এর আগে বিএনপির পূর্বঘোষিত কিছু কর্মসূচি ঘিরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একই কৌশল নিয়েছিল। ওই সময় অঘোষিতভাবে রাজধানী ও আশেপাশের জেলার গণপরিবহন বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এছাড়া রাজধানীও আশেপাশের জেলায় ধরপাকড় ও আবাসিক হোটেলগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হবে। এতে চাইলেও বড় জমায়েত করতে পারবে না বিএনপি। এছাড়া যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সারা দেশে সতর্ক অবস্থানে থাকবেন। ইতিমধ্যে নেতাকর্মীদের এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

আমরা সতর্ক থাকবো-ওবায়দুল কাদের: বিএনপি নেতারাই রাজধানীতে পুলিশের ওপর হামলার ‘মূল পরিকল্পনাকারী’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। গতকাল সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান শেষে তিনি বলেন, ফুটেজ আছে। এ হামলার ফুটেজ কিন্তু মুছে যায়নি। এ হামলা কিভাবে হয়েছে তা দিবালোকের মতো পরিষ্কার। এটা অনুপ্রবেশ নয়, এটা পূর্বপরিকল্পিত জঙ্গি স্টাইলে হামলা। এ হামলার মাস্টার মাইন্ড হচ্ছে বিএনপির নেতৃত্ব, তারাই এ হামলা করিয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সেদিন হাইকোর্টের সামনে যে ধরনের হামলা হয়েছে, তাতে যারা জড়িত তাদের গ্রেপ্তার না করে কি করব? কারা কারা ওখানে ছিল ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিএনপিকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য গ্রেপ্তার হয়নি। এ হামলায় পুলিশকে দোষ দিতে পারবে না, কারণ হামলার উস্কানি তারাই দিয়েছে, তারাই ঘটনা সাজিয়েছে এবং প্রকাশ্য ঘটিয়েছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা কি মানুষের জানমাল রক্ষায় এ ধরনের ঘটনা বিনা বিচারের ঝুঁকির মুখে ফেলে দেবো? এ ধরনের ঘটনাকে আস্কারা দিলে ভবিষ্যতে আরো ভয়াবহ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে এবং সেই কারণে সরকার এখানে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারে না। আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলায় রায় ঘোষণার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা সতর্ক থাকবো, যদি কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হয়, উস্কানিমূলক, নাশকতা জাতীয় কিছু করা হয় এবং সহিংসতা দেখা যায়, তাহলে জনগণকে সঙ্গে রেখে উদ্ভূত পরিস্থিতির সমুচিত জবাব দেয়া হবে।

সারা দেশে নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের অভিযোগ বিএনপির: সারা দেশে বিএনপিসহ ২০দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক ধরপাকড় চালানোর অভিযোগ করেছে বিএনপি। গতকাল রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতেই যেন নির্দয়তার সীমা অতিক্রম করছে। কারণ এর উপরেই যেন নির্ভর করে তাদের পুরস্কার, পদোন্নতি। তাই কে কতটা বিএনপি নেতাকর্মীকে নির্যাতন করতে পারে সেই প্রতিযোগিতায় নেমেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিবেকহীনতা এখন জাতি ও জনগণের জন্য সবচেয়ে বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গতকালও চলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অমানবিক গ্রেপ্তার অভিযান। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরাকে কেন্দ্র করে অভ্যর্থনা জানাতে আসা বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মীর ওপর হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে শতাধিক নেতাকর্মীকে আটক, পিটিয়ে আহত এবং বিএনপি’র সিনিয়র গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়েছে পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি সারা দেশে ২০ দলীয় জোটের নেতাদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বলেন, বুধবার ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল শওকত সরদারকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের বড় ছেলে সুনিন্দ্য ইসলাম সুমিত, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন, যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মুজিবর রহমান, মুন্সীগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মোল্লা, যুবদল নেতা সেলিমকে গতকাল পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম-এর বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে।

বিএনপির ৫৮ নেতাকর্মী রিমান্ডে
মঙ্গলবার পুলিশের প্রিজনভ্যান থেকে ২ কর্মীকে ছিনিয়ে নেয়া ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিএনপির ৫৮ নেতাকর্মীকে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। গতকাল শাহবাগ ও রমনা থানা পুলিশ তিন মামলায় ৬৯ নেতাকর্মীকে আদালতে সোপর্দ করে ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে ঢাকা মহানগর হাকিম আহসান হাবীব বিভিন্ন মেয়াদে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর করেন। এর মধ্যে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আজিজুল বারী হেলালও রয়েছেন।আর তিন মামলার অপর ১১ আসামির রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর হলে তাদেরও কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে শাহবাগ ও রমনা থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত জিআরও মাহমুদুর রহমান মানবজমিনকে বলেন, দুই থানার পৃথক তিন মামলার ৬৯ আসামির ৭ দিন করে রিমান্ড চেয়েছিলেন তদন্ত কর্মকর্তা। শাহবাগ থানার এক মামলায় ৯ আসামির সবার ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। অপর মামলার ২৬ আসামির ১৭ জনেরও একইভাবে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। অপরদিকে রমনা থানার মামলায় ৩৪ আসামির ৩১ জনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। অপর ১ জনের ১ দিনের রিমান্ডের আদেশ হয়েছে। বাকি দুই নারী আসামির রিমান্ড নামঞ্জুর হয়েছে। এছাড়া মামলাটির তদন্তভার ডিবির হাতে হস্তান্তর হওয়ায় ওই আসামিদের প্রথমে থানায় এবং সেখান থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হবে।

শাহবাগ থানার এক মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) দিদার হোসেন মানবজমিনকে বলেন, আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন রয়েছে। তাই ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। মামলার তদন্তভার ডিবিতে হস্তান্তরের আদেশের কপি হাতে পেলে হস্তান্তর করা হবে।

এদিকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে কয়েকটি জেলায় বিএনপি ও ২০ দলের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের তথ্য পাওয়া গেছে।
রাজশাহী: পুলিশের অভিযানে বিএনপির ৩৫ জন নেতাকর্মী আটকের খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার নগরীর ৫ থানা ও ডিবি পুলিশ বিভিন্নস্থানে অভিযান চালিয়ে বোয়ালিয়া মডেল থানা ৭ জন, রাজপাড়া থানা ১৪ জন, মতিহার থানা ৭ জন, শাহমখদুম থানা ৫ জন, বাঘা উপজেলায় ১ জন ও ডিবি পুলিশ একজনকে আটক করে। যার মধ্যে ১৮ জন ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, ৪ জনকে মাদকদ্রব্য ও অন্যান্য অপরাধে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার ইফতেখার আলম। এরআগে গত বুধবার রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর দড়িখরবোনা এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম অভিযান চালিয়ে ১৩ জনকে আটক করে। এছাড়া, বিএনপির সহ-সভাপতি আরমান মৃধাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু সাঈদ চাঁদ ও বাঘা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের বাড়িতে তল্লাশির নামে পুলিশ ভাঙচুর করেছে বলে নেতারা অভিযোগ করেছেন।

নোয়াখালী: ৮ই ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়ার মামলার রায়কে কেন্দ্র করে নাশকতার অভিযোগে নোয়াখালী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কাবিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বাহার (৪৪), উপজেলা যুবদল সভাপতি মির্জা মোস্তফা (৪২) ও কাবিলপুর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক সামু (৪০)কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বুধবার গভীর রাতে সেনবাগ থানার এসআই সাইফুল ইসলাম ও এসআই রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ মির্জা মোস্তফাকে পৌর শহরের কাদরা ও চেয়ারম্যান বাহারকে ইয়ারপুর এবং সামুকে চৌমুহনী থেকে গ্রেপ্তার করে। গতকাল দুপুরে তাদের ৩ জনকে নোয়াখালী বিচারিক আদালতে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া ৬১ জন নেতাকর্মীর বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালানোর তথ্য দিয়েছে জেলা বিএনপি।

নারায়ণগঞ্জ: জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা ও মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দ। বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা বিএনপির দুই নেতার বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এতে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে গ্রেপ্তার আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে অনেকেই নিরাপদে অবস্থান করে আগামী ৮ই জানুয়ারি যেকোনো মূল্যে ঢাকায় যাবে বলে জানিয়েছে নেতারা। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ জানান, বুধবার রাতে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আব্দুল হাই রাজুর বাড়িতে এবং বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম রবির বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তিনি বলেন, এই ধরনের অভিযান চালিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোবল কোনোভাবে দুর্বল করা যাবে না। অভিযানের কারণে নেতাকর্মীরা আতঙ্কিত। তবে ৮ই ফেব্রুয়ারি কেন্দ্র ঘোষিত যেকোনো কর্মসূচি পালন করতে বদ্ধপরিকর। নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল বলেন, পুলিশ যতই গ্রেপ্তার বা অভিযান চালাক আমরা ভয় পাই না। পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযানের কারণে নেতাকর্মীরা নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নিয়ে আগামী ৮ই ফেব্রুয়ারি যেকোনো উপায়ে ঢাকায় অবস্থান নেবে।
মানবজমিন

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin