khaleda_zia

শরিকদের কাছে খালেদা চাইলেন প্রার্থী তালিকা

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ২০ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর কাছে প্রার্থী তালিকা চেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সম্প্রতি জোটের অন্যতম প্রধান শরিক দল জামায়াতে ইসলামীর কাছে মৌখিকভাবে তালিকা চাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছেন বিএনপির এক দায়িত্বশীল নেতা।

ছোট অন্য দলগুলোও প্রার্থী তালিকা তৈরি করে বিএনপির কাছে পাঠাচ্ছে বলেও জানা গেছে। বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, জোটের শরিকদের জন্য অর্ধশত আসন ছেড়ে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।

এ ছাড়া সরকারবিরোধী অন্য দলগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা হলে তাদের জন্যও বেশ কিছু আসন ছেড়ে দেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছে বিএনপি।

এ প্রসঙ্গে গতকাল বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘বিএনপি জোটগতভাবেই নির্বাচনে যাবে। দলের দুঃসময়ে জোট ছিল, এখনো আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে জোট ভাঙার ষড়যন্ত্র চলছে। তবে জোটে আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখনই গণমাধ্যমে বলার সময় আসেনি। ’

বিএনপি ও জামায়াতের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি বিএনপির হাইকমান্ডের নির্দেশে জামায়াতের কাছে তাদের প্রার্থী তালিকা চাওয়া হয়েছে।

কিন্তু এখন পর্যন্ত জামায়াত কোনো তালিকা বিএনপিকে দেয়নি। তবে তারা তালিকা তৈরি করেছে। এর আগেও চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য লন্ডনে থাকা অবস্থায় ঢাকায় বিএনপি ও জামায়াতের মহাসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়। ওই বৈঠকেই বিএনপির পক্ষ থেকে জামায়াতের কাছে তাদের প্রার্থী তালিকা চাওয়া হয়।

জবাবে কোন কোন আসন জামায়াতকে ছাড়তে চায়- এমন একটি তালিকা বিএনপির কাছে চাওয়া হয়। সূত্র মতে, ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী পরিস্থিতির কারণে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতকে ৩৮ আসন দিতে বাধ্য হয়েছিল বিএনপি। জামায়াতের এক নেতা বলেন, জামায়াত বিএনপির কাছে অর্ধশত আসন চাইবে। ইতিমধ্যে এসব আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।

কিছু আসনে দ্বন্দ্ব থাকায় এখনো তা সম্পন্ন করা যায়নি। বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, জামায়াত চাইলেই তো আর পাবে না। একদিকে তাদের নিজস্ব কোনো প্রতীক নেই। তারপরও দলটির প্রথম সারির নেতারা যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হয়েছে। আরও বেশ কয়েকজন জামায়াত নেতা যুদ্ধাপরাধে ফাঁসির রায়সহ নানা মেয়াদে দণ্ড হয়েছে।

অনেকের বিচারকার্যও চলছে। এই অবস্থায় তাদের প্রভাবশালী নেতাদের সংখ্যা খুবই কম। এ ছাড়া জামায়াত সাংগঠনিকভাবেও আগের মতো শক্তিশালী নয়। বিএনপিও আগের মতো জামায়াতকে কাছের বন্ধু মনে করে না। জামায়াতের বর্তমান নেতাদের নিয়েও সরকারের সঙ্গে নতুন বন্ধুত্বসহ নানা নেতিবাচক গুঞ্জন রয়েছে।

বিএনপি সূত্র জানায়, ৮ম ও ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জোটগতভাবে জামায়াতের সফলতা আশব্যঞ্জক নয়। প্রথমবার ২৯টি আসনে নির্বাচন করে মাত্র ১৭টি আসনে জয়লাভ করে। এর পরে ৩৩টি আসনে নির্বাচন করে জয়লাভ করে মাত্র ২টি আসনে। তাই এবার বিএনপির পক্ষ থেকে দলটিকে ১৫ থেকে বিশটি আসনে জোটগত মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জামায়াতের শীর্ষ নেতারাও এক্ষেত্রে অনেকটা নমনীয়।

এদিকে এলডিপি, বিজেপি, জাগপা, কল্যাণ পার্টি, লেবার পার্টিসহ অন্য দলগুলোও নিজেদের মতো করে প্রার্থী তালিকা তৈরি করছে। তাতে জোটের শরিকদেরই চাওয়া অন্তত দেড়শ আসন। যদিও এসব দল এক নেতা সর্বস্ব। দলের ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন হলে জোটের শরিকদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।

৯ম ও ৮ম দুই নির্বাচনেই বিএনপি-জামায়াত জোটগতভাবে নির্বাচন করেছে। অতএব, এবারও যে দলের অবস্থান যে আসনে ভালো, সেখানে সেই দলের প্রার্থীকে জোটের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হবে।

onlinenews24

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin