লন্ডনে শেখ হাসিনাকে হত্যার ষড়যন্ত্র?

লন্ডনে ক্রিসমাসের দীর্ঘ ছুটি। ২৪ ডিসেম্বর রোববার থেকে ছুটি শুরু হয়েছে। সোমবার ক্রিসমাসে সব বন্ধ। বাস, ট্রাম, আন্ডারগ্রাউন্ড রেল, দোকানপাট কিছুই খোলা নেই। দ্বিগুণ ভাড়ায় কিছু ট্যাক্সি চলছে। কিন্তু ঝিরিঝিরি বৃষ্টি ব্যস্ত এই শহরকে আশ্চর্য শুনশান এক নগরীতে পরিণত করেছে।

ঠিক এরকম নিস্তব্ধ নগরীতেই সকাল বেলাতেই রিচমন্ডে এক বাড়িতে ব্যস্ততা। ওই বাড়ির সামনে কয়েকটি গাড়ি। এর মধ্যে দুটি গাড়ি পাকিস্তান দূতাবাসের। জাঁকিয়ে পড়া শীতে ওভারকোট আর ছাতা নিয়ে আসছেন অভ্যাগতরা। এদের স্বাগত জানালেন একজন। তারেক জিয়া। কালো ওভার কোট, আর মাথায় ইংলিশ ক্যাপ। এই মুহূর্তে বিশ্বের ভয়ংকর সন্ত্রাসীদের একজন তারেক জিয়া।

ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা তারেক জিয়ার রিচমন্ডের বাড়িতে ক্রিসমাস পার্টির আড়ালে বাংলাদেশ নিয়ে নতুন ষড়যন্ত্রের নীলনকশা তৈরি হয়েছে এই বৈঠকে। এমন তথ্যই জানা গেছে বৈঠকে উপস্থিতদের সূত্রে। বৈঠকে পাকিস্তান দূতাবাসের তিনজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

এরা হলেন ডেপুটি হাইকমিশনার জাহিদ হাফিজ চৌধুরী, পলিটিক্যাল কনস্যুলার মোহাম্মদ আইয়ুব এবং ডিফেন্স অ্যটাচি কর্নেল সরদার নাদিম ইকবাল খান। মুসলিম এইডের আমন্ত্রণে লন্ডনে আসা ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক বৈঠকে আসেন সবার আগে। বৈঠক শেষে তিনিই সবাইকে গাড়িতে উঠিয়ে দেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন লন্ডনে বসবাসরত দুজন পাকিস্তানি নাগরিক। বৈঠকে কিছুক্ষণ ছিলেন যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আলী আহসানের ছেলে।

সকাল ৭ টা ৩০ মিনিট থেকে ৯ টা পর্যন্ত এই বৈঠক নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। ক্রিসমাসের আলগা নিরাপত্তায় এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য হলো শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা। প্রাথমিক তদন্তে লন্ডন পুলিশ এমনটাই ধারণা করছে। লন্ডন পুলিশ সূত্র বলছে, তারা বলেছে এটা স্রেফ ক্রিসমাস পার্টি।

কিন্তু পাকিস্তান দূতাবাসের তিন কর্মকর্তা একসঙ্গে তারেক জিয়ার বাড়িতে যাওয়াটা মোটেও সাদামাটা ঘটনা ভাবতে রাজি নয় লন্ডনের গোয়েন্দারা। কিছুদিন ধরেই তারেক জিয়া স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের গোয়েন্দা নজরদারিতে আছে। তাঁর বিভিন্ন সন্দেহজনক ইমেইলও গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। এসব ই-মেইলে গণভবনের নকশা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নকশাও রয়েছে।

এই সব তথ্য এবং ক্রিসমাসের বৈঠকের যোগসূত্র খুঁজছে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা। একটি সূত্র জানাচ্ছে, গত কিছুদিন ধরেই তারেক এবং পাকিস্তান দূতাবাস শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা করছে বলে ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের কাছে খবর আছে।

কিন্তু পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য তারা এখনো উদ্ধার করতে পারেনি। ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের ধারণা, তারেক জিয়া এখন শেখ হাসিনাকে ঘিরেই সন্ত্রাসী পরিকল্পনা তৈরি করছে। আর এতে সহায়তা করছে পাকিস্তান দূতাবাস।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin