রায়ের পর সন্ত্রাসী কার্যক্রম করলে প্রতিরোধ করবে জনগণ: কাদের

বিএনপি চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায়ের পর সন্ত্রাসী কার্যক্রম করলে প্রতিরোধ করবে জনগণ এই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

এসময় তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলার রায় নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বিএনপি। তদের নেতাকর্মীদের বক্তব্যে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, আদালতের বিষয়ে এখনও পর্যন্ত কোন হস্তক্ষেপ করে নি সরকার।আর কখনো করবেও না। যদি এই রায় নিয়ে দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়, দেশে সন্ত্রাসের কার্যকলাপ করা হয় তাহলে জনগণকে সাথে নিয়ে আমরা তা প্রতিরোধ গড়ে তুলব।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম জনগণ মেনে নিবে না। রায়ের পর সন্ত্রাসী কার্যক্রম করলে প্রতিরোধ জনগণই করবে। আইন শৃঙ্খলাবাহিনী তাদের স্বাভাবিক দায়িত্ব পালন করবে।

এর আগে সেতুমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছিলেন, ওবায়দুল কাদের আগে রাজনীতি করতেন, কিন্তু সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পরে তিনি ইনিয়ে-বিনিয়ে মিথ্যা কথা বলতে বলতে চারণ কবি হয়ে গেছেন। জনগণ তার সব কথা এখন তামাশা মনে করে। তিনি একজন হাইব্রিড উচ্চ ফলনশীল মিথ্যাবাদী।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরাম আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের উপর হামলার প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে কারা হামলা করেছে জনগণ দেখেছে। গণমাধ্যমের কর্মীরা কি বিএনপি করে তাদের গাড়িতে হামলা কেন? ওবায়দুল কাদের অনেক কথা বলেন তিনি মিথ্যা ছাড়া সত্য কথা বলা ভুলে গেছেন এখন সত্যাটা আর খেঁজে পাননা।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের তীব্র সমালোচনা করে রিজভী আরো বলেন, ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করার জন্য তিনি কাদের দিনে-দুপুরে মিথ্যা কথা বলছেন। লজ্জা করে না মিথ্যা কথা বলতে? বিএনপির চেয়ারপারসনের গাড়িতে হামলা করেছে ছাত্রলীগ, যুবলীগ কিন্তু বিএনপি নেতা ডা. শাহদাতকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। চট্টগ্রামের একজন ভদ্র রাজনীতিবিদ ডা. শাহাদাত। মিথ্যা কথা বলে তাকে ফাঁসিয়ে ওবায়দুল কাদের ফাদার অব হিউমিনিটি হওয়ার চেষ্টা করছেন।’

তিনি বলেন, ‘মিথ্যা কথা বলার একটি বড় প্রতিষ্ঠান হচ্ছে আওয়ামী লীগ। যারা মিথ্যা কথা বলতে পছন্দ করেন তারাই এই প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হন। আর সত্য গণতন্ত্রকামীদের দল হচ্ছে বিএনপি।’

আওয়ামী লীগ নেতাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘প্রস্তুত হোন সকল অপকর্ম আর গুণ্ডামির জবাব আপনাদেরকে দিতেই হবে। তখন আপনাদের র্যা ব-পুলিশ থাকবে না। সকল অপকর্মের জবাব আপনাদের কড়ায় গোন্ডায় দিতে হবে।’

বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মো: সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব মজিবুর রহমান সরোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন জীবন, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরীন সুলতানা, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমত উল্লাহ, ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এম এ হান্নান, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা শাহজাহান মিয়া সম্রাট, জিনাপের সভাপতি মিয়া মো. আনোয়ার, শাহবাগ থানা কৃষক দলের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।

খালেদা জিয়ার সাজা হলে দেশে আগুন জ্বলবে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাজা হলে দেশে আগুন জ্বলবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনায় রিজভী একথা বলেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কোনো অশুভ ধরা পড়লে, সারা দেশে আগুন জ্বলবে।

রিজভী আরো বলেন, ৭৫ সালে যেভাবে গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে বাকশাল কায়েম করা হয়েছিল, ঠিক সেইভাবে একই কায়দায় তার কন্যা দেশ পরিচালনা করছে। বর্তমানে সারা দেশে খুন গুম মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি চলছে। প্রতিদিনিই দেশে চলছে বাকশালী কায়দায়, পুলিশ বাণিজ্য করছে।

খালেদা জিয়ার এই মামলা নিয়ে বিএনপি ভীষণ উদ্বিগ্ন। কারণ দুই বছরের সাজা হলে বিএনপি নেত্রী নির্বাচনের জন্য অযোগ্য হয়ে যাবেন।

এদিকে সকালে দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, এই মামলার রায় সরকার আগেই লিখে রেখেছে। আর বিচারের নামে চলছে প্রসহন।

ফখরুল বলেন, এই অবৈধ সরকার পূর্বেই রায় লিখে রেখেছেন। তবে এই বিচারের প্রহসনের কোনও প্রয়োজন ছিল না। দেশে যে আইনের শাসন নেই-ন্যায়বিচার সুদুর পরাহত সেটাই প্রমাণিত হলো। বিচার হবে প্রধানমন্ত্রী যা চাইবেন তাই।

বুধবার জাতীয় সংসদে নাগরিক সমাজের সদস্যদের আক্রমণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যেরও সমালোচনা করেন রিজভী। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী যেভাবে সুশীল সমাজকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করছে, বেগম জিয়া তা কখনও এভাবে মানুষের সাথে খারাপ ব্যবহার করে নাই।

বিএনপি নেতা রিজভী আহমেদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের কাছে শিক্ষার কোনো দাম নাই। শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ফেলছেন। বর্তমানে গাধারা দেশ শাসন করছে, এখন পুরো দেশটাকে গাধা বানানোর চেষ্টা করছে আওয়ামী লীগ সরকার।

আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান শামীমের সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin