bnp-flag

রায়ের দিন কড়া ‘পাহারা’ বসাবে বিএনপি

দিন ঘণিয়ে আসার সঙ্গে বাড়ছে উত্তেজনা। জনমনেও আতঙ্ক, উৎকণ্ঠা কী হতে চলেছে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি? ওইদিন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় পুরনো ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত ৫ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান রায় ঘোষণা করবেন।

এই রায় ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের অব্যাহত হুমকি উপেক্ষা করে ওইদিন আদালত এলাকায় সতর্ক অবস্থানের পরিকল্পনা নিয়েছে বিএনপি। দলটির ভাষ্যে, এই রায়কে কেন্দ্র করে সরকার একটি ইস্যু তৈরি করবে। সেই অজুহাতে বিএনপিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাইরে রাখার চেষ্টা করবে।

বিএনপির নেতারা বলছেন, এবার এসব হতে দেয়া হবে না। বিএনপির নেতাকর্মীরা ওইদিন আদালত এলাকায় সতর্ক অবস্থান নিয়ে মূলত যেকোনো ধরনের ‘সরকারি অপতৎপরতার পরিকল্পনা’ ভণ্ডুল করে দেবে। বলা চলে নিজেরাই কড়া পাহারা বসাবে। একই সঙ্গে চেষ্টা থাকবে শান্তিপূর্ণ অবস্থান জানান দেয়ার।রাজধানীর মত সারাদেশেই একই ধরনের ‘সতর্কতা বর্ম’ তৈরির নির্দেশনা নেতাকর্মীদের দিয়েছেন স্বয়ং দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

অবশ্য গত ৩০ জানুয়ারির জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় হাজিরা শেষে খালেদা জিয়ার ফেরার পথে পুলিশভ্যানে হামলা ও আসামি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সে ঘটনার পর সারাদেশে ব্যাপক ধড়পাকড় চলছে। সরকারি দলও ‘ভিন্নবার্তা’ ভেবে রায়ের দিন মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে এবং কোনো ধরনের নাশকতা সৃষ্টির পায়তারা হলে তা প্রতিহত করার কথা বলছে।

এমতাবস্থায় রোববার রাতে গুলশান কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বৈঠক থেকেই নির্ধারণ করা হবে, রায়ের দিন নেতাকর্মীদের ভূমিকা কী হবে?বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রভাবশালী এক সদস্য পরিবর্তন ডটকমকে জানান, আমরা কী করব, এখনই বলা যাবে না। রাতে বসছি, আলোচনা করে সেখানে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তিনি বলেন, গতকাল শনিবার নির্বাহী কমিটির সভায় তৃণমূল নেতারা মতামত দিয়েছেন। এসব পর্যালোচনা করে যা দেশ ও দলের জন্য মঙ্গল হয়, তাই করা হবে।বিএনপির নির্বাহী কমিটির সভায় বিগত দিনে আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকার কর্মসূচি বাস্তবায়ন নিয়ে নেতাদের ভূমিকার সমালোচনা করেন তৃণমূলের নেতারা। তারা চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে কড়া ভাষায় জানান, আগামী দিনে সবাইকে রাজপথে সক্রিয় থাকতে হবে। শুধু তৃণমূলের ওপর নির্ভর করলে চলবে না। রাজধানীর মাঠটাও দখলে রাখতে হবে।

এসব বিষয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শেখ রবিউল আলম রবি পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘এটা স্পষ্ট, আমরা সাধারণ নেতাকর্মীরা ৮ ফেব্রুয়ারি আদালতমুখী থাকব। নেত্রীকে রক্ষায় সরকারি দল ও প্রশাসন যন্ত্রের যেকোনো অপতৎপরতা রুখে দিতে সতর্ক থাকব।’তিনি বলেন, ‘হাইকমান্ড থেকে আমাদের শান্তিপূর্ণ ও গণতান্তিক উপায়ে প্রতিবাদের নির্দেশনা দিয়েছে।

তবে ঠিক কতটা শান্ত আমরা থাকতে পারব, তা নির্ভর করবে সরকারের আচরণের ওপর।’বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির এই সদস্য আরো বলেন, ‘আমাদের নেত্রী, আমাদের মা। তার প্রতি যেমন আমাদের আবেগ-ভালোবাসা রয়েছে। জনগণেরও অগাধ ভালোবাসা রয়েছে। সবমিলে নেতিবাচক রায় এলে পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে আমাদের অবস্থান হবে শতভাগ শান্তিপূর্ণ।’

এ বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নেতিবাচক রায় হলে এটা শুধু বিএনপির ওপর আঘাত নয়, দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত। একটা মিথ্যা মামলা কীভাবে পরিণতি পেতে যাচ্ছে, তা জনগণ বিস্ময়ের সঙ্গে দেখছে।’মহানগরীর প্রত্যেকটি নেতাকর্মী শান্তিপূর্ণভাবে তাদের অস্তিত্ব জানান দেয়ার চেষ্টা করবে বলেও জানান সাবেক এই ছাত্রনেতা।

খালেদা জিয়া রায়ের দিন নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানান আতাউর রহমান ঢালী।বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান জানান, ‘নির্বাহী কমিটির সভায় ম্যাডাম বলেছেন- রায় কী হবে, সেটা আদালত জানেন। আপনারা (নেতাকর্মীরা) সকলে শান্ত থাকবেন। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন না হয় খেয়াল রাখবেন।’

poriborton

Check Also

জাতীয় সরকার নিয়ে হঠাৎ আলোচনা কেন?

প্রথমে জাতীয় সরকারের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি এবং জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

Share
Pin